1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আতঙ্কে এখন পুরো বাংলাদেশ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৫ মে ২০১৩

ঘূর্ণিঝড় মহাসেন-এর আতঙ্কে এখন পুরো বাংলাদেশ৷ তবে আবহাওয়াবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতঙ্কিত না হয়ে ঘূর্ণিঘড়কে মেকাবেলা করতে হবে৷ কারণ, ভালো প্রস্তুতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব৷

https://p.dw.com/p/18Y4D
epa03700881 A Muslim girl stands beside tents at Ohn Taw Chay refugee camp near Sittwe town in Rakhine State, Western Myanmar, 15 May 2013. Regional authorities of Rakhine State moved refugees from Internally Displaced Persons (IDP) camps as a precaution against Cyclone Mahasen, a cyclone threatening the coastal areas of Bangladesh and Myanmar. EPA/STR +++(c) dpa - Bildfunk+++
ছবি: picture-alliance/dpa

ঘূর্ণিঝড় মহাসেন-এর আতঙ্ক থাকলেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা কম৷ কক্সবাজার এলাকার মানুষ এর আগে একাধিক ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হওয়ায়, তাঁদের মধ্যে আতঙ্কও বেশি৷ কিন্তু তাঁরা ঘরবাড়ি ছাড়তে চাইছেন না৷ কক্সবাজারের সাংবাদিক আবু তাহের ডয়চে ভেলেকে জানান, বুধবার সকাল থেকে মাইকে সতর্ক সংকেত প্রচার করে উপকূলবর্তী মানুষকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানানো হলেও, তাতে তেমন সাড়া মিলছে না৷ তিনি নিজে বিকেল নাগাদ বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন৷ কিন্তু সব আশ্রয়কেন্দ্রই ফাঁকা৷ আবু তাহের জানান, উপকূলবাসীরা ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার ঠিক আগমুহূর্তে দৌড়-ঝাপ শুরু করেন, তাঁদের মানসিকতাই সেরকম৷ এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কি করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা তো আর জোর করে কাউকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে পারেন না৷ তবুও সাধ্যমত বোঝানোর চেষ্টা করছেন৷ তবে আবু তাহের এও বলেন যে, আশ্রয়কেন্দ্র পর্যাপ্ত নয় এবং এগুলোর মান নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে৷

A storm lights up the sky above the Yangon river early on May 13, 2013. Myanmar on May 12 began moving people into emergency shelters as a cyclone threatened to batter a violence-wracked region home to tens of thousands of internal refugees. AFP PHOTO/ Ye Aung Thu (Photo credit should read Ye Aung Thu/AFP/Getty Images)
আবহাওয়াবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতঙ্কিত না হয়ে ঘূর্ণিঘড়কে মেকাবেলা করতে হবেছবি: Getty Images/AFP/Ye Aung Thu

দেশের ১৫টি উপকূলীয় জেলার ৩৫টি উপজেলার দেড়কোটি মানুষ মহাসেনের আঘাতের আশংকার মধ্যে আছেন৷ কিন্তু তাঁদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র আছে ১,৮৮৩৷ সাধারণত এ ধরনের বিপদে উঁচু ভবনগুলোই আশ্রয়কেন্দ্র হিসবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ কিন্তু যদি মহাসেন তার তীব্র শক্তিতে আঘাত হানে, তাহলে সর্বোচ্চ ৫০ লাখের মতো মানুষের জায়গা দেয়া যাবে আশ্রয়কেন্দ্রে৷ বাকি ১ কোটি মানুষ কোথায় আশ্রয় নেবেন, তা কেউ বলতে পারছেন না৷ পিরোজপুরের সাংবাদিক শিরিন আক্তার ডয়চে ভেলেকে জানান, মানুষ মূলত আস্থা পাচ্ছে না বলেই আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে না৷ কারণ, অনেক আশ্রয়কেন্দ্রের কাঠামোগত অবস্থা ভালো না৷ তার ওপর পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্রও নেই৷

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী অবশ্য দাবি করেছেন, স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ১,০৯৫টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷ তিনি জানান, দুর্গত মানুষ সবাইকেই আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা দেয়া সম্ভব হবে৷

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক জানান, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১,৩২৭টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তত রাখা হয়েছে৷ বাতিল করা হয়েছে চিকিত্‍সকসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি৷ প্রস্তুত আছেন রেড ক্রিসেন্টের ৪২,৬৭৫ জন প্রশিক্ষিত উদ্ধারকর্মীও৷

চট্টগ্রামের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের জানান, এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বিমান এবং সমুদ্রবন্দরের কাজকর্ম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ উপকূলীয় এলাকার জেলে এবং মাছ ধরার নৌকা নিরাপদ জায়গায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে৷

ঢাকার আবহাওয়া দপ্তরের পরিচালক শাহ আলম জানান, বৃহস্পতিবার ভোর নাগাদ মহাসেন আঘাত হানতে পারে৷ তাই তারা ৭ নম্বর বিপদ সংকেদ দেখিয়ে যেতে বলেছেন৷ এদিকে, ইতিমধ্যেই সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে৷ কোথাও কোথাও বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে৷ বৃহস্পতিবারের এইচ এসসি পরীক্ষা বাতিল করে ২৫শে মে নতুন সময় নির্ধারণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়৷

ওদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. একে এম মাকসুদ কামাল ডয়চে ভেলেকে বছেন, এই দুর্যোগে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে৷ ভালো প্রস্তুতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব৷ তিনি উপকূলবর্তী মানুষকে আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ায় পরামর্শ দেন৷ আর সরকারের পক্ষ থেকে ঝড়ের আগে, ঝড়ের সময় এবং ঝড়ের পরে করণীয় সম্পর্কে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে – তা অনুসরণের জন্য বলেন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য