ব্রিগেডিয়ার হেনিং হারসকে সরিয়ে দিলেন গুটেনবেয়ার্গ
১৩ মার্চ ২০১০এক সপ্তাহ আগেই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হেনিং হারসের কাছে কাজে না আসার চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রক৷ খবরটা কিন্তু জানা গেল মাত্র শুক্রবার৷ জার্মান সংবাদমাধ্যমের কাছেও চাপা ছিল এই সংবাদ৷ জার্মান সেনাবাহিনীর বিমানহামলায় আফগানিস্তানের কুন্দুজে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ১৪২ জনের মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতেই এই ব্রিগেডিয়ারকে সরানো হল বলে জানা গেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে৷ নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন সাধারণ নাগরিক৷ যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল অনেক সংখ্যায়৷
বস্তুত আফগানিস্তানের কুন্দুজে দুটি তেলের ট্যাঙ্কারের ওপর বিমানহামলার ঘটনা নিয়ে বহু জলঘোলা হয়েছে৷ জার্মানির প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে এই বিতর্কে জড়িয়ে এবং ঘটনার বিষয়ে নিজের অনবধানতা মেনে নিয়ে পদত্যাগও করতে হয়েছে গত বছরে৷ এরপরেই প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দায়িত্ব কার্ল থিওডর সু গুটেনবেয়ার্গের হাতে তুলে দেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ গুটেনবেয়ার্গ দায়িত্বে আসার পরেই কুন্দুজের ঘটনার বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দেন৷ এরপর প্রথমে আফগানিস্তানে ওই সময়ে জার্মান বাহিনীর দায়িত্বে থাকা এক সেনানায়ককে অপসারণ করা হয়৷
প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুটেনবেয়ার্গের ওই উচ্চপদস্থ সেনা অফিসারকে সরানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হেনিং হারস গুটেনবেয়ার্গের কাছে একটি চিঠি লেখেন সাম্প্রতিক অতীতে৷ চিঠিতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হেনিং হারস প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কাছে কুন্দুজের ঘটনা বিষয়ে তাঁর মূল্যায়নও জানতে চেয়েছিলেন৷ এই চিঠির অব্যবহিত পরেই ব্রিগেডিয়ার হারসকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেন গুটেনবেয়ার্গ৷
জার্মান সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হেনিং হারস অতীতে ওয়াশিংটনে মিলিটারি অ্যাটাশে পদে কাজ করেছেন৷ সেনাবাহিনীতে তাঁর প্রভাব এবং গুরুত্বও যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য৷ কিন্তু, আফগানিস্তানের কুন্দুজের এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মহলে জার্মানির ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করেছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে৷ আফগানিস্তানের পুনর্গঠন ও উন্নয়নে জার্মান সেনাবাহিনীর ভূমিকাতে কলঙ্কলেপনকারী এই ঘটনাটির বিষয়ে যে কারণে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হেনিং হারসের মত উচ্চপদস্থ অফিসারকে সরিয়ে দেওয়ার মত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেনি বার্লিন৷ এরকমই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ প্রসঙ্গত, কুন্দুজের ওই বিমানহামলার ঘটনায় নিহতদের পরিবারবর্গ বর্তমানে ক্ষতিপূরণের মামলা করেছে৷ আন্তর্জাতিক আদালতে এই মামলাটিকে না নিয়ে যাওয়ার জন্য জার্মানি উদ্যোগও নিয়েছে৷ সম্ভবত আদালতের বাইরেই এই মামলার নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা৷ সেক্ষেত্রে বিপুল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতেও বার্লিন রাজি এরকম ইঙ্গিত আগেই মিলেছে সরকারি সূত্রে৷
প্রতিবেদন- সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা- আরাফাতুল ইসলাম