মানবাধিকার রক্ষায় ইইউ’র দাবি প্রত্যাখ্যান
২৪ জুন ২০১০গত বছর গৃহযুদ্ধের অবসানে শ্রীলংকার কিছু অংশে ব্যাপক সেনা অভিযান চালিয়েছিল সেদেশের নিরাপত্তা বাহিনী৷ চূড়ান্তভাবে দমন করেছিল তামিল টাইগারদের৷ কিন্তু সেসময় অভিযোগ ওঠে, অভিযান চলাকালে হাজার হাজার বেসামরিক তামিলকে হত্যা করেছে সেনারা৷ বিষয়টির তদন্তে সম্প্রতি তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠন করে জাতিসংঘ৷ এই প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর গবেষক ইউলেন্ডা ফস্টার বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি যে, এই প্যানেল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিষয়টির স্বাধীন তদন্তে প্রথম পদক্ষেপ৷''
কিন্তু বাধ সেধেছে সেদেশের সরকার৷ ইতিমধ্যেই শ্রীলংকা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক তদন্ত দলের সদস্যদের সেদেশে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হবে না৷ তারা পাবে না কোন ভিসা৷ ইউলেন্ডা ফস্টার এই প্রসঙ্গে জানান, ‘‘শ্রীলংকা সরকার ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা এই প্যানেলে সন্তুষ্ট নয়৷ কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, শ্রীলংকার অভ্যন্তরীণ কাঠামো এমনভাবে তৈরি যা ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দিতে সক্ষম নয়৷ তাই, যুদ্ধকালীন সময়ে সেখানে কি হয়েছিল তা জানতে আন্তর্জাতিক তদন্ত অবশ্যই প্রয়োজন৷''
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নও শ্রীলংকা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বিগ্ন৷ তাই, একটু ভিন্নভাবে বিষয়টির সুরাহায় বাণিজ্যিক দিককে সামনে এনেছে ইইউ৷ শ্রীলংকা সরকারকে ইইউ জানায়, ইউরোপে বিশেষ সুবিধা নিয়ে বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে হলে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে হবে৷ সেইসঙ্গে এই উন্নয়নের অঙ্গীকার দিতে হবে লিখিত আকারে৷ এজন্য ইইউ-র বেঁধে দেয়া সময়সীমা হচ্ছে আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত৷
অবশ্য তার আগেই শ্রীলংকা সরকারের মুখপাত্র কেহেলিয়া রামবুকভেলা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দাবি অগ্রহণযোগ্য৷
কেহেলিয়া-র মতে, ইইউ'র দাবি মানলে তা শ্রীলংকার অভ্যন্তরীন নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটাবে৷ কারণ, ইইউ সন্ত্রাসবাদ আইনের কিছু অংশের পরিবর্তন চায়, যা সম্ভব নয়৷
উল্লেখ্য, ইউরোপীয় অঞ্চলে বাণিজ্যের বিশেষ সুবিধা থাকায় শ্রীলংকা বছরে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাড়তি আয় করে৷ কিন্তু ইইউ'র দাবি না মানলে আগামী ১৫ আগস্টের পর থেকে সেদেশ এই বিশেষ সুবিধা আর পাবেনা৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক