বাজেটে কোন পণ্যের দাম বাড়ছে, কোন পণ্যের কমছে

স্বাস্থ্যঝুঁকি ও ব্যবহার হ্রাস করার বিষয়টি বিবেচনায় এনার্জি ড্রিংকের ওপর ২৫ শতাংশের সম্পুরক শুল্কের পরিবর্তে ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্কারোপের প্রস্তাব করা হয়েছে ৷ ফলে এর দাম বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে৷ 

প্রসাধনী সামগ্রী, বিশেষ করে সানস্ক্রিন, হাতের নখ বা পায়ের প্রসাধনী সামগ্রীর উপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কারোপ হচ্ছে৷ এছাড়া শেভ করায় ব্যবহার্য সামগ্রী, শরীরের দুর্গন্ধ এবং ঘাম দূর করার সামগ্রী এবং অন্যান্য গোসলের সামগ্রী,  ঘরের দুর্গন্ধ দূরীকরণে ব্যবহার্য অন্যান্য সুগন্ধি সামগ্রী, ও সমজাতীয় পণ্যের ব্যবহার সীমিত করতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশের প্রস্তাব হয়েছে৷  

মোবাইল ও ব্যাটারি-চার্জার আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, ফলে দাম বাড়বে৷ পাশাপাশি ২০০০ ভোল্ট পর্যন্ত ইউপিএস ও আইপিএস আমদানিতে শুল্ক বাড়ছে৷ তাই বিদেশি এসব পণ্যেরও দাম বাড়বে৷ ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার আমদানিতে শুল্ক বাড়ছে৷ ল্যাম্প হোল্ডারের দামও বাড়বে৷ 

প্রতিবারের মতো এবারের বাজেটেও তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত রয়েছে৷ ফিল্টারযুক্ত বিড়ি, জর্দা, গুল, সিগারেটের পেপার ও বিড়ি পেপার আমদানির উপর শুল্ক ২০ শতাংশের পরিবর্তে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে৷

ব্যবহার কমানোর জন্য পলিথিন ব্যাগ ও প্লাস্টিক ব্যাগ ও মোড়কের উপর ৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হয়েছে, যা প্যাকেজিং খরচ বাড়াবে এবং অপব্যবহার নিরুৎসাহিত করবে৷ পাশাপাশি পাটের ব্যবহার বাড়াবে৷  

 গম, আলু, কাসাভা ও অন্যান্য স্টার্চ, প্রাকৃতিক মধু, আমদানিকৃত নারকেল, বাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট, বিভিন্ন ধরনের কফি, গ্রিন টি, সুগার কনফেকশনারি, সাদা চকলেট, কোকোয়া, কোয়াযুক্ত চকলেট, তৈরি চকলেট ইত্যাদির দাম বাড়বে৷ 

পুরনো গাড়ি, রেফ্রিজেরেটর, সিরামিকের বাথটাব, জিকুজি শাওয়ার, শাওয়ার ট্রে, কাশ্মীরি ছাগল ও অন্য প্রাণীর লোম থেকে তৈরি সামগ্রী, চুলের ক্লিপ ও চুল পড়া রোধক সামগ্রী ইত্যাদি রয়েছে দাম বৃদ্ধির তালিকায়৷

জমি রেজিস্ট্রেশন ফি কমানো হচ্ছে৷ পাশাপাশি কৃষিকাজে ব্যবহৃত বীজ আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে৷ ফলে চাষাবাদে ব্যবহৃত বীজের দাম কমতে পারে৷

মুদ্রণশিল্পের কাঁচামালের দাম কমানো হয়েছে৷ বল পয়েন্ট কলমের কালি এবং ছবি ছাপানোর পণ্যসামগ্রীর দামও কমানো হয়েছে৷ ফলে বই-পুস্তকের দাম কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে৷ 

ওষুধ তৈরির উপকরণ আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে৷ ফলে ওষুদের দাম কমার সম্ভাবনা প্রবল৷ আমদানি করা ক্যানসারের ওষুধের দামও কমবে৷

হাইব্রিড কার এবং টায়ার-টিউব তৈরির কাঁচামাল আমদানি শুল্ক কমানোর ফলে পরিবেশবান্ধব গাড়ি কিনতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে৷

পোল্ট্রি খাদ্য, ময়দা ইত্যাদির দাম কমবে৷ ফলে মুরগি বা আমিষজাত খাবারের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে৷ গুঁড়া দুধ আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়েছে৷রুটি-বিস্কুটের দামও কমবে৷ কারণ, ১০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি হাতে তৈরি রুটি-বিস্কুটকে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া মাছ ধরার প্রধান উপকরণ জাল আমদানিতেও ছাড় দেওয়া হয়েছে৷ 

আবাসন সামগ্রী, যেমন স্ক্র্যাপ রডের আমদানি শুল্ক ১ হাজার থেকে কমিয়ে ৮০০ টাকা ও রড তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামালের ওপর আরোপিত সংরক্ষণমূলক শুল্ক ৫ শতাংশ কমানো হয়েছে৷ এতে বাজারে রডের দাম কমতে পারে৷ পাশাপাশি জমি রেজিস্ট্রেশন ফি কমানো হয়েছে৷ সিমেন্টের দামও কমে যাবে৷