1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি জগতেও অবহেলিত নারীদের সাফল্য

২ এপ্রিল ২০১৯

যুগে যুগে নারীদের অবদান সম্পর্কে কোনো সংশয় না থাকলেও তাঁদের অনেকেই প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা পাননি৷ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জগতেও এমন দৃষ্টান্তের অভাব নেই৷

https://p.dw.com/p/3G40Q
Caroline Herschel Astronomin
ছবি: picture alliance/Mary Evans Picture Library

ইতিহাসে প্রথম নারী চিকিৎসকের উল্লেখ পাওয়া যায় প্রাচীন মিশরে৷ তাঁর নাম ছিল পেসেশেট৷ খ্রিষ্টপূর্ব ২,৬০০ সালে তিনি চিকিৎসাবিদ্যা চর্চার পাশাপাশি একশ'রও বেশি ধাত্রীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন৷

খ্রিষ্টপূর্ব ১,২০০ সালের ব্যাবিলনীয় সভ্যতার সময়কার এক ফলক অনুযায়ী তাপুতি-বেলাতেকালিম বিশ্বের প্রথম রসায়নবিদ ছিলেন৷ সুগন্ধী সৃষ্টির পাশাপাশি তিনি তরল পদার্থ ‘ডিস্টিল' বা শোধনের এক যন্ত্র সৃষ্টি করেছিলেন৷ তাঁর সেই উদ্ভাবনের আধুনিক সংস্করণ আজও ব্যবহার করা হয়

৪০০ খ্রিষ্টাব্দে আলেক্সান্ড্রিয়া শহরের হাইপেশিয়া ছিলেন এক গণিতজ্ঞ৷ প্রথম নারী হিসেবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনশাস্ত্র ও জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ে অধ্যাপনা করেছেন৷ খ্রিষ্টান মৌলবাদী জনতার প্রহারে তাঁর মৃত্যু হয়৷ ইতিহাসের বইয়ে সেই হত্যাকাণ্ড নথিভুক্ত রয়েছে বটে, কিন্তু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁর সাফল্য তাতে স্থান পায় নি৷

অনেক শতাব্দী ধরে নারীরা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছেন৷ ১৭৮৬ সালে কারোলিন হ্যার্শেল প্রথম নারী হিসেবে একটি ধূমকেতু আবিষ্কার করেন৷ তিনি জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন৷ অথচ নারী বিজ্ঞানীরা আজও তাঁদের প্রাপ্য স্বীকৃতি পাচ্ছেন না৷

এমন বঞ্চনার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেন ব্রিটেনের গণিতজ্ঞ অ্যাডা লাভলেস৷ কম্পিউটার সায়েন্সের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেও তিনি জীবদ্দশায় যথেষ্ট সমাদর পান নি৷ ১৮৪৩ সালে তিনি ‘অ্যানালিটিকাল ইঞ্জিন'-এর জন্য প্রথম অ্যালগোরিদম সৃষ্টি করেন, যা আজকের ডিজিটাল কম্পিউটারের তাত্ত্বিক প্রোটোটাইপ হিসেবে পরিচিত৷ তাঁকে বিশ্বের প্রথম প্রোগ্রামার বলা হয়৷

তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে যুগান্তকারী কাজ করে মারি ক্যুরি অবশ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন৷ পোল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা এই বিজ্ঞানী প্রথমে পদার্থবিদ্যায় যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান৷ পরে রসায়নের ক্ষেত্রেও নোবেল জয় করেন তিনি৷

নিউক্লিয়ার ফিসন আবিষ্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সত্ত্বেও অস্ট্রিয়ার পদার্থবিজ্ঞানী লিসে মাইটনার নোবেল পুরস্কার পাননি৷

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা প্রথম নারী বিজ্ঞানীদের কথা

ব্রিটেনের রসায়নবিদ রোসালিন্ড ফ্রাংকলিন ডিএনএ অণুর প্রথম এক্সরে ছবি সৃষ্টি করেছিলেন, যা তার কাঠামো শনাক্ত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷ তিনিও বঞ্চনার শিকার হয়েছেন৷

১১৮ বছর আগে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হবার পর থেকে মাত্র ৩ শতাংশ নারী বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এই পুরস্কার করেছেন৷ তার মধ্যে একমাত্র নারী ছিলেন ক্রিস্টিনে ন্যুসলাইন-ফোলহার্ড৷ ফ্রুট ফ্লাই প্রজাতির জিনগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা করে তিনি চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে নোবেল পান৷

অতি সম্প্রতি, অর্থাৎ ২০১৮ সালে পাল্সড লেজার নিয়ে পথিকৃতের কাজ করে ক্যানাডার ডনা স্ট্রিকল্যান্ড পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পান৷ ৫৫ বছর পর এই প্রথম কোনো নারী এই পুরস্কার পেলেন৷

প্রতিবেদন: আন্দ্রেয়াস নয়হাউস/এসবি