বাবার বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ পপ তারকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের
মনোরোগ-সংক্রান্ত জটিলতায় ২০০৮ সালে আদালতের নির্দেশে পপ তারকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের বাবা জেমস স্পিয়ার্সকে দেয়া হয় তাকে দেখাশোনার দায়িত্ব৷ বাবার বিরুদ্ধে অভিভাবকত্বের ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনলেন ব্রিটনি৷
কেমন এই অভিভাবকত্ব?
২০০৮ সালে আদালত একটি কমিটি গঠন করে দেয় ব্রিটনি স্পিয়ার্সের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সম্পদের দেখাশোনা করার জন্য ব্রিটনির বাবা জেমস ছাড়াও এই কমিটিতে আছেন লস অ্যাঞ্জেলেসের এক অ্যাটর্নি অ্যান্ড্রু ওয়ালেট৷ জেমস তার মেয়ের ব্যক্তিগত জীবনের দেখাশোনা করেন, অ্যান্ড্রু রয়েছেন সম্পত্তির দেখভালের দায়িত্বে৷
কেন এই অভিভাবকত্ব?
ক্যালিফোর্নিয়ার আইন অনুসারে কেউ তার ‘নিজের স্বাস্থ্য, খাবার, ভরণপোষন বা বসবাসের ব্যব্সথা না করতে পারলে’ বা কেউ ‘নিজের খরচ মেটাতে না পারলে বা প্রতারণা ও মাদকদ্রব্য থেকে নিজেকে দূরে রাখতে না পারলে’ তাকে উপযুক্ত অভিভাবকের অধীনে রাখার নির্দেশ দিতে পারে আদালত৷
বাবার ক্ষমতা কেমন?
২০১৯ সালে অ্যান্ড্রু অভিভাবকত্বের দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন৷ অ্যান্ড্রু চলে যাওয়ার পর ব্রিটনির বাবাই একক অভিভাবকের দায়িত্ব নেন৷ কেবল ব্রিটনির ব্যবসা দেখাশোনা নয়, ব্রিটনির পক্ষে সম্পত্তি বেচা-কেনা এমনকি কারা তার সঙ্গে দেখা করতে পারবে সেটিও নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ছিল জেমসের হাতে৷
ভক্তদের সন্দেহের তীর
বেশ কয়েক বছর ধরে ব্রিটনির ভক্তরা সন্দেহ করে আসছেন যে তাদের প্রিয় তারকার সঙ্গে কোনো এক ধরনের অন্যায় করা হচ্ছে৷ অভিভাবকত্বে থাকা অবস্থায় বেশ কয়েকটি অ্যালবাম প্রকাশ এবং মঞ্চেও পারফরম করেছেন ব্রিটনি৷ সেগুলো থেকে কয়েকশ মিলিয়ন ডলার আয়ও হয়েছে৷ ফ্যানদের প্রশ্ন, মঞ্চে পারফর্ম করে যে তারকা মিলিয়ন ডলার আয় করতে পারেন, তাকে কিভাবে নিজের দেখভাল করতে পারেন না বলে অন্যের দায়িত্বে রাখা হয়?
ফ্রি ব্রিটনি আন্দোলন
বাবা জেমস একক অভিভাবকত্ব পাওয়ার পরই ২০১৯ সালে একটি মানসিক রোগের হাসপাতালে ভর্তি হন ব্রিটনি৷ এরপর থেকেই মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে #FreeBritney আন্দোলন শুরু করেন তার ভক্তরা৷ ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে এই হ্যাশট্যাগ ব্যাপক ট্রেন্ডিং হয়ে ছড়িয়ে পড়ে৷ কেবল ভক্ত নন, পপ তারকা মাইলি সাইরাস, জাস্টিন টিম্বারলেকসহ জনপ্রিয় অনেক তারকাই ব্রিটনির মুক্তির দাবি তুলেছেন৷
আদালতে আটকে ব্রিটনি
২০২০ সালের আগস্টে ব্রিটনির বাবা ফ্রি ব্রিটনি আন্দোলনকে ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ এবং ‘কৌতুক’ বলে উড়িয়ে দেন৷ কিন্তু সে বছরই নভেম্বরে আদালতে এক শুনানিতে ব্রিটনির আইনজীবী স্যামুয়েল ইংগাম বিচারককে জানান, ব্রিটনি তার বাবাকে ভয় পান এবং তাকে অভিভাবক হিসেবে চান না৷ এমনকি বাবা জেমস তার অভিভাবক হিসেবে থাকলে ব্রিটনি আর পারফর্ম করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেও জানান তার আইনজীবী৷
প্রকাশ্যে ব্রিটনির অভিযোগ
এবার ব্রিটনি নিজেই আদালতে প্রকাশ্য শুনানিতে বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন৷ ২৩ জুন শুনানিতে ব্রিটনি তার বাবার বিরুদ্ধে ভয়াবহ কিছু অভিযোগ আনেন৷ তিনি বলেন, তার বাবা তাকে তার বন্ধুকে বিয়ে, এমনকি সন্তান ধারণেও বাধা দিচ্ছেন৷ জোর করে তাকে জন্মনিয়ন্ত্রক দ্রব্য ব্যবহারেও বাধ্য করা হচ্ছে৷ টাকার জন্য তাকে ব্যবহার করা এবং না চাইলেও জোর করে পারফর্ম করতে বাধ্য করার অভিযোগও বাবার বিরুদ্ধে করেছেন ব্রিটনি৷