1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মহিলাদের অভিবাসনের আরেকটি পন্থা: বিবাহ

২৬ জুলাই ২০১০

জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানের পুরুষরা কনের খোঁজে ক্রমেই আরো বেশী করে চীনা এবং ভিয়েতনামী মহিলাদের দিকে ঝুঁকছেন৷ তার কারণ একাধারে নারীমুক্তি এবং পিতৃতান্ত্রিক প্রথা৷

https://p.dw.com/p/OUTj
Taiwan, women
তাইওয়ানের তরুণী মহিলারা মন্দিরে যান বটে, কিন্তু বিয়েতে নারাজছবি: DW/Bardenhagen

ক্যানাডার পশ্চিম অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডানিয়েল বেলঁজে ব্যাপারটা নিয়ে পড়াশুনো করেছেন৷ তারপর তাঁর গবেষণার ফল ছেপেছেন ফ্রান্সের জনসংখ্যাতত্ত্ব গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পত্রিকায়৷

ডানিয়েল স্বয়ং নারী৷ এবং তিনি যে তথ্যগুলি খুঁজে পেয়েছেন, সেগুলি ঠিক চমকে দেবার মতো না হলেও, ভাবিয়ে তোলার মতো৷ প্রবণতাটি গত দশ কি বিশ বছরের৷ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানের পুরুষরা ক্রমেই আরো বেশী সংখ্যায় বিদেশী বিবাহ করছেন, কেননা স্বদেশে কনে পাওয়া ভার৷ ২০০৯ সালে তাইওয়ানে স্ত্রীদের ১৫ শতাংশ ছিল বিদেশী বংশোদ্ভূত৷ দক্ষিণ কোরিয়ায় ছিল আট শতাংশ৷ জাপানে এই প্রবণতা অনেক আগে, অর্থাৎ আশির দশকে শুরু হলেও, বিদেশী পত্নীদের অনুপাত মোটামুটি পাঁচ কি ছয় শতাংশে থেকে গেছে৷

traditional wedding, Taiwan
তাইওয়ানের প্রথাগত বিবাহছবি: AP

কিন্তু তিনটি দেশেই বিদেশী-বহিরাগতদের মধ্যে সাময়িকভাবে যারা কাজ করতে আসে, তাদের পরেই বৃহত্তম গোষ্ঠী হলেন এই বিদেশী কনেরা, জানাচ্ছেন বেলঁজে৷ এবং কেন এই সব দেশের পুরুষরা বিদেশে কনের খোঁজে যান, তার মুখ্য কারণ হল, স্বদেশে কনে জোটে না৷ এবং কনে না জোটার কারণও দিয়েছেন বেলঁজে৷ তিনটি দেশেই মহিলাদের শিক্ষার মান ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছে, বেড়েছে চাকুরে মহিলাদের সংখ্যা৷ এবং এই সব শিক্ষিত, চাকুরে মহিলাদের অনেকেই গৃহিণীর প্রথাগত ভূমিকা পালন করতে রাজি নন৷ তাঁরা চাকরি করতে এবং একা থাকতেই ভালোবাসেন৷

ওদিকে বংশ এবং পৈতৃক নামটা যা'তে লোপ না পায়, পুরুষদের আবার সেটা দেখার দায়িত্ব আছে এই বস্তুত পিতৃতান্ত্রিক সমাজগুলিতে৷ একটি পুরুষ সন্তানের জন্ম দেওয়া, বৃদ্ধ বাবা-মা'র দেখাশোনা করা, এ'সবের জন্যও একটি সহধর্মিণীর প্রয়োজন৷ কাজেই পুরুষদের পক্ষে অবিবাহিত থাকা সম্ভব নয়৷ কাজেই তাদের নজর যায় চীন কিংবা ভিয়েতনামের দিকে৷

মজার কথা, গোড়ায় এ'ব্যাপারটা গাঁয়ের দিকের গরীব লোকজনদের মধ্যেই ঘটতো৷ এখন তা ছড়িয়েছে শহুরে মধ্যবিত্ত অবধি৷ এ'ধরণের বিয়ের যোগাযোগ ঘটানোর সংস্থা গজিয়ে উঠেছে৷ তারা একটি সফল যোগাযোগের জন্য নেয় ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ ইউরো৷ ব্যবসাই বটে, কাজেই মানুষ পাচারের ভয় থাকে৷ কিন্তু বেলঁজে দেখেছেন, অধিকাংশ অভিবাসী মহিলারা নিজের ইচ্ছাতেই বিদেশী পুরুষ বিবাহ করেন এবং বিদেশে যান৷ তাঁরা সেটা বাপ-মা'য়ের চাপে করেন না৷

সব মিলিয়ে তার ফল এই হয়েছে যে, মহিলাদের অভিবাসনের পরিসংখ্যানে ধরা পড়ার মতো একটি নতুন উপাদান সৃষ্টি হয়েছে৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম