বিশ লাখ বছরের পুরনো কঙ্কাল থেকে বিবর্তন ধারার সন্ধান
৯ এপ্রিল ২০১০এই জীবাশ্মগুলো সাম্প্রতিক সময়ে চিহ্নিত করা অস্ট্রালোপিথেকাসের বৈশিষ্ট্যসমূহকে আরো জোরালো করে এবং অনেক আগে থেকে পরিচিত মানুষের হোমো প্রজাতির সাথেও কিছুটা সঙ্গতি নির্দেশ করে৷ গবেষণা ধর্মী সাময়িকী ‘সায়েন্স'-এ প্রকাশ করা হয়েছে মানব-পূর্ব কালের এই জীবাশ্মগুলো থেকে প্রাপ্ত বিস্তারিত তথ্য৷ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মানব বিবর্তনের ধারণায় একটি নতুন আলো ফেলতে পারে প্রায় ২০ লাখ বছর আগের এই কঙ্কালগুলো৷ ফলে কোথা থেকে মানুষের উৎপত্তি - এই প্রশ্নের উত্তরও হতে পারে আরো সহজতর৷
জোহানেসবার্গের উইটওয়াটার্সরান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লি বার্গারের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে উদ্ধার করেছিলেন এই কঙ্কাল দু'টি৷ জোহানেসবার্গ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের বিশ্ব ঐতিহ্যময় স্থান মালাপা গুহায় পাওয়া গিয়েছিল এসব কঙ্কাল৷ বানরের মতো এদের রয়েছে দীর্ঘ বাহু, কিন্তু ছোট এবং শক্তিশালী হাত৷ আবার মানুষের মতো দৌড়ানোর জন্য রয়েছে দীর্ঘ পা, বলে জানান গবেষক দলের সদস্যরা৷ এই প্রজাতির সদস্যরা প্রায় ১ মিটার ২৭ সেন্টিমিটার লম্বা ছিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা৷ এছাড়া কমবয়সি তরুণটির মস্তিষ্কের আকার ৪২০ থেকে ৪৫০ ঘন সেন্টিমিটার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
বার্গার এই আবিষ্কারকে ‘অভাবনীয়' বলে উল্লেখ করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের গবেষণার ঠিক দ্বারপ্রান্তে আমরা যে ব্যতিক্রমধর্মী অবস্থা দেখেছি তাতে আমি অত্যন্ত অভিভূত৷'' ‘‘আমার পেশাগত জীবনের গোটা সময়ে যা কিছু আবিষ্কার করেছি, তার চেয়েও বেশি মানব-পূর্ব সময়ের জীবাশ্ম রয়েছে বলে আমি এখন মনে করি,'' বলেন বার্গার৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা যখন এগুলো পেয়েছিলাম তখন আমরা কল্পনাও করতে পারিনি যে, আমরা একটি নতুন প্রজাতির সন্ধান লাভ করতে যাচ্ছি৷'' বার্গারের বিশ্বাস, একই স্থান থেকে প্রায় একই ধরণের আরো দু'টি কঙ্কাল পাওয়া যাবে৷
তিনি এই নতুন প্রজাতিকে মানব বিবর্তনের ইতিহাসের ধারায় একটি ‘অজানা সংযোগ' বলে মনে করেন৷ তবে হোমো প্রজাতির আগের ধাপটি কী ছিল সেবিষয়ে চলমান বর্তমান গবেষণার সফলতায় এটি সহায়ক হবে বলে উল্লেখ করেন বার্গার৷ অনেক বিজ্ঞানীই বিশ্বাস করেন যে, প্রায় ২০ লাখ বছর আগে অস্ট্রালোপিথেকাস থেকে বিবর্তনের মাধ্যমেই হোমো প্রজাতির সৃষ্টি৷ তবে ইথিওপিয়ায় উদ্ধার হওয়া মানব-পূর্ব সময়ের ‘লুসি' প্রজাতির চেয়ে এরা ১০ লাখ বছরের পরের প্রজন্ম বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী