1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্য

ভারতে চিকিৎসা শিক্ষায় নয়া আইন

রাজীব চক্রবর্তী
৩১ জুলাই ২০১৯

বিরোধীদের আপত্তি আমলে না নিয়ে নতুন ‘‌ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন বিল, ২০১৯'‌ পাশ হয়েছে ভারতের লোকসভায়৷ তাতে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন চিকিৎসকরা৷

https://p.dw.com/p/3N4po
প্রতীকী ছবিছবি: Getty Images/AFP/M. Sharma

দেশে চিকিৎসা শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিবর্তন এনে সময়োপযোগী এবং সংস্কারমুখী পাঠ্যসূচি চালু করার কথা বলছে ভারত সরকার৷ এজন্য ১৯৫৬ সালের আইন বিলোপ করতে চাইছে তারা৷

তবে বিরোধীরা বলছে, নতুন আইন চালু হলে ভেঙে পড়বে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা৷ রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের জন্য ‘‌বিপজ্জনক'‌ এই আইন৷ শহর ও গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিস্তর বৈষম্য দেখা দেবে৷ পোয়াবারো হবে হাতুড়ে চিকিৎসকের৷ গ্রামে ফিরবে ‘‌কোয়াক ডাক্তার'‌ !‌

লোকসভায় পাশ হয়েছে ‘‌ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন বিল'৷ অপর কক্ষ রাজ্যসভায় পাশ হলেই আইনের রূপ নেবে বিলটি৷

‌প্রস্তাবিত আইনের বিরোধীতায় দেশজুড়ে আন্দোলনে নেমেছেন চিকিৎসকরা৷ কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ‘‌ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন'৷ সংস্থার সর্বভারতীয় সভাপতি শান্তনু সেন ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘‌‘‌এতদিন মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ছিল নির্বাচিত সংস্থা৷ এই সরকার সার্বভৌমত্বে কুঠারাঘাত করছে৷ নির্বাচনের পরিবর্তে সরকার মনোনীত সদস্যরা এখন চিকিৎসা ব্যবস্থার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবেন!‌ বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর ৫০ শতাংশ কর্তৃপক্ষের হাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে৷ সেগুলো এবার মোটা অঙ্কে বিক্রি হবে৷ বিলটি গণতন্ত্র-‌বিরোধী, গরিব-‌বিরোধী, চিকিৎসক-‌বিরোধী এবং সাধারণ মানুষ-‌বিরোধী৷ আন্দোলনে নেমেছেন আট লক্ষ চিকিৎসক৷'‌'

সরকার সার্বভৌমত্বে কুঠারাঘাত করছে: শান্তনু সেন

কী কী রয়েছে প্রস্তাবিত আইনে?‌

জাতীয় স্তরে ‘‌ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন'‌ এবং ৩ বছরের মধ্যে রাজ্যস্তরে গঠিত হবে ‘‌স্টেট মেডিকেল কমিশন'৷ চিকিৎসা শিক্ষা সংস্থা এবং চিকিৎসকদের পেশাগত নিয়ন্ত্রণ নীতি নির্ধারণ করবে কমিশন৷ বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আসনের ফি নির্ধারণ করবে এই কমিশন৷ এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার একটি ‘‌মেডিকেল অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল'‌ গঠন করবে৷ গঠন করা হবে কেকটি ‘‌স্বয়ংশাসিত বোর্ড'৷ বোর্ডগুলি হল, ‘‌আন্ডার গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড'‌ এবং ‘‌পোস্ট-‌গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড'৷ এই বোর্ডগুলি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চিকিৎসা শিক্ষার মান, পাঠ্যক্রম, নির্দেশিকা এবং ছাত্র-‌ছাত্রীদের যোগ্যতার স্বীকৃতি দেবে৷ এছাড়া গঠন করা হবে ‘‌মেডিকেল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড রেটিং বোর্ড'‌৷ এই বোর্ডই দেশে নতুন মেডিকেল কলেজ তৈরি, স্নাতকোত্তর কোর্স চালু এবং আসন সংখ্যা বাড়ানোর অনুমোদন দেবে৷ গঠণ করা হবে ‘‌এথিক্স অ্যান্ড মেডিকেল রেজিস্ট্রেশন বোর্ড'‌৷ এই বোর্ডের কাজ হবে গোটা দেশের লাইসেন্স প্রাপ্ত সমস্ত রেজিস্টার্ড চিকিসকদের তালিকা তৈরি করা৷ সেইসঙ্গে চিকিৎসকদের পেশাদারি আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণ করা৷ এই বোর্ডই কমিউনিটি হেল্থ প্রভাইডারদের একটি রেজিস্টার তৈরি করবে৷

 

কমিউনিটি হেল্থ প্রভাইডার কারা?‌

প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী ‘‌মডার্ণ মেডিকেল প্রফেশন'‌-‌এর সঙ্গে যুক্ত বেশকিছু ‘‌মিড-‌লেভেল প্র্যাকটিশনার'‌দের চিকিৎসা করার লাইসেন্স দেবে এনএমসি৷ এই ‘‌মিড-‌লেভেল প্র‌্যাকটিশনার'‌-‌রা প্রাথমিক ও প্রতিষেধক ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবেন৷ যাকে ‘‌ভয়ানক'‌ বলছেন বিরোধীরা৷

বিলটি আসলে সরকারের পাগলামি

প্রবেশিকা পরীক্ষা-‌ প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য জাতীয় স্তরে অভিন্ন ‘‌ন্যাশনাল ইলিজিবিলিটি-‌কাম-‌এন্ট্রান্স টেস্ট'‌ বা এনইইটি পরীক্ষা দিতে হবে৷ স্নাতক স্তরে পাশ করার পর এমবিবিএস ছাত্রছাত্রীদের চিকিৎসা করার লাইসেন্স পেতে হলে পড়ুয়াদের ‘‌ন্যাশনাল এক্সিট টেস্ট'‌ উত্তীর্ণ হতেই হবে৷ পর পর দু-‌বার সুযোগ দেওয়া হবে৷ স্নাতকোত্তর পর্যায়ের প্রবেশিকা হিসেবেও গণ্য হবে এটি৷

 

লোকসভার সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‌‘বিলটিকে আসলে সরকারের পাগলামি মনে করি৷ কারণ, ‌সংবিধান ও গণতন্ত্রে সর্বক্ষেত্রে নির্বাচনের মূল্য রয়েছে৷ শহর ও গ্রামের বৈষম্য কেন?‌'‌'‌​​​​​​​

যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য, এর আগে সব দলের সাংসদদের নিয়ে গঠিত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি যে সুপারিশ করেছিল তারমধ্যে ৪০টি পূর্ণাঙ্গ ভাবে, সাতটি আংশিক ভাবে মেনে নিয়েছে সরকার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান