1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদায়ের এক মাস আগেও চুক্তি অধরা

১ ডিসেম্বর ২০২০

আর মাত্র এক মাস পর ব্রিটেন পাকাপাকিভাবে ইইউ ত্যাগ করলেও ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে বোঝাপড়ার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না৷ দুই পক্ষই যে কোনো মূল্যে চুক্তি স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত নয়৷

https://p.dw.com/p/3m3Bh
ডেভিড ফ্রস্ট ও মিশেল বার্নিয়ে
ব্রিটেনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী ডেভিড ফ্রস্ট (বামে) ও ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়েছবি: Reuters/O. Hoslet

চলতি বছরের ৩১শে জানুয়ারি ব্রিটেন আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করলেও অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্কে প্রায় কোনো রদবদল ঘটে নি৷ কিন্তু আর মাত্র এক মাস পর সেই সম্পর্ক পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে৷ বিগত কয়েক মাস ধরে আলোচনা চালিয়েও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কে বোঝাপড়া সম্ভব হয় নি৷ একেবারে শেষ প্রহরে সেই লক্ষ্য পূরণ হবে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়৷ লন্ডনে মুখোমুখি আলোচনায় এখনো মতবিরোধ কাটানো সম্ভব হয় নি৷ আরও দুই-তিন দিনের মধ্যে সেই অসাধ্যসাধন হবে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়৷ এমন প্রেক্ষাপটে সোমবার দুই পক্ষ পরস্পরকে সময়ের অভাব সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে৷ ইইউ ও ব্রিটেনের একাধিক নেতা বোঝাপড়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিলেও ‘যে কোনো মূল্যে’ বাণিজ্য চুক্তির বিরোধিতা করছেন৷

ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে ও ব্রিটেনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী ডেভিড ফ্রস্ট এখনো বোঝাপড়ার সম্ভাবনা নিয়ে স্পষ্ট কোনো পূর্বাভাষ দিচ্ছেন না৷ বার্নিয়ে বলেন, আলোচনায় সংকল্পের কোনো ঘাটতি নেই৷ অন্যান্য প্রশ্নে কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও ব্রিটিশ জলসীমায় মাছ ধরার অধিকারকে কেন্দ্র করে আপোশের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন এখনো চুক্তির আশা ছাড়তে প্রস্তুত নন৷

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সোমবার বলেন, ইইউ ও ব্রিটেন ভবিষ্যৎ সম্পর্ক স্থির করতে বোঝাপড়ায় ব্যর্থ হলে সেটা হবে অত্যন্ত খারাপ এক দৃষ্টান্ত৷ বর্তমান ইইউ সভাপতি দেশের সরকার প্রধান হিসেবে তিনি অবশ্য বলেন, শেষ পর্যন্ত চুক্তি সম্ভব না হলেও ইইউ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত৷

বোঝাপড়ার আশা যত ক্ষীণ হচ্ছে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের প্রস্তুতিও তত গতি পাচ্ছে৷ ব্রিটেনের সরকার দেশের ব্যবসাবাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলিকে সেই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার ডাক দিয়েছে৷ সীমান্তে শুল্ক ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রণের চাপ সামলাতে সরকার এর মধ্যেই কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে৷ তবে ব্রিটেনের অনেক প্রতিষ্ঠান আসন্ন জটিল প্রক্রিয়া সামলাতে প্রস্তুত নয় বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রস্তুতি সম্পর্কেও সংশয় প্রকাশ করেছে৷ তাদের মতে, আসন্ন চ্যালেঞ্জের মাত্রা সম্পর্কে সরকারের কোনো বাস্তব ধারণা নেই৷ তাছাড়া ইইউ-র সঙ্গে সম্পর্কের রূপরেখা অত্যন্ত অস্পষ্ট থাকায় প্রস্তুতি সম্ভব হচ্ছে না৷ সরকার শুধু ‘স্বল্পমেয়াদী বিঘ্ন’ সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছে৷ ব্রিটিশ মন্ত্রী মাইকেল গোভ দাবি করছেন, যে ২০২৫ সালের মধ্যে বর্ডার অপারেশন সেন্টার বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর সীমানা হিসেবে গড়ে তোলা হবে৷

এদিকে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের জের ধরে ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের ঐক্য নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠছে৷ স্কটল্যান্ডের শীর্ষ মন্ত্রী নিকোলা স্টার্জেন আগামী মে মাসের নির্বাচনে আবার জয়ী হলে স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের অঙ্গীকার করেছেন৷ ২০১৪ সালে প্রথম গণভোটে মানুষ স্বাধীনতার বিপক্ষে রায় দিলেও বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের কারণে বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ব্রিটেন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে প্রস্তুত৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)