বাগবোকে গৃহবন্দি করা হয়েছে
১২ এপ্রিল ২০১১যুদ্ধবিধ্বস্ত আইভরি কোস্টের হাল ধরলেন প্রেসিডেন্ট আলাসান ওয়াতারা৷ ৬৯ বছর বয়সি পশ্চিম আফ্রিকার এই নেতা সোমবার টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন৷ অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসীন লোরঁ বাগবো গ্রেপ্তার হওয়ার পর জাতির সামনে প্রথম দেখা দিলেন ওয়াতারা৷ আহ্বান জানালেন গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তি বজায় রাখার৷ একইসঙ্গে ঘোষণা দিলেন, বেসামরিক মানুষদের প্রতি সহিংস আচরণের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বাগবোকে৷ বিচার করা হবে বাগবোর সহযোগীদেরও৷
টেলিভিশন ভাষণে ওয়াতারা আরও বলেন, ‘‘আমি সবাইকে যেকোন ধরণের সহিংসতা ও প্রতিরোধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি৷ কেননা আমাদের দেশ ইতিহাসের একটি বেদনাদায়ক অধ্যায় অতিক্রম করতে যাচ্ছে৷''
লোরঁ বাগবো ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেছিলেন ২০০০ সাল থেকে৷ অন্যদিকে গত নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ওয়াতারা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পান৷ কিন্তু এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা বাগবো ক্ষমতা না ছাড়ায় দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়৷ ফলে আইভরি কোস্টে দেখা দেয় অচলাবস্থা৷
ওয়াতারার সমর্থক বাহিনীর অবরোধের মুখে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে অবরুদ্ধ হয়ে ছিলেন বাগবো৷ সোমবার ফরাসি বাহিনীর সহায়তায় গ্রেপ্তার হন তিনি৷ বাগবো, তাঁর স্ত্রী এবং ছেলেকে আবিদজানের একটি হোটেলে রাখা হয়েছে৷
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন জাতির প্রতি ওয়াতারার অঙ্গীকারকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ বান কি-মুন বলেছেন, ‘‘যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে৷'' জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত নভেম্বরের নির্বাচনের পর থেকে এই পর্যন্ত গৃহযুদ্ধে দেশটিতে কমপক্ষে ৮০০ মানুষ মারা গেছেন৷
বাগবো'র গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে চারমাসের বেশি সময় ধরে চলতে থাকা অচলাবস্থার অবসান হলো বলে মনে করা হচ্ছে৷ আইভরি কোস্টের উপর ইতোমধ্যে আরোপ করা সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে প্রস্তুত ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ মঙ্গলবার লুক্সেমবুর্গ এ ইইউ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আইভরি কোস্টের উপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায়৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন