1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্যাঞ্জনবর্ণ করোনাভাইরাস আরো দ্রুত ছড়াতে পারে

১৩ অক্টোবর ২০২০

শুধু কথা বলা নয়, গান গাওয়ার সময়েও করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে৷ কয়েকজন গায়ককে নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা মাস্ক, শারীরিক দূরত্ব, ভেন্টিলেশন ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন৷

https://p.dw.com/p/3jppu
USA Washington | Mikroskopaufnahme Coronavirus
ছবি: picture-alliance/ZUMA/NIAID-RML

গান গাওয়ার সময় এয়ারোসোল কতদূর উড়ে যেতে পারে? সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে জার্মানির এর্লাঙেন বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পরীক্ষার ১৪ দিন পরেও দুই বিজ্ঞানী তথ্যের মূল্যায়ন করে চলেছেন৷ দেখা গেল, এয়ারোসোল যেদিকে প্রসারিত হচ্ছে, সেখানে সাধারণত অন্য গায়কদের উপস্থিত থাকার কথা৷ মিউনিখের এলএমইউ হাসপাতালের মাটিয়াস এশটারনাখ বলেন, ‘‘এক থেকে দেড় মিটার দূরত্বে অনেকেই ছিলেন৷ অর্থাৎ কয়ারে সমবেত সংগীতের সময় দেড় মিটার দূরত্ব অবশ্যই বড় কম৷''

জার্মানির বাভেরিয়া রাজ্যে গানের সময় দুই মিটার দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম চালু রয়েছে৷ তাছাড়া রিহার্সালের সময় সীমিত রাখতে হয় এবং নিয়মিত জানালা খুলে বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা করতে হয়৷ এ ক্ষেত্রে দুই বিজ্ঞানীর পরামর্শ কী? মাটিয়াস এশটারনাখ মনে করেন, ‘‘একেবারে নিশ্চিত হতে হলে বার বার এয়ারোসোল পুরোপুরি দূর করতে হবে৷ কারণ গান গাইলে বার বার নতুন এয়ারোসোল তৈরি হয়৷ তাই লাগাতার ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা সেরা উপায়৷ সেটা থাকলে হয়তো দুই বা আড়াই মিটার ব্যবধানের কথা ভাবা যেতে পারে৷ অনেক শখের সংগীতগোষ্ঠীর পক্ষে সেটা নিশ্চিত করা বেশ কঠিন৷''

মুখের পাশের অংশে এয়ারোসোলের বিস্তারের মাত্রাও তাঁরা পরিমাপ করেছেন৷ ডানে বা বামের প্রতিবেশীদের তুলনায় সামনের গায়কদের থেকে আরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ গানের সময় বড় ড্রপলেটের ক্ষেত্রে স্বরবর্ণ ও ব্যাঞ্জনবর্ণের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করাও গবেষণার আরেকটি বিষয় ছিল৷ শ্রোতাদের কানে বোধগম্য করে তোলার জন্য গায়কদের ব্যাঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের সময় বিশেষ জোর দিতে হয়৷ মাটিয়াস এশটারনাখ বলেন, ‘‘মঞ্চে যেমনটা ঘটে, সেভাবে আমি খুব স্পষ্ট উচ্চারণ করলে এমনটাও হতে পারে, যে সাধারণ কথোপকথনের তুলনায় কণা আরও দূর পর্যন্ত চলে যায়৷''

মুখের গহ্বর অথবা ঠোঁটের কোণে ব্যাঞ্জনবর্ণ সৃষ্টি হয়৷ সে সময়ে মুখের ভিতরের আর্দ্রতা বড় বিন্দুগুলি টেনে নেয়৷ অন্ধকার ঘরে সেগুলির সংখ্যা ও দূরত্ব মাপা বয়েছে৷ এর্লাঙেন বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ড. স্টেফান ক্নিসবুর্গেস বলেন, ‘‘স্বরবর্ণের ক্ষেত্রে আমরা প্রায় কোনো ড্রপলেট বের হতে দেখি নি৷ ব্যাঞ্জনবর্ণের তুলনায় অতি সামান্য কণা পাওয়া গেছে৷''

মাস্ক পরলে ড্রপলেট আটকানো যায়৷ কিন্তু পেশাদারী সংগীতশিল্পীরা কি মাস্ক পরে আদৌ গান গাইতে পারেন? এক শিল্পী জানালেন, সেটা মোটেই সম্ভব নয়৷ কারণ সংগীত আসলে আবেগ, হৃদয় দিয়ে গাইতে হয়৷ এভাবে গাইতে হলে তিনি বরং অন্য কিছু শিখবেন৷

পরে ফলাফল মূল্যায়ন করে দেখা গেছে যে গান গাওয়ার সময় মাস্ক পরলে বড় ড্রপলেট আটকানো সম্ভব৷ ড. ক্নিসবুর্গেস বলেন, ‘‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাস্কের ধারে অথবা নাকের পাশে খোলা অংশ দিয়ে এয়ারোসোল যে বেরিয়ে এসে গোটা ঘরে ছড়িয়ে পড়ে, পরীক্ষার সময়ে আমরা তা দেখেছি৷''

তবে গবেষকদের মতে, গান গাওয়ার সময় মাস্ক পরলে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়৷ সামনের ব্যক্তির সঙ্গে আড়াই মিটার ও পাশের ব্যক্তির সঙ্গে দেড় মিটার দূরত্ব অবশ্যই বজায় রাখা উচিত৷ মাঝে প্লেক্সিগ্লাসের প্রাচীর ও লাগাতার ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রাখলে আরও সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব৷

ডোরোটে রেঙেলিং/এসবি