ভয় করব না হৃদয় বেদনারে
১৩ জানুয়ারি ২০১১ছেলেমেয়েদের মেলামেশা এবং হৃদয়ঘটিত ব্যাপারস্যাপার এখানে কৈশোর, মানে স্কুলজীবন থেকেই৷ জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ তারই একটা নমুনা দিল ‘লাইফস্টাইল' বিভাগে৷ দু'টি কিশোরীর নজর একটি কিশোরের দিকে৷ কিশোরী দু'জন প্রাণের বন্ধু৷ এখন কিশোরটি যদি তাদের একজনকে নেকনজরে দেখতে শুরু করে, এমনকি ব্যাপারটা ভালোবাসা অবধি এগোয়, তা'হলে দুই কিশোরীর বন্ধুত্বের কী হবে?
প্রেম, না বন্ধুত্ব?
এখানে যাঁরা কিশোর-কিশোরীদের জন্য লেখেন অথবা সেই ধরণের পত্রিকা চালান, বঞ্চিত কিশোরীটিকে তাঁদের পরামর্শ, ছেলেটিকে দেখলে তোমার হাত ঘেমে ওঠে, ভালো কথা৷ কিন্তু তুমি কি সত্যিই তার প্রেমে পড়েছো, না ও'টা শুধু হিংসে, কিংবা দিবাস্বপ্ন? তোমার দঙ্গলের অন্য সব মেয়ে ঐ ছেলেটির প্রেমে৷ তা'ই কি তুমি তাদের মতো হতে চাইছ, ঐ দঙ্গলে ভিড়তে চাইছ? আপাতত অতো ভালো বন্ধুত্বটা নষ্ট কোরো না৷ ছেলেটাকে যদি তোমার প্রাণের বন্ধুর সঙ্গে দেখতে বড্ড কষ্ট হয়, তবে সে যখন থাকবে না, তখন তোমার প্রাণের বন্ধুর সঙ্গে দেখা কোরো৷ - সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ছেলেটা তোমাদের দু'জনকেই খেলাচ্ছে না তো? ছেলেটা আবার তোমারই প্রেমে পড়েছে, এমনও তো হতে পারে৷ তা'হলে অবশ্য তোমার বন্ধুত্বের বারোটা, অন্তত আপাতত...
প্রাক্তন প্রেমিক কি প্রেমিকার সাথে বন্ধুত্ব?
ডিপিএ এই প্রতিবেদনটি ছাড়ে রাত চারটে বেজে পাঁচ মিনিট সাতাশ সেকেন্ডে৷ এর ঠিক দশ সেকেন্ড আগেই বেরিয়েছিল অন্য একটি প্রতিবেদন: প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য৷ বিষয়: প্রাক্তন প্রেমিক কি প্রেমিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্ভব কিনা? এবার মাঠে নেমেছেন রীতিমতো মনোবিজ্ঞানী-গবেষকরা৷ তাঁরা দেখছেন, ছাড়াছাড়ি হবার সময় প্রেমিকা কি প্রেমিক, সকলেই বলে, ‘লেটস বি ফ্রেন্ডস', ‘আমরা কিন্তু বন্ধুই থাকব'৷ আদতে ও'টা ঝগড়া-ঝাঁটি এড়ানোর পন্থা - অপরদিকে প্রাক্তনকে খানিকটা ভবিষ্যতের জন্য তুলে রাখার পন্থা৷ সে বেচারাকে এমনভাবে বেঁধে রাখা, যা'তে তার জীবনে তোমার একটা না একটা ভূমিকা থেকে যায়৷ অর্থাৎ এক কথায়, স্বার্থপরতা৷ - অথচ ওর যে এখনও তোমার কাছে একটা বিশেষ মূল্য আছে, সেটাও স্পষ্ট৷ হঠাৎ কাছাকাছি এলে যে কি হয়ে যেতে পারে, তা কেউ জানে না৷
দাম্পত্য পুনরাবিষ্কার
ডিপিএ'র তৃতীয় প্রতিবেদন ছাড়া হয়েছিল প্রথম প্রতিবেদনটির ঠিক সাত সেকেন্ড পরে৷ এবার বিষয়: ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে বাড়ি ছাড়ার পরে বাবা-মায়ের বৈবাহিক সম্পর্কে একটা সংকট দেখা দেয় কেন? সেটা কি তাদের কাজ ফুরিয়েছে বলে? সন্তান প্রতিপালনের বাঁধা রুটিনটা নেই বলে? জিগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী থেকে হাইডেলবের্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ববিদ বলেছেন, দম্পতিকে এখন তাদের দাম্পত্যের একটা নতুন সংজ্ঞা উদ্ভাবন করতে হবে, তারা দুজনাই যে কি চান, তা পুনরাবিষ্কার করতে হবে৷
ভুলবেন না, এ'সবই কিন্তু জার্মান দেশের কথা, অথচ আমাদের নিজেদের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে কি আশ্চর্য মিল!
ভয় করব না হৃদয়বেদনারে...
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই