1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে নীরব ঘাতক আর্সেনিক

২২ জুন ২০১০

বাংলাদেশে নীরব এক ঘাতক হল আর্সেনিক৷ সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ এই বিষে আক্রান্ত হচ্ছেন, অনেকের মৃত্যুর কারণও এই আর্সেনিক৷

https://p.dw.com/p/O09M
ছবি: AP

বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার বাগানবাড়ি ইউনিয়ন৷ সবুজ সুন্দর এই গ্রামটিতে গেলে সহজেই যে জিনিসটি চোখে পড়বে, তা হলো টিউবওয়েলের উপর লাল রঙ৷ কেন এই রঙের খেলা? উত্তর হচ্ছে, তারা শখের বশে রঙিন কর্মটি করেননি৷ বাংলাদেশের অনেক গ্রামের মতো সেখানেও ভূগর্ভস্থ পানিতে রয়েছে আর্সেনিক বিষ৷ আর বিষযুক্ত পানি আসে যে টিউবওয়েলে সেটার রঙ করে দেওয়া হয়েছে লাল৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি লিটার পানিতে দশমিক ০৫ মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক থাকলে তা মানুষের শরীরে জন্য ক্ষতিকর৷ সম্প্রতি ব্রিটেনের স্বনামধন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ‘দ্য লান্সেট'-এ প্রকাশিত এক গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তত ৭ কোটি সত্তর লাখ মানুষ রয়েছেন এই আর্সেনিক বিষের ঝুঁকির মধ্যে৷ বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো এবং নিউ ইর্য়ক শহরের কয়েকজন গবেষকের একটি দল গত বেশ কয়েক বছর ধরে এই গবেষণাকাজ পরিচালনা করেছিলেন৷ সম্প্রতি তাঁরা তাঁদের এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছেন ঐ জার্নালটিতে৷ এই গবেষণা করতে গিয়ে তাঁরা ১২ হাজার মানুষের দৈনিন্দিক জীবন-প্রণালী পর্যবেক্ষণ করেছেন৷ এবং দেখতে পেয়েছেন বিভিন্ন স্থানে আরও মানুষ ধীরে ধীরে এই বিষের শিকার হচ্ছে৷ মোদ্দা কথা হলো, তাঁদের গবেষণার আওতাধীন মানুষদের মধ্যে যাঁরা মারা গেছেন তাঁদের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের মৃত্যুর কারণ এই সাংঘাতিক বিষ৷

আর্সেনিক দূষণের এই হারটিকে কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগেই নীরব ঘাতক হিসাবে বর্ণনা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ ভারতে ১৯৯৪ সালে ভোপাল এবং ১৯৮৬ সালে ইউক্রেইনের চেরোনোবিল গ্যাস দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশ আর্সেনিক দূষনকে একটি দুর্যোগ হিসাবে চিহ্নিত করেছে তারা৷ অবশ্য ঐ গবেষক দলের ধারণা অবস্থা বেশ খারাপ হলেও আর্সেনিক সংক্রান্ত বড় ধরণের দুর্যোগের কবলে পড়তে বেশ কয়েক দশক সময় লাগবে৷ কারণ এই বিষ ছড়ায় নীরবে, ধীরে ধীরে৷ বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশি বিদেশি সাহায্য সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে এই নীরব ঘাতকের মোকাবিলায় নানা প্রকল্প গ্রহণ করেছে৷ গ্রামে গ্রামে খাবার পানির যোগান দেবার জন্য খনন করা হয়েছে পুকুর৷ কিন্তু ঐ গবেষক দল বলছেন, এসব করেও খুব যে একটা সফলতা এসেছে তা কিন্তু বলা যায় না৷ তাই এখনি সৃষ্টি করা প্রয়োজন আরও বেশি জন সচেতনতা৷

প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক