মধ্যপ্রাচ্যে জার্মানির পররাষ্ট্রনীতি: নীতি ও বাণিজ্যের সংঘাত
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের প্রথম পাতায় পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনার কয়েকটি নীতিমালার উল্লেখ আছে৷ এর মধ্যে আছে, ‘‘শান্তি ও নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রচার, আর মাল্টিলেটারালিজম বা বহুপাক্ষিকতার প্রতিশ্রুতি৷''
এর কয়েক লাইন পরেই লেখা আছে ব্যবসাবান্ধব দেশ হিসেবে জার্মানি তার কোম্পানিগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে৷
কিন্তু যখন এই দুই নীতির মধ্যে সংঘাতের সময় আসে তখন কী হয়?
এক দশক আগে মধ্যপ্রাচ্যে যখন আরব বসন্ত শুরু হয়েছিল তখন স্বাভাবিকভাবেই জার্মানি গণবিক্ষোভ ও গণতন্ত্রের প্রতি মানুষের আকাঙ্খাকে স্বাগত জানিয়েছিল৷ জার্মানির রাজনীতিবিদদের আরব ভাষাভাষী দেশগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রায়ই কথা বলতে দেখা যায়৷
কিন্তু একই সময়ে মিশর ও সৌদি আরবের মতো দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছে জার্মানি৷ সামরিক অস্ত্র বিক্রির সময় ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের প্রায়ই চোখ বন্ধ করে রাখতে দেখা যায় বলে মন্তব্য করেন সমালোচকরা৷
জার্মান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক ক্যার্স্টিন ম্যুলার ডয়চে ভেলেকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেন যুদ্ধে বেশ ভালোভাবে জড়িত থাকলেও তারা এখনও জার্মানি ও ইউরোপ থেকে অস্ত্র কিনতে পারে৷ সংযুক্ত আরব আমিরাত মধ্যপ্রাচ্যে জার্মানির সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার বলে জানান ম্যুলার৷ এমনকি দুই দেশ নিজেদের মধ্যে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব' বজায় রাখে বলেও জানান তিনি৷
চলতি বছরের শুরুতে জার্মানির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংসদকে জানায়, ২০২০ সালে ইয়েমেন ও লিবিয়া সংকটে যুক্ত থাকা মিশর, কাতার, আরব আমিরাত, কুয়েত, জর্ডান, বাহরাইন ও তুরস্কের কাছে ১.১৬ বিলিয়ন ইউরোর বা ১১ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকার অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়েছিল৷
আগামী রোববার জার্মানিতে নির্বাচনের পর নতুন চ্যান্সেলর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন৷ তাকে মধ্যপ্রাচ্যে আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সামলাতে হবে৷ এখন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যে জার্মানি শুধু মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে এসেছে৷ তাই কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র জার্মানিকে তাদের ভূমিকা আরও বাড়াতে চাপ দিয়ে আসছে৷
রাল্ফ বোজেন/জেডএইচ