1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘‘বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যাওয়া রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট পাবেন’’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১২ জানুয়ারি ২০২১

সেখানে অবস্থানরত ৫৫ হাজার রোহিঙ্গাকে সৌদি আরব বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চায়৷ তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ফেরত পাঠাতে নয়, সৌদি আরব এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিতে বলছে৷

https://p.dw.com/p/3nonJ
AK Abdul Momen, Außenminister von Bangladesch
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan

সৌদি আরব সেখানে অবস্থানরত ৫৫ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চায়৷ তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ফেরত পাঠাতে নয়, সৌদি আরব এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিতে বলছে৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে যে রোহিঙ্গারা সৌদি আরব গেছেন তারা পাসপোর্ট পাবেন৷''

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, সৌদি আরব রোহিঙ্গাদের ফেরত দিতে চায় এটা ঠিক না, এই তথ্যটি ভুল৷ তারা সেখানেই থাকবেন৷

তিনি জানান, সৌদি আরব বিভিন্ন সময়ে বহু রোহিঙ্গা নিয়েছে৷ কিছু তারা নিয়েছে এবং কিছু বিভিন্ন উল্টাপাল্টা করে চলে গেছে৷ ১৯৭৮ সালে রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশে আসেন, তখন সৌদি বাদশাহ বললেন যে তার দেশে রোহিঙ্গারা থাকবেন৷ ৭০ দশকের শেষে, ৮০ এর দশকের শুরুতে অনেক রোহিঙ্গা সৌদি আরবে গেছেন৷ ওখানে গিয়ে তারা থাকছেন৷ তাদের ছেলে-মেয়ে হয়েছে৷ ৩০-৪০ বছর ধরে তারা ওখানে আছেন৷ ছেলে-মেয়ে জীবনে বাংলাদেশ দেখে নাই৷ তারা বড় হয়েছেন৷ বৃদ্ধ হয়েছেন৷ এখন সৌদি আরব বলছে, তাদের দেশে নাগরিকত্ব বিহীন কাউকে রাখবে না৷ তারা সহজে কাউকে নাগরিকত্ব দেয় না বলে তারা একটা প্রস্তাব করেছে যে, এই লোকগুলোকে তারা পাঠাবে না৷ তাদের যদি নাগরিকত্ব দেয়া হয় তারা ওই দেশেই(সৌদি আরব) থাকবে৷ শুধু যারা জেলে থাকা ৪৫২ জনকে পাঠাবে৷

ডয়চে ভেলেকে সাক্ষাৎকারে যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা বলেছি বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে কেউ গিয়ে থাকলে  তাদের পাসপোর্ট অবশ্যই আমরা রিনিউ করব৷ আর তাদের বাংলাদেশের পাসপোর্ট না থাকলে আমরা পরীক্ষা করব৷ একদম ওয়ান টু ওয়ান যাচাই বাছাই করে দেখব যে, তারা বাংলাদেশে কোনোকালে কোনোভাবে ছিলো কিনা, তাদের লিগ্যাল স্ট্যাটাস কী? সেটা যদি থাকে তাও আমরা তাদের কনসিডার করব৷ যদি সে আমাদের দেশ থেকে না গিয়ে থাকে তাহলে আমরা তাদের  গ্রহণ করব না৷''

পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি হয়েছে৷ কমিটি সৌদি আরবের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছে৷ বাংলাদেশ তার এই অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছে৷ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীরও কথা হয়েছে৷ তারাও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন৷

কত রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছেন তার কোনো সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ তবে বহু রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভুয়া পাসাপোর্ট নিয়ে সৌদি আরব গেছেন বলে জানান তিনি৷

তিনি বলেন, ‘‘আমরা সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরেছি যে ২০০১, ২০০২ এবং ২০০৬ সালে বহু রোহিঙ্গা ভুয়া বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরব গেছেন৷ চট্টগ্রাম থেকেও বহু রোহিঙ্গা গেছেন৷ বাংলাদেশের কিছু কর্মকর্তা ঘুস খেয়ে তাদের পাসপোর্ট দিয়েছেন৷ দূতাবাসের অফিসারদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে যে তারা পাসপোর্ট দিয়েছেন৷''

তবে তিনি জানান, এবার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় খুব কড়া৷ কোনো ছাড় দেয়া হচ্ছেনা৷ এটা নিয়ে তদন্তের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত না, এবার আমরা অভিযোগ পেলে সাথে সাথে তাকে বাদ দিয়ে দিচ্ছি৷ একজনের বিরুদ্ধে শুনেছি, তাকে বাদ দিয়ে দিয়েছি৷ কিন্তু কোথায় যে কে লুকিয়ে থাকে জানা কঠিন৷ এটা যে সব সময় বড় অফিসারেরা করেন তা নয়, অনেক সময় ছোট স্টাফরাও করেন৷ এখানে অনেক দুষ্ট লোক আছে৷ তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি৷''

আর ‘দুষ্ট' লোকদের চিহ্নিত করতে সংবাদমাধ্যমেরও সহায়তা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷