1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত-পাকিস্তান আধিপত্যের লড়াই আফগানিস্তানে

৪ মার্চ ২০১০

দক্ষিণ এশিয়ার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত ও পাকিস্তান নতুন এক লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ছে৷ লড়াই সহিংসতা বিক্ষুব্ধ আফগানিস্তানে আধিপত্য বিস্তারের৷ বিশ্লেষকদের ধারণা এ কারণেই আফগানিস্তানে ভারতীয় লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা দিন দিন বাড়ছে৷

https://p.dw.com/p/MJYo
আফগানিস্তানে ন্যাটো’র সেনারাছবি: AP

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গত সপ্তাহে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত সাতজন ভারতীয় নিহত হয়েছেন৷ এদের মধ্যে ভারতের সরকারি কর্মকর্তারাও রয়েছেন৷ ২০০৮ সালের জুলাইয়ে এবং ২০০৯ সালের অক্টোবরে কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসে হামলার ধারাবাহিকতায় এটা ছিল এ ধরণের তৃতীয় বড় হামলার ঘটনা৷

লন্ডন ভিত্তিক ‘ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস' এর দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ রাহুল রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘আফগানিস্তান থেকে পাততাড়ি গোটাতে ভারতকে বাধ্য করাই এসব হামলার লক্ষ্য৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তান উভয়েই চেষ্টা করছে একে অন্যের প্রভাব কমিয়ে আনার কেননা সেখানে উভয়েরই স্বার্থ আছে৷''

আফগান গৃহযুদ্ধের সময়টাতে প্রায় দুই দশক ধরে কাবুলে ভারতের উপস্থিতি নামমাত্র হলেও ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন অভিযানে তালেবান সরকারের পতনের পর ভারত নতুন আফগান প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুত ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে৷

ইতোমধ্যেই প্রায় ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের উন্নয়ন সাহায্য দিয়ে আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় আঞ্চলিক দাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ভারত৷ যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিতে রাস্তাঘাট, সেতু, বিদ্যুৎ লাইনের মতো অবকাঠামো নির্মাণ এবং স্যানিটেশন প্রকল্পসহ নানা উন্নয়ন প্রকল্পে প্রায় ৪,০০০ ভারতীয় এখন আফগানিস্তানে কাজ করছে৷ এমনকি আফগানিস্তানের নতুন পার্লামেন্ট ভবনটিও ভারতের তৈরি করে দেওয়া৷

Christopher Langton International Institute for Strategic Studies
লন্ডন ভিত্তিক ‘ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস' এর কর্মকর্তা ক্রিস্টোফার ল্যাংটনছবি: iiss

যে আফগানিস্তানকে তারা নিজেদের উঠোন বলে মনে করে সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের এমন ধীরে ধীরে শিকড় ছড়াতে থাকা মেনে নিতে পারছে না পাকিস্তান৷ কাবুলের ওপর নতুন দিল্লির প্রভাব নিয়ে ইসলামাবাদ এক ধরণের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে৷

ওয়াশিংটন ভিত্তিক ‘ইউনাইটেড স্টেটস ইন্সটিটিউট অফ পিস' এর জে. আলেক্সান্ডার থিয়ার বলেন, ‘‘আফগানিস্তানে ভারতের সম্পৃক্ততা নিয়ে পাকিস্তানের এক ধরণের অস্তিত্বের উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, যেহেতু তারা এটাকে ভারতের ঘিরে ফেলার নীতি বলে মনে করছে৷'' আলেক্সান্ডার থিয়ার আরও বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য আরেকটা যুদ্ধের প্রশ্নে কৌশলগত পশ্চাৎভূমি হিসেবে আফগানিস্তানের ওপর নির্ভর করে পাকিস্তান৷''

পাকিস্তানি বিশ্লেষক রহিমুল্লাহ ইউসুফজাই বলেন, ‘‘ভারত ও পাকিস্তান ক্রমশই আফগানিস্তানে এক ধরণের পরোক্ষ যুদ্ধ অবতীর্ণ হয়ে পড়ছে৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা শুধু আফগানিস্তানকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে না বরং ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার অস্বস্তিময় সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলছে৷''

ইউসুফজাইয়ের এই ধারণার সঙ্গে একমত নতুন দিল্লির থিঙ্ক ট্যাংক ‘ন্যাশনাল ম্যারিটাইম ফাউন্ডেশন' এর সি. ইউ ভাস্কর৷ আরও কিছুটা যোগ করে ভাস্কর বলেন, ‘‘এইসব সন্ত্রাসী হামলাকে পাকিস্তান হয় সরঞ্জাম যুগিয়ে না হয় আশ্রয় প্রশয় দিয়ে মদদ দিয়েছে৷''

ইসলামাবাদ অবশ্য এমন অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে এবং বলছে যে, তালেবান সংকট মোকাবিলা নিয়ে নিজের দেশেই তারা সমস্যায় রয়েছে৷

প্রতিবেদক : মুনীর উদ্দিন আহমেদ, সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক