ভেনিস: শিল্পীর চোখে

ছবিটি আঁকেন ইংরেজ চিত্রশিল্পী উইলিয়াম টার্নার, ১৮৪০ সালে৷ ডিউকের প্রাসাদ আর ভেনিসের নতুন কারাগারের মধ্যে কিংবদন্তির এই চুনাপাথরের সেতুটি তৈরি হয় ১৬০০ সালে৷ কথায় ছিল, জেলে ঢোকার সময় বন্দিরা শেষবারের মতো ভেনিসকে দেখতো এই ব্রিজের জানলা থেকে৷ ‘দ্বীর্ঘশ্বাসের সেতু’ নামটি দেন ইংল্যান্ডের রোম্যান্টিক কবি লর্ড বায়রন৷

ছবিটি আঁকেন ভিত্তোরে কার্পাচ্চিও (১৪৬৫-১৫২০)৷ পিছনের জানালা দিয়ে ভেনিসের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে, সঠিক ও বাস্তবধর্মী, ১৫০০ সালের অঙ্কণশৈলীতে যা ব্যতিক্রমী৷ কিন্তু ডিউকের প্রতিকৃতিতে তাঁর ডিউকডম, অর্থাৎ রাজ্যকেও দেখানো প্রয়োজন৷

যে শিল্পীর নাম ভেনিসের সঙ্গে চিরকালের জন্য জড়ানো,তিনি হলেন জিওভান্নি আন্তোনিও কানাল (১৬৯৭-১৭৬৮), যদিও তিনি কানালেত্তো নামেই বেশি পরিচিত৷ শহরের দৃশ্যের সেরা আঁকিয়েদের অন্যতম ভেনিসের এই শিল্পী৷ লন্ডনেও ছিলেন কিছুকাল৷ কানালেত্তোর ছবির খুঁটিনাটি দেখলে মনে হবে যেন আলোকচিত্র৷

এঁকেছেন রকোকো শৈলীর চিত্রকর পিয়েত্রো লঙ্ঘি (১৭০১-১৭৮৫)৷ অষ্টাদশ শতাব্দীতে ভেনিসের ব্যবসা-বাণিজ্যের ছবি দেখতে হলে যেতে হবে লঙ্ঘির কাছে - কার্নিভালে মুখোশ পরা স্ত্রী-পুরুষের ছবি তো আঁকবেনই তিনি৷ অথচ লঙ্গি কিন্তু সূচনায় ফ্রেস্কো অর্থাৎ দেয়ালচিত্র ও গির্জার বেদীর ছবি আঁকতেন৷

জার্মান চিত্রশিল্পী ফ্রিডরিশ ন্যার্লি ভেনিসে যান ১৮৩৫ সালে - এবং সেখানেই থেকে যান৷ তাঁর আঁকা ভেনিসের ছবি তাঁকে ভেনিসের বাইরেও খ্যাতি এনে দেয়৷ এমনকি ন্যার্লি ভেনিসের এক অভিজাত মহিলাকে বিবাহ করেন ও ভেনিসের শিল্পকলা অ্যাকাদেমির সদস্য হন৷

ভেনিসের রাস্তায় পেঁয়াজ বিক্রি করছে যে মেয়েটি, মার্কিন চিত্রশিল্পী জন সিঙ্গার সার্জেন্ট (১৮৫৬-১৯২৫) তার ছবি আঁকেন ১৮৮২ সালে৷ সার্জেন্ট তখন ভেনিসে এসেছেন একটি সফরে৷ নয়তো তিনি সে আমলের সবচেয়ে দামী পোর্ট্রেট আঁকিয়েদের মধ্যে পড়েন৷

ভাসিলি কান্ডিনস্কি (১৮৬৬-১৯৪৪) ভেনিসের প্রখ্যাত রিয়োল্টো ব্রিজের এই ছবিটি আঁকেন ১৯০৪ সালে, তাঁর ইটালি সফরের অবকাশে৷

ইম্প্রেসনিস্ট অঙ্কণশৈলীর সম্রাট বলা হয় যাকে, সেই ফরাসি শিল্পী ক্লদ মোনে ১৯০৮ সালে ভেনিসে এসে ৩৭টি ছবি আঁকেন, তার মধ্যে ‘‘স্যান জিয়র্জিও মাজিওরে’’ দ্বীপের এই ছবিটি৷ ক্লদ সে আমলে তাঁর গ্যালারিস্টকে লিখেছিলেন যে, তিনি নাকি তাঁর ভেনিস সফরে উল্লেখযোগ্য কিছুই আঁকেননি!