1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাদুরোর সময় শেষ হয়ে আসছে

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

আশার আলো, নাকি কেবলই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতের পুতুল? হুয়ান গুয়াইদো আসলে কি? ডয়চে ভেলের সাক্ষাৎকারে ভেনেজুয়েলার স্বঘোষিত এই নেতার দাবি, নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শিগগিরই তিনি জয়ী হবেন৷

https://p.dw.com/p/3DHaq
Venezuela Protest & Demonstration gegen Nicolas Maduro in Caracas | Juan Guaido
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Hernandez

 ভেনেজুয়েলার স্বঘোষিত অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট গুয়াইদো জানিয়েছেন, তিনি ‘দখলদারিত্বের অবসান, মধ্যবর্তী সরকার গঠন এবং সুষ্ঠু ও স্বাধীন নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চান৷'

ডয়চে ভেলের অস্কার শেঙ্কলারকে গুয়াইদো বলেন, এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করাই তাঁর লক্ষ্য৷ ভেনেজুয়েলার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে দেখতে পান কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে কে কে প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করেন সেটা দেখা যাবে৷''

নিরপেক্ষ নির্বাচন অবশ্য আপাতদৃষ্টিতে বেশ দূরের বিষয়ই মনে হচ্ছে৷ ৩৫ বছরের গুয়াইদো এবং নিকোলাস মাদুরোর মধ্যে চলা ক্ষমতার লড়াই এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে৷

অনেকেই আশংকা করছেন, বিরোধীদের এখনকার চাঙ্গা ভাব বেশিদিন থাকবে না এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও একসময় ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না দেখে অপেক্ষাকৃত অন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে৷ গুয়াইদো অবশ্য লড়াইয়ে তাঁর জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী৷

তিনি বলছেন, ‘‘নিকোলাস মাদুরোর সময় শেষ হয়ে আসছে৷ এই সরকারের কোনো ভবিষ্যৎ নেই, কোনো পরিকল্পনা নেই, জনগণের সমর্থনও নেই৷ এই আন্দোলন ক্রমশই জোরালো হচ্ছে এবং অবশ্যম্ভাবী এই ভবিষ্যৎ থেকে আমরাপিছু হটবো না৷''

অবরোধ সত্ত্বেও আসছে সহায়তা

 মাদুরো সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিলেওকিছু খাদ্য সহায়তা এসে পৌঁছেছে ভেনেজুয়েলায়৷ কোন পথে কীভাবে এসব ত্রাণ আসছে, তা জানাননি গুয়াইদো৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘সাহায্য পৌঁছে দিয়ে কিছু মানুষের জীবন রক্ষা করতে পেরেছি আমরা৷ অপুষ্টিতে ভোগা গর্ভবতী মায়েদের সাড়ে চার হাজার ফুড সাপ্লিমেন্ট ও কিছু ওষুধ দিয়েছি৷''

ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনীকে সতর্ক করলেন গুয়াইদো

মাদুরো এসব সহায়তাকে ‘রাজনৈতিক নাটক' এবং মার্কিন আক্রমণের ক্ষেত্র প্রস্তুত করার কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করলেও, গুয়াইদো বলছেন, অবরোধের মধ্যেও ত্রাণ পৌঁছে দেয়া মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘ছোট, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ' বিজয়৷

রাজধানী কারাকাসে এক সভায় গুয়াইদো ঘোষণা দেন, ২৩ ফেব্রুয়ারি বড় আকেরের ত্রাণ এসে পৌঁছাবে৷ জনতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘‘ত্রাণ পৌঁছানের বিষয়টি নিশ্চিত, কারণ ততোদিনে দখলদারের (মাদুরো) সামনে ভেনেজুয়েলা ছেড়ে পালানো ছাড়া উপায় থাকবে না৷''

তিনি বলেন, ‘‘ত্রাণ না পৌঁছালে অন্তত তিন লাখ ভেনেজুয়েলান মারা যাবে৷ ২০ লাখ মানুষ এখন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে৷''

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে৷ তিন সপ্তাহ আগে তিনি ‘শান্তিপূর্ণ' ক্ষমতা হস্তান্তর না হলে মাদুরোকে ‘পরিণাম' ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেন৷ মার্কিন সরকার সব ধরনের বিকল্পই চ্ন্তা করছে বলেও জানান ট্রাম্প৷

লাটিন অ্যামেরিকার রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাক গলানোর ইতিহাস দীর্ঘদিনের৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা কোনো ভালো ফল বয়ে আনেনি৷

এদিকে মাদুরো আবারো অভিযোগ করেছেন, গুয়াইদো ভেনেজুয়েলায় একটি ‘পুতুল সরকার' প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন৷

এর জবাবে গুয়াইদো বলেন, ‘‘মাদুরোর কাছে বলার মতো খুব বেশি যুক্তি নেই৷ আমি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি, সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে নিজের সব সিদ্ধান্ত নিজেই নেবে ভেনেজুয়েলা৷ দখলদারিত্বের অবসানে করণীয়ও ঠিক করবে দেশের জনগণ৷

সেনাবাহিনীকে বার্তা

 গুয়াইদে বলছেন, এখনও তাঁর আশা, বিদেশি সহায়তা ছাড়াই ক্ষমতার পালাবদল ঘটবে৷ এবং এজন্য দেশের সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি৷ গুয়াইদোর দাবি, ‘‘সৈনিকদের ৮০-৯০ শতাংশও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সাথে একমত৷'' সৈনিকরাও  ‘পর্যাপ্ত বেতন পায় না, তাঁদের পরিবারও দেশ ছেড়ে চলে যেতে চায়' বলে মন্তব্য গুয়াইদোর৷

অলিভার পিপার/এডিকে