ভবিষ্যতে যা করতে চায় ফেসবুক
শুধু সামাজিক যোগাযোগের সাইট আর বার্তা আদানপ্রদানের অ্যাপে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখতে চায় না ফেসবুক৷ পাশাপাশি কেনাকাটা, অর্থ লেনদেনসহ অনলাইনকেন্দ্রিক সব সেবাই নিয়ে আসতে চায় প্রতিষ্ঠানটি৷
এক প্ল্যাটফর্মে সব কিছু
ফেসবুকের সব আ্যপ - মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, আর হোয়াটস অ্যাপকে একটি একক ব্যবস্থায় আনতে চান মার্ক সাকারবার্গ৷ এই ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় বাড়তি জোর দেয়া হবে৷ বার্তা আদানপ্রদান ছাড়াও এটিকে এমনভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা তাঁর, যা ‘কথা বলা, ভিডিও চ্যাট, গ্রুপ স্টোরি, ব্যবসা, লেনদেন, বাণিজ্য এবং সব ধরণের ব্যক্তিগত সেবার একটি প্লাটফর্ম হয়ে উঠবে৷’ সম্প্রতি এক ব্লগপোস্টে লিখেছেন তিনি৷
পেমেন্ট সেবা
আগামী দিনে ফেসবুকের অ্যাপেই মিলবে পেমেন্ট সেবা৷ ধরুন প্রতিষ্ঠানটি পেপালের সাথে জোটবদ্ধ হলো৷ তখন চাইলে অনলাইনে কেনাকাটা, রেস্টুরেন্ট বিল, সরকারি সেবার বিল সবই পরিশোধ করা সম্ভব হবে মেসেজিং অ্যাপ দিয়েই৷ নেয়া যাবে রাইড শেয়ারিং সেবাও৷ অবশ্য এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে লেনদেনের সুবিধা রয়েছে৷ হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক লেনদেন ব্যবস্থা চালু হয়েছে ভারতেও৷
নিজস্ব মুদ্রা
ব্যবহারকারীদের অর্থ লেনদেনের সুবিধার জন্য ফেসবুক নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রা তৈরি করছে বলে নিউইয়র্ক টাইমস তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে৷ এ বিষয়ে ফেসবুক বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেনি৷ তবে নতুন একটি দল বিটকয়েনসহ অন্য ক্রিপ্টোকারিন্সেগুলোর ব্যবহারের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়৷ এটি বাস্তবায়ন হলে অর্থ লেনদেনের জন্য ব্যবহারকারীদের ব্যাংক বা পেপাল অ্যাকাউন্ট লাগবে না৷
ওয়ান-স্টপ শপ
নিজস্ব ভার্চুয়াল মুদ্রা চালু হলে ফেসবুকের মাধ্যমে অনলাইন কেনাকাটা বা সেবা নেয়ার বড় একটি চ্যালেঞ্জ দূর হয়ে যাবে৷ মেসেজিং অ্যাপ প্লাটফর্মটি তখন পরিণত হবে ‘ওয়ান স্টপ শপে’৷ রেস্টুরেন্ট রিজার্ভেশন, পরিবহন সেবা নেয়া, কিংবা মার্কেটপ্লেস থেকে পণ্য কেনা, সম্ভব হবে সবই৷ এমনকি ভবিষ্যতে অ্যামাজনের মত ই-কমার্স ব্যবসাতেও নামতে পারে ফেসবুক, ধারণা বিশেষজ্ঞদের৷
আয়ের নতুন উৎস
নতুন এই প্ল্যাটফর্মের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বিজ্ঞাপনের বাইরে আয়ের নতুন নতুন দুয়ার খুলবে ফেসবুকের জন্য৷ কেনাকাটার ক্ষেত্রে তখন সেবাদাতা কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কমিশন নিতে পারবে তারা৷ যেমনটি এখন অ্যাপল করে থাকে৷ অ্যাপভিত্তিক লেনদেনে তারা ৩০ ভাগ পর্যন্ত অর্থ কেটে রাখে৷
চ্যালেঞ্জও আছে
ফেসবুকের এই পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়ন সম্ভব, তা নির্ভর করবে ব্যবহারকারীদের আগ্রহের উপর৷ কেননা ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ায় ফেসবুকের উপর আস্থার সংকট রয়েছে৷ তার উপর এই পরিবর্তনের পথে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের আইনি বাধাও তাদের পেরুতে হবে৷