1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভাষার ভিত্তিতে পড়ে গেল সরকার, রাজনৈতিক সংকটে বেলজিয়াম

২৭ এপ্রিল ২০১০

ভাষা নিয়ে বিবাদে সরকার পড়ে গেল বেলজিয়ামে৷ বেশ জটিল রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেই বেলজিয়ামকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব নিতে হবে ঠিক দুইমাসের মাথায়৷

https://p.dw.com/p/N7G0
পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী ইভস লেটারমেছবি: picture alliance / dpa

বেলজিয়াম কী শেষ পর্যন্ত দুইভাগে ভাগ হয়ে যাবে? এমনিতেই অত্যন্ত ছোট্ট তার আয়তন৷ তার মধ্যে আবার ফরাসি আর ডাচ ভাষা নিয়ে বিরোধ সেখানে সর্বদাই দেখা যায়৷ এই ভাষা বিরোধকে ঘিরেই সরকারও পড়ে গেল সেদেশে সোমবার৷ প্রধানমন্ত্রী ইভস লেটারমে সমস্যা সমাধান করতে না পেরে গত বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় অ্যালবার্টের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর পদত্যাগপত্র৷ রাজা অ্যালবার্ট সোমবার সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার পর সংকট বেশ ঘনীভূতই হল৷ কারণ, আর মাত্র দুইমাসের ভিতর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব নিতে হবে বেলজিয়ামকে৷ তার আগে অন্তর্বর্তী নির্বাচন, সরকার গঠন ইত্যাদি সেরে ফেলাটা জরুরি৷

কিন্তু অন্তর্বর্তী নির্বাচনের পথে যদি বেলজিয়াম যায়, সেক্ষেত্রে ভাষার ভিত্তিতে দেশের মধ্যে বড়মাপের ফাটল ধরার আশঙ্কা করছেন খোদ ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ডিডিয়ের রেইনডারস৷ গত তিনদিন ধরে রাজা অ্যালবার্টের হয়ে সরকার বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন তিনি৷ উত্তর আর দক্ষিণ বেলজিয়ামের যথাক্রমে ফ্লেমিশ আর ওয়ালুন ভাষার বাসিন্দাদের পারস্পরিক বিবাদ শেষে পুরো দেশটাকেই না দুইভাগে ভাগ করে দেয়, রেইন্ডার্সের আশঙ্কা এই নিয়েই৷ রাজা অ্যালবার্টের প্রাসাদ সূত্রে সোমবার ছোট্ট একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন৷ যার অর্থ, নির্বাচন ছাড়া আর অন্য কোন বিকল্প পথ খোলা নেই৷ প্রসঙ্গত, পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী লেটারমে এই ভাষাঘটিত বিবাদ না সামলাতে পেরে এর আগেও দুইবার রাজার কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন৷ সে সময় বিভিন্ন মধ্যস্থতার মাধ্যমে সরকার টিঁকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছিল৷ কিন্তু, এখন সরকার চালানো একেবারেই অসম্ভব আর তার কারণ হল গোঁড়া ফ্লেমিশরা ভাষার দাবি পূরণ না হলে কোনভাবেই আর জোটে থাকতে রাজি নয়৷ প্রধানমন্ত্রী লেটারমে তাঁর বিদায়ী বিবৃতিতে পুরো পরিস্থিতিটাকে সেভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন৷ বলেছেন, বেলজিয়ামের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেখানে গিয়ে পৌঁছেছে, তাতে আর কোনরকম দ্বিপাক্ষিক আলোচনার রাস্তাটুকুও খোলা নেই৷

বেলজিয়ামের মিডিয়াতে ইতিমধ্যেই দেশভাগ ভিত্তিক আলোচনা বেশ জোরদার ভাবেই শুরু হয়ে গেছে৷ বেশ কিছু সংবাদপত্রের শিরোনাম দেখা যাচ্ছে ‘বাই বাই বেলজিয়াম'৷ বস্তুতপক্ষে আকারে বিপুল বেড়ে ওঠা এই রাজনৈতিক সংকটের সমাধান না হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষেও বিষয়টা হয়ে উঠবে মোটামাপের মাথাব্যথার কারণ৷ আগামী পয়লা জুন যে দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা, তার নিজেরই যদি কোন সরকার না থাকে, ইইউ-র কাজ তাহলে চলবে কী করে ? অতএব সব মহলেরই উদ্বেগের নাম এখন ব্রাসেলস৷ ঘটনাচক্রে পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজধানীও ওই একই শহরে৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম