1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদ্রোহের বিরুদ্ধে যাবে না মিশরের সেনাবাহিনী

১ ফেব্রুয়ারি ২০১১

মিশরের আন্দোলনের আরেক বড়দিন আজ৷ লক্ষ লক্ষ মানুষকে পথে নামার ডাক দিয়েছে এই গণজাগরণ৷ কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়া, সুয়েজের পথে আজ দেখা যাবে বিশালতর মিছিল৷ সেনাবাহিনীর প্রতিশ্রুতি, তারা এই বিপ্লবের বিরোধিতা করবে না৷

https://p.dw.com/p/1088o
এরপর আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে কী?ছবি: AP

মানুষের নৈতিক অধিকারকে লঙ্ঘন করবে না সেনাবাহিনী

দীর্ঘ তিন দশক ধরে মিশরের প্রেসিডেন্ট পদে থাকা হোসনি মুবারকের পদত্যাগের দাবিতে আজ সবচেয়ে বড় আকারের মিছিল বের হবে কায়রো থেকে আলেকজান্দ্রিয়া সর্বত্র৷ বিক্ষোভের আয়োজকরা সারারাত কায়রোর তাহরির স্কোয়্যারে বসে আছেন৷ চলছে গানবাজনা, মুবারক বিরোধী স্বতঃস্ফূর্ত স্লোগান৷ চলছে হাতে হাতে লিফলেট বিলি৷ যাতে লেখা আছে, দেশের সেনাবাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আহ্বান৷ লেখা আছে, ‘এসো, তোমরাও সামিল হও এই বিপ্লবে৷ ভাইয়ের রক্তে হাত রাঙিও না তোমার৷' এই আহ্বানে সাড়াও দিয়েছে সেনাবাহিনী৷ তাদের জবাব, যে স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব প্রত্যক্ষ করছে তাদের দেশ, তার টুঁটি টিপে মারতে তারা রাজি নয়৷ মানুষের নৈতিক অধিকারকে সম্মান করতে চায় সেনারা৷ তাই এই বিপ্লবকে কামানের মুখে উড়িয়ে দিতে তারা আগুয়ান হবে না৷

মুবারক বিলিয়ে চলেছেন প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি

মুবারক নিজে করেন নি তবে বাস্তবে নবনিযুক্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট সুলাইমানকে দিয়ে বলিয়েছেন কী কী দিতে তৈরি তাঁর সরকার৷ বলা হয়েছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই মিশরের বেকার সমস্যা, দুর্নীতি, দারিদ্র ইত্যাদি দূর করতে নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করা হবে৷ চাঙ্গা করা হবে অর্থনীতিকে যাতে আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সমতা খুঁজে পায় মানুষ৷ কমবে দ্রব্যমূল্য৷ এমনকি গত নভেম্বরের নির্বাচনে যেসব জায়গায় মুবারকের দল ৮৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, সেসব জায়গায় পুনর্নির্বাচনও হবে৷ কিন্তু, এসব কথায় কান দিচ্ছে না মিশরের উত্তাল গণজাগরণ৷ তাহরির স্কোয়্যারে কারফিউ-র মধ্যেও জমায়েত থাকা হাজার হাজার মানুষ একযোগে মুবারক সরকারের এইসব প্রতিশ্রুতিকে ‘ছেঁদো কথা' বলে উড়িয়ে দিয়েছে৷ তাদের বক্তব্য, ‘ভীরু কাপুরুষ' এই সরকারের পতন না ঘটিয়ে এই জমায়েত থেকে কেউ নড়বে না৷

NO FLASH Proteste in Ägypten gegen Mubarak Regime gehen weiter Tahrir Square Platz
গণজাগরণ প্রত্যক্ষ করছে সুপ্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরছবি: picture-alliance/dpa

আন্তর্জাতিক মহলের চাপও ক্রমশ বাড়ছে

যাকে বলে ক্রমবর্দ্ধমান৷ মুবারকের দীর্ঘদিনের ‘বন্ধু' দেশ অ্যামেরিকা বেশ বেঁকে বসেছে৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রক বিশেষ দূত নিয়োগ করেছে কায়রোয়৷ মিশরে অতীতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পদে কাজ করে যাওয়া ফ্রাঙ্ক ওয়াইজনার নামের সেই প্রভাবশালী ব্যক্তি চেষ্টা করছেন রাজনৈতিক পরিবর্তন মেনে নেওয়ার জন্য মিশরের নেতাদের, বিশেষ করে মুবারককে বোঝাতে৷ ইসরায়েল কিন্তু এখনও মুবারকের সঙ্গ ছাড়েনি৷ তাদের আশঙ্কা, মিশরে মুবারকের পতন হলে ইরানের মত কোন ইসলামিক শাসনতন্ত্র সেদেশে কায়েম হবে৷ যা কিনা ইহুদি রাষ্ট্রের জন্য সুখকর না হতেও পারে৷ এদিকে মিশরের পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়ছে৷ কমছে শেয়ারবাজারের সূচক৷ তাই আন্তর্জাতিক মহল চায়, অস্থিরতার অবসান হোক যত দ্রুত সম্ভব৷ আর তার জন্য যদি মুবারককে গদি ছাড়তে হয়, তো তাই সই৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা : সাগর সরওয়ার