1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলার বউ হতে পারতেন

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

একটা সময় ছিল, যখন চাইলেই হতে পারতেন এই বাংলার বউ৷ তবে শেষ পর্যন্ত হননি৷ শ্রীদেবীর অকালপ্রয়াণে সেই স্মৃতিচারণেও কাতর কলকাতা৷

https://p.dw.com/p/2tMSd
শ্রীদেবী
ছবি: picture-alliance/dpa/epa/STR

দক্ষিণ ভারতের তামিল ও তেলুগু সিনেমার জনপ্রিয়তম অভিনেত্রী শ্রীদেবী হিন্দি ছবির জগতে পা রাখা মাত্র সারা ভারতের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেন, তা সে সুপারহিট দক্ষিণী ছবির হিন্দি রিমেক হোক বা মৌলিক হিন্দি ছবি৷ একটা সময় ছিল, যখন শ্রীদেবীকে ভেবেই ছবির চিত্রনাট্য লেখা হতো৷ নায়িকা-কেন্দ্রীক হতো সেসব ছবি, যা পুরুষশাসিত ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে একটা অভিনব ঘটনা৷ সে অর্থে শ্রীদেবীই হয়ে উঠতে পেরেছিলেন ভারতীয় সিনেমার প্রথম মহিলা সুপারস্টার৷

এর পাশাপাশি কলকাতা, তথা পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষী মানুষদের মনে শ্রীদেবীর জন্যে আলাদা একটু জায়গা তৈরি হয়েছিল, বাড়তি একটু খাতির৷ কারণ হিন্দি ছবির বাঙালি সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে শ্রীদেবীর গোপন প্রেম৷ যে প্রেম গোপন হয়েও গোপন থাকেনি৷ আসমুদ্রহিমাচল ভারত জানত শ্যামলাবরণ বাঙালিবাবুতে মন মজেছে সেই সময়ের সুন্দরীশ্রেষ্ঠা শ্রীদেবীর৷ প্রবীণ চলচ্চিত্র সাংবাদিক চণ্ডী মুখোপাধ্যায় যে কারণে শ্রীদেবীর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পরই ফেসবুক পোস্টে লিখলেন, শ্রীদেবীর সঙ্গে তাঁর আলাপ মিঠুনের মাধ্যমে৷ শ্রীদেবী তখন বাংলার বধূ হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন৷

‘কোথাও যেন একটা চোট ছিল তাঁর মনের মধ্যে’

কিন্তু মিঠুন ছিলেন বিবাহিত৷ তাঁর স্ত্রী যোগিতা বালিও একজন অভিনেত্রী এবং যথেষ্ট বিখ্যাত৷ তাঁদের দু'জনের একটি ছেলেও আছে৷ মিঠুন সেই বৈবাহিক এবং সাংসারিক দায়-দায়িত্ব ছাড়তে চাননি৷ আবার তিনি শ্রীদেবীকেও রাখতে চেয়েছিলেন জীবনে৷ কিন্তু রাজি হননি রক্ষণশীল দক্ষিণ ভারতীয় আবহে বড় হয়ে ওঠা শ্রীদেবী৷ তিনি মিঠুনকে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন৷ স্ত্রী-পুত্রকে ছেড়ে আসার জন্য৷ মিঠুন পারেননি৷ কোথাও একটা মধ্যবিত্ত বাঙালির সংস্কার কাজ করেছিল সম্ভবত৷ কিন্তু মিঠুন এবং শ্রীদেবী, দু'‌জনের মধ্যেই অসম্পূর্ণ সম্পর্কের দুঃখবোধটা ছিল৷ যে কথা এদিন ফেসবুকে খোলাখুলি জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ, সাংবাদিক এবং একসময় মিঠুন চক্রবর্তীর বাণিজ্যিক সহযোগী কুনাল ঘোষ৷

অন্যদিকে শ্রীদেবীও যেন নিজের সামনে একটা দেওয়াল তুলে দিতেন মিঠুনের প্রসঙ্গ উঠলেই৷ যে অভিজ্ঞতার কথা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন সাংবাদিক এবং দীর্ঘ সময়ের টিভি অ্যাঙ্কর অদিতি রায়৷ সামনাসামনি শ্রীদেবীকে দেখার সুযোগ তাঁর একবারই হয়েছিল৷ কিন্তু সাংবাদিকের চোখ ঠিক খুঁজে নিয়েছিল সাফল্য আর প্রতিষ্ঠার আড়ালে এক লাজুক, অন্তর্মুখী নারীকে, যিনি নিজের পুরনো প্রেমের প্রসঙ্গ উঠলে তখনও একটু গুটিয়ে যান৷ এরকম একজন মহিলা মৃত্যুর পর জড়িয়ে পড়লেন বিতর্কে, কারণ স্নানঘরে দুর্ঘটনাবশত বাথটাবের জলে ডুবে মৃত শ্রীদেবীর পাকস্থলীতে মদ পাওয়া গেছে৷ অনুমান করা হচ্ছে, নেশার ঘোরেই জলে ডুবে গেছেন পঞ্চাশোর্ধ্বা অভিনেত্রী৷

আর তার পরই শুরু হয়েছে মৃদু ছি-ছিক্কার৷ আগের দিন হৃদরোগে মারা যাওয়ার খবরেও শুরু হয়েছিল বারবার সৌন্দর্য বাড়ানোর, আর বয়স কমানোর অস্ত্রোপচার করাতেই শ্রীদেবীর এই অকালমৃত্যু কিনা, সেই বিতর্ক৷ এবার তার সঙ্গে যুক্ত হলো মদ্যপানের কুপ্রভাব এবং সামাজিক লজ্জার প্রসঙ্গ৷ দীর্ঘদিন ঘনিষ্ঠভাবে গ্ল্যামার জগতকে দেখা অদিতি যদিও এতে অবাক হচ্ছেন না আদৌ৷ তাঁর অভিজ্ঞতা বলে, যে কোনো পেশাতেই, বিশেষ করে মেয়েদের, এই সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়: শ্রীদেবীই বা কেন ব্যতিক্রম হবেন!‌