1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনাদের জন্য...

মাটিয়াস ফন হাইন/আরবি৩ মার্চ ২০১৪

আইনি অনিশ্চয়তা, তীব্র পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি কারণে চীনের অতিবিত্তবানরা বিদেশে চলে যেতে চান৷ কিছু দেশ বিত্তশালী ‘ক্লায়েন্ট’-দের থাকার অনুমতি দিতেও প্রস্তুত৷ এর পরিবর্তে ‘আশ্রয় পাওয়া’ দেশটিতে অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় তাঁদের৷

https://p.dw.com/p/1BHw5
অবকাশে দুই বিত্তশালী চীনা তরুণীছবি: picture-alliance/dpa

‘চীনা সমাজতন্ত্রে' বিশাল সম্পদের অধিকারী হওয়া কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়৷ বৈধ বা অবৈধ পথে, যে ভাবেই হোক না কেন৷ অনুমান করা হয় এক মিলিয়নেরও বেশি চীনা ‘ডলার-মিলিয়ন' বা মিলিয়ন ডলারের মালিক৷ সম্পদের দিক দিয়ে বিশ্বব্যাপী তৃতীয় স্থানে রয়েছেন চীনেরা৷

জরিপ চালানো হয়

৪০০ চীনা মিলিওনিয়ারকে নিয়ে এক জরিপ চালানো হয় সম্প্রতি৷ তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ৬৫ শতাংশ দেশ ছাড়তে আগ্রহী৷ তৃতীয় কোনো দেশে বসবাসের অনুমতি জোগাড় করতে চান তাঁরা৷ অনেকে পরিবার-পরিজনকে আগেই পাঠিয়ে দিতে চান অন্য কোনো দেশে৷ জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩০ শতাংশের অন্য দেশের আবাসিক পারমিট রয়েছে৷

Euro Münze Stäbchen
৫০০,০০০ ইউরোর সম্পত্তি কিনলে পর্তুগালে বসবাস করার স্থায়ী অনুমতি দেওয়া হয়ছবি: picture alliance / dpa

প্রশ্ন জাগতে পারে, মিলিওনিয়াররা কেন স্বদেশ ত্যাগ করতে চান? বার্লিনের ‘মের্কার্টোর ইন্সটিটিউট অফ চায়না স্টাডিস'-এর ক্রিস্টিন কুপ্ফার মনে করেন, এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে: প্রথমত নিরাপত্তার অভাব, দ্বিতীয়ত সন্তানদের অন্য দেশের শিক্ষার পরিবেশ সম্পৃক্ত করার আকাঙ্খা৷ তৃতীয়ত, চীনের চরম দূষিত আবহাওয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার চেষ্টা৷

বিভিন্ন দেশে কর্মসূচি নেয়া হয়
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ‘বিত্তশালী শরণার্থী'-দের ব্যাপারে প্রস্তুতি নিয়েছে৷ গ্রহণ করেছে বিশেষ কর্মসূচি৷ অর্থ বিনিয়োগের পরিবর্তে দেওয়া হবে আবাসিক পারমিট৷ অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অসংখ্য দেশ এক্ষেত্রে যেন রীতিমত প্রতিযোগিতায় নেমেছে৷

অর্থনৈতিক সংকটে পড়া দেশ পর্তুগাল ২০১২ সালে ‘গোল্ডেন ভিসা' প্রোগ্রাম চালু করে৷ কমপক্ষে ৫০০,০০০ ইউরোর সম্পত্তি কিনলে পর্তুগালে বসবাস করার স্থায়ী অনুমতি দেওয়া হয়৷ গত বছর আবেদনকারীদের ৯০ শতাংশ ছিলেন বিত্তশালী চীনা ও হংকং-এর মানুষ৷ প্রতিবেশী স্পেনও প্রায় একই ধরণের কর্মসূচি চালু করেছে৷

অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়া গ্রিস ও সাইপ্রাস কমপক্ষে ২৫০,০০০ ইউরো মূল্যের সম্পদ কিনলে আবাসিক পারমিট দিয়ে থাকে৷ ধনী দেশ নেদারল্যান্ডসও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই৷ স্থানীয় অর্থনীতিতে ১.২৫ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের বিনিময়ে পাওয়া যায় দেশটিতে থাকার অনুমতি৷

Huang Guangyu reichster Mann Chinas
চীনের এক বিত্তশালীছবি: AP

আইনের পাশ কাটানো

চীনের আইনে বছরে ৫০,০০০ ডলারের বেশি দেশের বাইরে পাচার করা নিষেধ৷ কিন্তু আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে অর্থ পাচার করা হয়৷ চীনা বিশেষজ্ঞ কুপ্ফার জানান, ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশগুলিতে রয়েছে চীনা মালিকাধীন ২১,০০০ লেটার বক্স কোম্পানি৷ যেখানে কর ফাঁকি দিয়ে টাকা পাচার করা চলে৷ প্রচুর অর্থ হংকং-এর মাধ্যমেও পাচার করা হয়৷ ‘‘শহরটি বিদেশে অর্থ পাঠাবার সেতু হিসাবে কাজ করে থাকে'', বলেন কুপ্ফার৷

সমালোচনার চোখে দেখা হয়

চীনেও অতি বিত্তবানদের এই বিদেশমুখী প্রবণতাকে সমালোচনার চোখে দেখা হয়৷ ক্রমবর্ধমান দুর্নীতির কারণেই এমনটি হয়ে থাকে বলে করেন বিশেষজ্ঞরা৷ বেজিং-এর পিপলস ইউনিভার্সিটির প্রফেসর জাও শিয়াওজেং বলেন, ‘‘চীনের সংস্কারবাদী নেতা ডেং জিয়াওপিং বলেছেন জনগণের এক অংশ সম্পদশালী হতে পারে৷ তবে তাঁদের এই সম্পদ অর্জন করতে হবে সৎপথে৷ কিন্তু অতিবিত্তশালীদের অনেকেই স্বজনপ্রীতি, রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ, ফটকাবাজির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় করেছেন৷ এখন তাঁরা তাঁদের অর্থ বিদেশে নিরাপদে রাখতে চান৷''

অবশ্য বৈধ পথে অর্থ উপার্জন করেও নিরাপত্তার অভাবে দেশ ছাড়েন অনেকে৷