1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রাজিলের বিশ্বাস, ডাচদের প্রত্যয় আর আফ্রিকার স্বপ্ন

২ জুলাই ২০১০

ব্রাজিল জিতছেই, বলতে পারলে ভালোই লাগত অনেকের৷ কিন্তু রবেনরা ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন৷ এই বিশ্বকাপে ব্রাজিলের কোচ দুঙ্গা আর ‘জোগা বোনিতো’-য় আস্থা রাখেন নি৷

https://p.dw.com/p/O9Cz
কোয়ার্টার ফাইনালের দলগুলোর পতাকা আর বিশ্বকাপছবি: DW/AP

ওদিকে ঘানা উরুগুয়ে দুই দলই তাল ঠুকছে৷ ঘানার দিকেই বড় আশা নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে সম্পূর্ণ আফ্রিকা৷

‘ব্রাজিল পাঁচবারের পর এবার ছয়বার কাপ নিয়ে যাবে৷ ব্রাজিল নেদারল্যান্ডসকে এই ম্যাচেই বাড়ি পাঠাবার ব্যবস্থা করবে৷ ব্রাজিল ঠিক কটা গোল দেবে সেটাও বোঝা যাচ্ছে না, তবে একটার বেশি তো অবশ্যই৷ আর ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনালে হয়তো কোন গোল খাবে না.....' না, কোন বিশেষজ্ঞের মতামত নয়, এইসবই ধারণা, আন্দাজ, প্রত্যাশা আর কিছুটা বিশ্বাস৷ কারণ? কারণ খুব স্পষ্ট, ব্রাজিল সমর্থকদের বুকে বেশি করে অক্সিজেনের আত্মবিশ্বাস আর ভরসা এই বিশ্বকাপে ঢুকিয়ে দিয়েছেন কোচ দুঙ্গা, স্ট্রাইকার কাকা, চিলির ম্যাচে চমক তৈরি করা রবিনহো আর ব্রাজিল দলের একের পর এক মার মার কাট কাট সাফল্য৷ কিন্তু এবারের ব্রাজিল যে ফুটবল খেলছে, তাতে সেই ‘জোগা বোনিতো' কই?

‘জোগা বোনিতো'- শব্দদুটোর অর্থটা আগে বলে নিই৷ মানে হল সুন্দর ফুটবল৷ ব্রাজিলের স্মার্ট কোচ ডুঙ্গা এবার সাফ বলে দিয়েছেন, ‘ওসব সুন্দর ফুটবল আর সাম্বা নাচ আর ল্যাটিন অ্যামেরিকান স্টাইল, এসব বুঝি না৷ মোদ্দা কথা হল আমাদের বিশ্বকাপটা চাই৷ তাই তার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করে খেলব৷'

সেই সর্বশক্তির অনেকটাই আজ নিয়োগ করতে হবে দুঙ্গাবাহিনীকে৷ যদিও রবেন বাহিনীও পিছিয়ে নেই৷ টানা বারোটা ম্যাচ জিতে আসছে ডাচরা৷ একটাও হারে নি৷ বিশ্বকাপ দলে রবেন আর স্নাইডারের জুটি এখনও পর্যন্ত জমজজমাট দেখিয়েছে৷ কিন্তু, তারপরেও কিছু আছে, কিছু থেকে যায়৷

কি সেটা? সেটা হল পরিসংখ্যান আর আতঙ্ক৷ সেটার আসল নাম ব্রাজিল৷ ৯৪ বিশ্বকাপে এই কোয়ার্টার ফাইনালেই ডাচরা বিদায় নিয়েছিল, সেবার সামনে ছিল ব্রাজিল৷ চার বছর পর ৯৮, আবার বিশ্বকাপ, সেবার সেমিফাইনাল, সেবারেও ব্রাজিল এবং ডাচেদের কমলা জার্সির চোখের জলে বিদায়৷ তারপর এই ২০১০, এবার কোয়ার্টার ফাইনাল, এবারেও এমন কপাল ডাচেদের, যে বিপক্ষে দলটা সেই ব্রাজিল৷ এবং এমন এক ব্রাজিল, যাদের এবার সমীহ না করে কোন উপায় নেই৷ কারণ, দুঙ্গার এই ব্রাজিলের জেতার জন্যই মাঠে নামা যে, তাতে কোন সন্দেহ এখনও দেখা যাচ্ছে না৷সুতরাং...কমলা জার্সির শেষ খেলা কী আজকেই?

আর উরুগুয়ে ঘানা ম্যাচটা, যেটা হবে রাতের দিকে সেখানে কিন্তু হটেস্ট হট ফেভারিট দলের নাম হল ঘানা৷ কারণ, কৃষ্ণাঙ্গ যে মহাদেশ, এই বিশ্বকাপের আয়োজন করেছে, তাদের শেষ ভরসা এই ঘানা৷ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিটি মানুষও আজ ঘানারই জন্য তাঁদের সমর্থন সঞ্চয় করে রেখেছেন৷ বঞ্চিত নিপীড়িত আফ্রিকা মহাদেশ তাকিয়ে রয়েছে এই দলটার দিকেই৷ তারা কী পারবে? বিশ্ব ফুটবলের রাজসভায় সেমিফাইনালে ওঠা কী সম্ভব হবে আবেদি পেলের দেশের পক্ষে? সেই অসম্ভব সম্ভব হতে পারে যদি প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ উরুগুয়েকে হারানো যায়৷

উরুগুয়ের আবেগ আরও বেশি৷ প্রথম বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ উরুগুয়ের সামনে দীর্ঘ চল্লিশ বছর পর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ৷ আর সেই সুযোগের অন্যতম ট্রাম্পকার্ড ফোরলান৷ অপ্রতিরোধ্য ফোরলানের ওপর অনেকখানি ভরসা গোটা দেশের৷ ভালো খেলছেন, গোল পাচ্ছেন, দলে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নাতীত৷

সুতরাং ঘানা উরুগুয়ে ম্যাচটাও অসামান্যই হবে৷ মরণপণ লড়াই হবে৷ হবে একটা দেশের চল্লিশ বছরের লালিত স্বপ্নের সঙ্গে একটা গোটা মহাদেশের লড়াই৷

আর আমরা তাকিয়ে থাকব, এই ম্যাচটার ফলাফল কী হয় সেদিকে৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক