1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যে শহর ইউরোপ মাতাচ্ছে

১২ জুলাই ২০১৯

‘ইউরোপিয়ান ক্যাপিটাল অফ কালচার' নামের উদ্যোগের আওতায় ইউরোপের কোনো একটি শহর এক বছর ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে৷ এবার বুলগেরিয়ার এক শহর সেই সুযোগ পাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3LxR4
Szene aus "Pulverfass" von Dejan Dukovski Regie Dimiter Gotscheff
ছবি: AFP/Getty Images

বুলগেরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর প্লভডিফ৷ থ্রেশিয়ান, রোমান, ওসমান সাম্রাজ্যের ইতিহাসের অনেক ছাপ সেখানে রয়ে গেছে৷ গত শতাব্দীর সমাজতন্ত্রী শাসনের অনেক চিহ্ন আজও সেখানে চোখে পড়ে৷ ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক রাজধানীর মর্যাদা পেয়ে শহরের মূলমন্ত্র স্থির করা হয়েছে ‘টুগেদার', অর্থাৎ একত্রে৷

শহরের এক আর্ট গ্যালারির পরিচালক ওয়েসেলিনা সারিয়েভা৷ তিনি আমাদের শহরটি ঘুরিয়ে দেখালেন৷ শহরের ইতিহাসের এক ঝলক তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘প্লভডিফ এমন এক শহরও বটে, যেখানে তুর্কি, ইহুদি, আর্মেনীয়, রোমাদের মতো অনেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মিলন ঘটে৷ বুলগেরীয়রা তো আছেনই৷''

তারা সবাই প্রায় দুই হাজার বছর পুরানো রোমান থিয়েটার সম্পর্কে গর্বিত৷ গোটা গ্রীষ্মকাল জুড়ে সেখানে অসংখ্য অনুষ্ঠান চলে৷ তবে শহরের প্রত্নতাত্ত্বিক মিউজিয়ামে ইতিহাসের আরও নিদর্শন দেখা যায়৷ থ্রেশিয়ানদের বিখ্যাত সম্পদ হিসেবে পরিচিত প্রায় ৬ কিলো সোনা দিয়ে তৈরি পানের পাত্র সেখানে শোভা পাচ্ছে৷

শহরের কেন্দ্রস্থলে ‘সিটি গ্যালারি' অবস্থিত৷ ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতির বছরে ওয়েসেলিনা সারিয়েভা ‘লিসন টু আস' নামের প্রদর্শনীর উদ্যোগে শামিল ছিলেন৷ দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপে বলকান অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলির সমসাময়িক শিল্পকলা সেখানে তুলে ধরা হচ্ছে৷ শিল্পকর্মগুলিতে নানা সামাজিক বিষয়, সমাজতান্ত্রিক অতীত, নারীদের পরিস্থিতির প্রতিফলন দেখা যায়৷

শহরের পুরানো অংশ সংস্কার করা হয়েছে৷ সরু গলিতে অতীতে মালপত্র বোঝাই খচ্চড় একে অপরের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পারতো৷ বেশিরভাগ বাড়িঘর ঊনবিংশ শতাব্দীতে তৈরি৷ যেমন একটি ভিলা শহরের পুরানো অংশে অন্যতম সুন্দর সংরক্ষিত ভবন হিসেবে পরিচিত৷ ওয়েসেলিনা সারিয়েভা বলেন, ‘‘প্লভডিফ শহরের এই নৃতাত্ত্বিক মিউজিয়াম ভবন বারোক রীতির নির্মাণশৈলির আদর্শ নিদর্শন৷ যে রাতে মানুষ বিনামূল্যে মিউজিয়াম ও গ্যালারিতে প্রবেশ করতে পারেন, সে সময়ে এখানেও দ্বার উন্মুক্ত থাকে৷''

একটু উঁচু জায়গায় পৌঁছলে উপর থেকে শহরের দারুণ দৃশ্য দেখা যায়৷ ৭টি টিলার উপর ছড়ানো প্লভডিফ ইউরোপের প্রাচীনতম শহরগুলির অন্যতম৷ ওয়েসেলিনা বলেন, ‘‘জায়গাটা খুব ভালো লাগে৷ বই নিয়ে এখানে চলে আসি৷ এখানকার অন্তর্নিহিত শক্তি সত্যি অসাধারণ৷ কারণ এই টিলার উপর খ্রীষ্টপূর্ব ৪,০০০ বছর আগে শহরের প্রথম বসতির চিহ্ন রয়েছে৷ আর এখন এখানে তরুণ প্রজন্মকে দেখতে পাচ্ছেন৷''

শহরের কেন্দ্রস্থলে আর্টনিউজ ক্যাফে সাংস্কৃতিক কর্মীদের মিলনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে৷ ওয়েসেলিনা সারিয়েভা ও তাঁর মা এই ক্যাফে ও সংলগ্ন গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা৷ ইতোমধ্যে বুলগেরিয়ার বাইরে থেকেও শিল্পবোদ্ধারা সেখানে এসে শিল্পসামগ্রী কেনেন৷

ওয়েসেলিনাকে বিদায় জানিয়ে এবার শহরের উত্তরে তরুণদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পাড়ায় যাবার পালা৷ আগে সেখানে যানজট লেগেই থাকতো৷ এখন চারিদিকে বাচ্চাদের স্ট্রলার দেখা যায়৷ সৃজনশীল মানুষের এই স্বর্গরাজ্য স্টার্ন-এর মতো স্ট্রিটআর্ট শিল্পীকেও আকর্ষণ করে৷ তিনি বুলগেরিয়ার অন্যতম পরিচিত স্প্রেয়ার৷ ভাগ্য ভালো থাকলে তাঁকে কাজ করতেও দেখা যায়৷

চলতি বছর প্লভডিফ শহরে কিছু বাড়তি আকর্ষণ থাকছে৷ কোনো একটি বড় ইভেন্ট নয়, বরং অনেকগুলি ছোট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শহরের এই বিশেষ মর্যাদার মূলমন্ত্র তুলে ধরা হচ্ছে৷ ‘টুগেদার' বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাচ্ছে৷

আন্দ্রেয়া কাসিস্কে/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য