বৃষ্টিতে বাড়ি ভাঙলো কলকাতায়, উদ্ধার শিশু সহ আট
রাতভর বৃষ্টির পর বুধবার সকাল ছয়টা নাগাদ উত্তর কলকাতায় ভেঙে পড়ল দুই তলা বড়ি। শিশু সহ আটজনকে উদ্ধার।
আহিরিটোলায় বাড়ি ভাঙলো
উত্তর কলকাতার আহিরিটোলা। কলকাতার খুবই পুরনো এলাকা। সেখানেই বুধবার সকালে ভেঙে পড়লো একটি দোতলা বাড়ির একাংশ। কয়েকদিন আগে প্রবল বৃষ্টিতে ভেসেছিল কলকাতা। একদিনে একশ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি বেহাল করে দিয়েছিল শহরকে। মঙ্গলবার রাত থেকে আবার বৃষ্টি শুরু। সারারাত বৃষ্টি হয়েছে। তারপরই আহিরিটোলার বাড়িটি ভেঙে পড়ে।
চাপা পড়া মানুষ
ধ্বংসস্তূপের ভিতর অনেকে চাপা পড়েছিলেন। বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রশিক্ষিত এনডিআরএফ কর্মীরা দ্রুত পৌঁছে যান তাদের উদ্ধার করতে। দমকল ও পুলিশ কর্মীরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। ওই বাড়িতে ছিল দুইটি পরিবার। এক পরিবারের কয়েকজন দেওয়ালে গর্ত করে বেরিয়ে আসেন। বাকিরা বেরোতে পারেননি।
ধ্বংসস্তূপ সরানো
বিপর্যয় মোকাবিলা দল ধ্বংসস্তূপ সরাতে শুরু করেন। ভেঙে পড়া বাড়ির অংশে চাপা পড়ে থাকা মানুষের সন্ধান শুরু হয়। তারপর তারাই উদ্ধার করেন একের পর এক চাপা পড়া মানুষকে। প্রথমে উদ্ধার করা হয় এক দম্পতিকে। মোট আটজনকে উদ্ধার করেন তারা।
দুই বছরের শিশু
উদ্ধার করা হয় একটি দুই বছরের শিশুকেও। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় শিশুটিকে খুব সাবধানে উদ্ধার করা হয়। তারপর তাকে ও অন্যদের দ্রুত হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হয়।
উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা
উদ্ধারকাজ চলছে, আর উদ্বিগ্ন হয়ে এলাকার মানুষ দেখছেন। তাদের একটাই প্রার্থনা, আটকে পড়া সকলে যেন বেঁচে থাকেন।
খারাপ অবস্থা
নয় নম্বর আহিরিটোলা স্ট্রিটের এই বাড়িটির অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। বৃষ্টিতে তার হাল আরো খারাপ হয় ও একাংশ ভেঙে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িটির বাকি অংশও বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। ভেঙে ফেলা হবে।
কলকাতার বিপজ্জনক বাড়ি
কলকাতা পুরসভার হিসাব হলো, উত্তর ও মধ্য কলকাতায় তিন হাজার ৭০০ বাড়ি বিপজ্জনক। অনেক বাড়িতে বিপজ্জনক বোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। উত্তর ও মধ্য কলকাতাই হলো কলকাতার সব চেয়ে পুরনো এলাকা। উত্তর কলকাতা ছিল পুরনো কলকাতার দেশি মানুষের বাসস্থান।
বাসিন্দারা নারাজ
বিপজ্জনক বাড়িগুলির বয়স একশ বছর বা তার অনেক বেশি। কিন্তু বাসিন্দারা এই বাড়ি ছাড়তে চান না। তারা অধিকাংশই ভাড়াটে। খুব সামান্য ভাড়ায় থাকেন। বাড়ি ছেড়ে একবার গেলে ওখানে ফেরত আসা যাবে না ভেবে তারা বিপজ্জনক বাড়িতেই থেকে যান।
ফিরহাদের ঘোষণা
রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার সাবেক মেয়র ফিরহাদ হাকিম ঘোষণা করেছিলেন, এই বাসিন্দাদের থাকার বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে। তারপর অবশ্য সেই কাজ খুব বেশি এগোয়নি। পুরনো কলকাতায় বিপজ্জনক বাড়িতে থাকছেন হাজার হাজার মানুষ।