1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মারণরোগ এইডস বেশি ছড়াচ্ছে ইউরোপে

২৪ আগস্ট ২০১০

সম্প্রতি জাতিসংঘ একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আফ্রিকার তরুণ-তরুণীরা এইডস প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে৷ সম্পূর্ণ অন্যরকম ঘটনা ঘটছে ইউরোপে৷

https://p.dw.com/p/Oubi
ছবি: UNI

কার এইডস আছে আর কার নেই, কার সঙ্গে কীভাবে এবং কত খোলাখুলিভাবে মেলামেশা করা যেতে পারে – সে দিক থেকে ওরা অত্যন্ত সচেতনতার পরিচয় দিয়েছে৷ এবং ইউরোপে বিপরীতধর্মী ঘটনা ঘটেছে৷ এইডস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে৷

প্রায় ১,২০০ মানুষের ওপর এইডস নিয়ে একটি জরিপ চালানো হয়৷ সে জরিপে দেখা যায় যে গত ৩০ বছরে যেসব রোগ মহামারির আকার ধারণ করেছে, তাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে এইডস৷ এইডস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক এবং আক্রান্তরা৷ কিন্তু কোন সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না৷

ইউএনএইডস-এর মহাপরিচালক মিশেল সিডিবে জানান, যাদের উপর জরিপ চালানো হয়েছে তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই বিশ্বাস করে, ২০১৫ সালের মধ্যে এইডস পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে৷ সিডিবে জানান, ‘‘জরিপের মাধ্যমে এও জানা গেছে, প্রয়োজনীয় অর্থের সংকুলান না থাকায় এইডস রোগটিকে ঠিকমতো প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে না৷ আরো জানানো হয়, যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে তার ৭০ শতাংশই এইডস প্রতিরোধে ব্যবহার করা উচিত৷ এর মধ্যে দিয়েই বোঝা যায় যে, এইডস প্রতিরোধে মানুষের সচেতনতা বাড়ছে৷''

সচেতন হচ্ছে আফ্রিকা

ইউএনএইডস-এর আরেকটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিশ্বের বেশ কিছু অঞ্চলে এইডস রোগীর সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে৷ বিশেষ করে আফ্রিকার সাহারা এলাকায়৷ সিডিবে জানান, এইডস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, এরকম ১৬টি দেশে নতুন প্রজন্মের মধ্যে এইডসে আক্রান্তের সংখ্যা কম – যা অনুমান করা হয়েছিল তার চেয়ে ২৫ শতাংশ কম৷ এর মধ্যে বতসোয়ানা, আইভরি কোস্ট, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, মালাউয়ি এবং জিম্বাবোয়ে রয়েছে৷ সিডিবে আরো বলেন,‘‘এই অসাধারণ ফলাফলের পেছনে রয়েছে অত্যন্ত সচেতন একটি প্রজন্ম৷ তারা জানছে, শিখছে, দেখছে – কীভাবে এইডস রোগীর সঙ্গে মেলামেশা করা উচিত৷ কোন সম্পর্কের শুরুতেই এরা খুব চট করে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে না, বরং সময় নিচ্ছে৷ আগের মত অসংখ্য বন্ধু-বান্ধবীও আর নেই৷ এদের মধ্যে কনডোম ব্যবহারের প্রবণতাও আগের চেয়ে অনেকটা বেড়েছে৷''

Flash-Galerie AIDS Projekte
ছবি: AP

আফ্রিকাতে আশার আলো দেখা গেলেও পূর্ব ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ায় অবস্থা খুবই চ্যালেঞ্জিং৷ ইউএনএইডস-এর সহ পরিচালক পল দো লে জানান, এইডসে আক্রান্ত প্রায় ৫৭ শতাংশই বিভিন্ন ধরণের মাদকের সেবন করতে গিয়ে এইডস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল একই সুঁইয়ের ব্যবহার৷ লে বললেন,‘‘আমাদের সামনে যে দেশগুলো রয়েছে, সেখানে আমরা দেখেছি ১৫ থেকে শুরু করে ২৪ – এমনকি ৬২ বছরের বৃদ্ধও শেষ বয়সে এসে এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন৷ এরা সবাই পূর্ব ইউরোপ, রাশিয়া, ইউক্রেন, জর্জিয়া এবং বেলারুশের নাগরিক৷ এরা এইডসে আক্রান্ত হচ্ছে৷ অথচ অন্য জায়গায় খুবই সুক্ষ্মভাবে এইডসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমে আসছে৷''

জার্মান পপ তারকা এইডসে আক্রান্ত

এবং এর ঠিক বিপরীতধর্মী ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে৷ জনপ্রিয় জার্মান গানের ব্যান্ড ‘নো এঞ্জেলস'এর গায়িকা নাদিয়া বেনেইসা নিজে এইডসের রোগী, কিন্তু সে কথা তিনি এতদিন গোপন রেখেছিলেন৷ ১৯৯৯ সালে তিনি প্রথম জানতে পারেন, যে তিনি এইচআইভি পজিটিভ৷ তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৬ এবং তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা৷

তিনি এ কথা গোপন রাখেন এবং একজন পুরুষ সঙ্গীকে আক্রান্ত করেন৷ ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় তিনজন বন্ধুর সঙ্গে তিনি বেশ ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করেন৷ তাদের কেউই জানতো না, যে নাদিয়া এইডসে আক্রান্ত৷ নাদিয়া ইচ্ছে করেই বলেননি৷

ফ্রাঙ্কফুর্টের কাছে ডার্মস্টাডের এক আদালতে নাদিয়া তাঁর দোষ স্বীকার করেন৷ তাঁর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে শারীরিক ক্ষতিসাধনের মামলা দায়ের করা হয়৷ গত বছর ফ্রাঙ্কফুর্টের একটি নাইট ক্লাব থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তিনি জানান, তিনি ভয়ে একথা এতদিন কাউকে বলতে পারেননি৷ ২৮ বছরের নাদিয়া যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তাঁর ৬ মাস থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়