‘মার্কিন সেনাবাহিনীকে দেখে আমি বিস্মিত’- ওবামা
১ সেপ্টেম্বর ২০১০ওবামা যথাযথ প্রতিশ্রুতি পালন করলেন
একেবারে দিন তারিখ মেনে৷ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলেছিলেন ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবেন৷ ক্ষমতা হাতে নিয়ে যে দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিলেন, সেই ৩১ অগাস্ট তারিখেই ইরাকের নিরাপত্তার দায়িত্ব সে দেশের সরকারের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দিল যুক্তরাষ্ট্র৷ মার্কিন সেনারা ঘরে ফিরে আসছে৷ প্রায় ৫০ হাজার সেনা থেকে গেল ইরাকি নিরাপত্তাবাহিনীকে প্রশিক্ষণের কাজ চালিয়ে যেতে৷ তারাও দেশে ফিরবে ২০১১-র শেষে৷ সুতরাং প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতি পুরোদমে রক্ষা করা হল৷
বেতার ভাষণে সেনাবাহিনীর প্রশংসা
মোট ১৮ মিনিটের বেতার ভাষণে ওবামার মুখে সেনাবাহিনীর প্রশংসার শেষ ছিল না৷ ইরাক যুদ্ধের সমর্থক কোনদিনই ছিলেন না ওবামা৷ যুদ্ধটাকে ‘মারাত্মক রকমের ভুল' বলে চিহ্নিত করেছেন৷ কোথাও একবারের জন্যও ‘বিজয়' শব্দটাকে ব্যবহার করতে তাঁকে শোনা যায়নি৷ বরং বারবার করে মনে করিয়েছেন এই যুদ্ধ এবং তাকে ঘিরে যে বিপুল সেনাক্ষয়, সেনাদের আত্মত্যাগ, তাদের পরিবারবর্গের যন্ত্রণা৷ আর বলেছেন এইসব কিছু দেখে তাঁর নিজের বিপুল বিস্ময়ের কথা৷ ইরাকের প্রসঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা গেছে, এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি শুধুমাত্র ইরাকের স্বার্থেই যে করা হয়েছে তা কিন্তু নয়৷ অ্যামেরিকাও চাইছিল যুদ্ধ শেষ হোক৷ সেই প্রত্যাশাকে মর্যাদা দিয়েছে তাঁর এই সিদ্ধান্ত৷ বলেছেন ওবামা৷ তবে ইরাককে আবার একটি মর্যাদাসম্পন্ন তরুণ রাষ্ট্র হিসেবে সেদেশের মানুষের হাতে তুলে দিতে গিয়ে অ্যামেরিকাকে যে বিপুল মূল্য দিতে হয়েছে সেকথাও স্বীকার করেছেন ওবামা৷ যুদ্ধের যৌক্তিকতা সে প্রসঙ্গেই প্রাসঙ্গিক৷
সেনা প্রত্যাহার আর মার্কিন অর্থনীতি
যুদ্ধ শেষের ঘোষণায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে নজর দিতে ভোলেন নি মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ মনে করিয়ে দিয়েছেন, দেশে মোট বেকারের সংখ্যা৷ অর্থনৈতিক মন্দা এবং তার থেকে পরিত্রাণের প্রসঙ্গ তুলেছেন৷ বলেছেন, আজ এই মুহূর্তে যেদিকে অ্যামেরিকাকে মনোযোগ দিতে হবে তা হল অর্থনীতি৷ বেকারদের জন্য প্রয়োজন চাকরি, শিশুদের জন্য শিক্ষা, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উত্থানের জন্য ব্যবস্থা আর বিদেশ থেকে কেনা জ্বালানীর ওপরে বিপুল নির্ভরতা কমানোর প্রয়োজনীয়তা৷ অর্থাৎ অ্যামেরিকার সামনে যা কিছু সমস্যা সেদিকে সাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বারাক ওবামা৷ যুদ্ধের দিক থেকে চোখ একেবারে ফিরিয়ে নেওয়ার এটাও একটা প্রয়োজনীয় ইঙ্গিত বৈকি!
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা