বিল ও মেলিন্ডা গেটসের সম্পদ ও দাতব্য কাজ
৩ মে রাত সাড়ে ১০টায় যে যার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একই বার্তা পোস্ট করে ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবন শেষ করার কথা জানান মেলিন্ডা গেটস ও বিল গেটস৷ ছবিঘরে থাকছে তাদের সম্পদ ও দাতব্য কাজের বিস্তারিত৷
চতুর্থ ধনী
ফোর্বসের হিসেবে বিল গেটসের সম্পদের পরিমাণ বর্তমানে ১৩০.৫ বিলিয়ন ডলার৷ সে হিসেবে তিনি বিশ্বের চতুর্থ সম্পদশালী ব্যক্তি৷
শুরুর কথা
১৯৫৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিল গেটস জন্মগ্রহণ করেন৷ ছোটবেলা কেটেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে৷ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার দুই বছর পর লেখাপড়া ছেড়ে গিয়ে স্কুলের বন্ধু পল অ্যালেনের (ডানে) সঙ্গে মিলে ১৯৭৫ সালে মাইক্রোসফট গড়ে তুলেছিলেন বিল গেটস৷
মেলিন্ডার সঙ্গে দেখা
১৯৬৪ সালের ১৫ আগস্ট ডালাসে জন্মগ্রহণ করেন মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ৷ ১৯৮৭ সালে মাইক্রোসফটে যোগ দেয়ার পর বিলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়৷ ১৯৯৪ সালে তারা বিয়ে করেন৷ এরপর থেকে মেলিন্ডা গেটস নাম ব্যবহার করছিলেন মেলিন্ডা৷ তবে সম্প্রতি বেশিরভাগ ওয়েবসাইট ও সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস নামে পরিচয় দেয়া শুরু করেছেন৷
দাতব্য কাজ
২০০০ সালে এই দম্পতি বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন গড়ে তোলেন৷ বিশ্বের অন্যতম বড় দাতব্য প্রতিষ্ঠান এটি৷ গত দুই দশকে প্রায় ৫৪ বিলিয়ন ডলার দান করেছে এই ফাউন্ডেশন৷ ম্যালেরিয়াসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, কৃষিখাতে গবেষণা, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ও পয়নিষ্কাশনসহ বিভিন্ন খাতে কাজ করা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংস্থাকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এই ফাউন্ডেশন৷
মাইক্রোসফট ত্যাগ
দাতব্যকাজে বেশি করে মনোযোগ দিতে ২০০০ সালে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান বিল গেটস৷ তবে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কোম্পানির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি৷ এরপর ২০২০ সালের মার্চে কোম্পানির বোর্ড থেকেও পদত্যাগ করেন বিল গেটস৷
বাংলাদেশ সফর
২০০৫ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন বিল ও মেলিন্ডা গেটস৷ সে সময় তিনি ব্র্যাক ও আইসিডিডিআরবির বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে দেখেন৷ এছাড়া পাইরেসি বন্ধে বাংলাদেশকে কমমূল্যের সফটওয়্যার দেয়া ও তথ্যপ্রযুক্তিখাতে মানবসম্পদ উন্নয়নে সহায়তা করার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন৷ একটি নারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ সহায়তা দেয়ারও আশ্বাস দিয়েছিলেন৷
বিচ্ছেদের পর ফাউন্ডেশনের কী হবে?
গেটস ফাউন্ডেশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিচ্ছেদ হলেও বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কাজ একসঙ্গে চালিয়ে যাবেন৷
বিচ্ছেদের আর্থিক মূল্য
ওয়াশিংটন রাজ্যের কিং কাউন্টি সুপিরিয়র কোর্টে দাখিল করা বিচ্ছেদ চুক্তিতে তারা দুজন তাদের যে যৌথ সম্পদ আছে তা ভাগ করে নিতে চেয়েছেন৷ ওয়াশিংটন রাজ্যে বাস করা কোনো দম্পতি তাদের বৈবাহিক জীবনে যে সম্পদ গড়ে তোলে তার বেশিরভাগ যৌথভাবে তাদের দুজনের সম্পত্তি হয়ে থাকে, এবং বিচ্ছেদ হলে তা দুজনের মধ্যে সমান ভাগ করে দেয়া হয়৷
টানাপোড়েন
২০১৯ সালে মেলিন্ডা গেটসের প্রকাশিত বই ‘দ্য মোমেন্ট অফ লিফট’-এ মেলিন্ডা ২০১৩ সালের একটি ঘটনার উল্লেখ করেন৷ সেই সময় ফাউন্ডেশনের অ্যানুয়াল লেটারটি দুজনে মিলে লেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন মেলিন্ডা৷ তিনি বলেন, এই বিষয়ে আলোচনা এত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যে এক পর্যায়ে তাদের মনে হয়েছিল বিয়ে ভেঙে যেতে পারে৷ অবশেষে ২০১৩ সালের লেখার একটি অংশ লিখেছিলেন মেলিন্ডা৷ ২০১৫ সাল থেকে যৌথ লেখক ছিলেন বিল ও মেলিন্ডা৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, বিডিনিউজ)