ব্রাজিলের ঐতিহ্য সাম্বা’র একশ বছর পূর্তি
অসাধারণ নৈপুন্য, ছন্দ, কবিত্ব এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ সব কিছুর প্রতিফলন ঘটে ব্রাজিলের সাম্বায়৷ ২৭ নভেম্বর সাম্বা’র শত বর্ষ পূর্ণ হলো৷ ডয়চে ভেলে খুঁজে দেখেছে এর ইতিহাস৷
ব্রাজিল আর সাম্বা
সাম্বা শব্দটি যেন ব্রাজিলের প্রতিশব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে একটি পত্রিকায় বলা হয়েছে, ব্রাজিলের জাতীয় পরিচয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘সাম্বা’৷
আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু
১৯১৬ সালের ২৭ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে রিও ডি জানেরোতে সাম্বার প্রচলন শুরু হয়৷
‘পেলো টেলিফোন’
এদিন ব্রাজিলের গীতিকার এরনেস্তো ইয়োআকিম মারিয়া দোস সান্তোস প্রথম সাম্বা গান ‘পেলো টেলিফোন’ রচনা করেন, যা এখন ব্রাজিলের জাতীয় লাইব্রেরিতে রাখা হয়েছে৷
সারা বিশ্বে জনপ্রিয়
সেই থেকে শুরু৷ তারপর পুরো বিশ্বে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পায় সাম্বা নৃত্য৷ তখনকার সংগীতজ্ঞদের ধারণাই ছিল না এই গান ও নৃত্য এতটা জনপ্রিয়তা পাবে৷
ক্রীতদাসের গান
সাবেক ক্রীতদাস ও তাদের বংশধরদের গান হিসেবে পরিচিত সাম্বা তখনকার দিনে নিকৃষ্ট বলে বিবেচিত হতো৷ অথচ আজ তা ব্রাজিলের সংস্কৃতির খুব উল্লেখযোগ্য অংশ৷
ইউনেস্কোর তালিকায়
২০০৫ সালে ইউনেস্কো সাম্বাকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয়৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাম্বা শিল্পীদের দেখতে পাওয়া যায়৷ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে গড়ে উঠেছে সাম্বা স্কুল৷
উৎসবে উৎসবে সাম্বা
কোলোনের কার্নিভাল, নিউইয়র্কে প্যারেড, টোকিওর কার্নেভালসহ বিভিন্ন উৎসবে এখন জায়গা করে নিয়েছে সাম্বা৷
ব্রাজিলের আত্মা
ব্রাজিলে যারা সাম্বা উপভোগ করেছেন, তাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা কেবল সংগীতের সফল রূপ নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু৷ ব্রাজিলের মানুষের মানসিক অবস্থার প্রতিফলন এই সাম্বা৷ তাদের জীবনের দার্শনিক প্রতিফলনও এটি৷
অনুভূতির প্রতিফলন
ব্রাজিলের মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার অনুভূতি প্রতিফলিত হয় সাম্বার মাধ্যমে৷
রাজনৈতিক, সামাজিক এবং জাতিগত বিপ্লব
সাম্বায় কিসের প্রতিফলন নেই! সেখানে নাচে-গানে ফুটে ওঠে রাজনৈতিক, সামাজিক ও জাতিগত বিপ্লব৷
বাস্তবাদী ব্রাজিলিয়ান
অনেক বাধা-বিপত্তির মধ্য দিয়েও কীভাবে ব্রাজিলের অধিবাসীরা নিজেদের জীবনকে ভালোবাসতে পারে, সেই বাস্তবাদী মানসিকতা প্রতিফলিত হয় সাম্বায়৷
স্বৈরশাসকের বাধা
১৯৬৪ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলে সামরিক শাসন ছিল৷ তখন সাম্বার উপর স্বৈরশাসকের খড়গ নেমে আসে৷
নির্বাসিত
সামরিক শাসন চলাকালীন অনেক লেখক ও সংগীতজ্ঞকে নির্বাসনে পাঠানো হয়, কারণ, ঐ শিল্পীরা তাদের লেখায় ও গানে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন৷
প্রতিযোগিতা
বর্তমানে সাম্বার সময় পুরো বিশ্বের চোখ থাকে ব্রাজিলের দিকে৷ এখনকার উৎসবে যোগ হয়েছে প্রতিযোগিতা৷ নাচের বিভিন্ন দল, বিভিন্ন স্কুল এতে অংশ নেয়৷
রিও কার্নেভালে সাম্বা
সাম্বা না থাকলে রিও কার্নেভাল যেন পূর্ণতা পায় না৷ রিও কার্নেভালেন মূল আকর্ষণ সাম্বা প্যারেড৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ সময় রিও ডি জানেরোতে জড়ো হন পর্যটকরা৷
জমকালো
যুগের সাথে সাথে সাম্বার ধরণ পাল্টেছে৷ এখন পোশাকে এসেছে আধুনিকতা ও জমকালো ভাব৷ এসেছে মুখোশ৷