শপথ ভঙ্গের অভিযোগ
২১ জুন ২০১৪বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সংস্থাটির মহাসচিব বান কি মুনকে বলেন, ‘‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিয়েছে৷ আর সংলাপ হবে সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ঠিক আগে৷''
তিনি বাংলাদেশের অবস্থা স্বাভাবিক এবং স্থিতিশীল রয়েছে বলে জাতিসংঘ মহাসচিবকে আশ্বস্ত করেন৷
শনিবার রাজধানী ঢাকায় দু'টি অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘জাতিসংঘের মহাসচিবকে আশ্বস্ত করে রাষ্ট্রপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার মাধ্যমে তিনি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন৷ এটা রাষ্ট্রপতির শপথ ভঙ্গের সামিল৷''
তাঁর মতে, রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য ‘আওয়ামী লীগের নেতাদের' ভার্সন৷ কিন্তু শপথ নেয়ার পর রাষ্ট্রপতি কোনো দলের থাকেন না৷ তিনি সবার৷
রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি সংলাপ, নির্বাচন নিয়ে যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে জনগণের আশা ভঙ্গ হয়েছে৷ জনগণ দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়৷ আর রাষ্ট্রপতি দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করবেন - এটাই সবাই আশা করেন৷''
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে ‘বেটার' মনে করা হয়৷ যখন তিনি রাষ্ট্রপতির শপথ নেন, তখন নিরপেক্ষ থাকার শপথ নেন৷ আর এখন বিদেশে গিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবকে বলছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে৷''
রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রশ্ন রাখেন, ‘‘কোথায় দেখলেন ৫ জানুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে? গোটা দেশের মানুষ নির্বাচন বর্জন করেছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকেও বলেছিল, এটি সাংবিধানিক ধারা রক্ষার নির্বাচন৷ এখন রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষাই কথা বলছেন৷''
সর্বশেষ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে রিট প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘‘এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই৷ আমরা চাই রাজনৈতিক বিষয়ের রাজনৈতিক সমাধান৷ আদালতের নির্দেশে সব হলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না৷ কারণ আদালত তাঁকে ‘রং হেডেড' বলেছিলেন৷ আইন করে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বৈধতা দেওয়া যাবে না৷''
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতার স্বাদ নিচ্ছেন, সুইস ব্যাংকে টাকা পাঠাচ্ছেন, কানাডা-মালয়েশিয়ায় বাড়ি করছেন, এত সহজে কেউ ক্ষমতা ছাড়তে চায় না৷ কিন্তু জনগণ ঝেঁটিয়ে বিদায় করবে৷ প্রস্তুতি নিন৷''
তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘হতাশার কোনো স্থান নেই৷ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে৷ এবার তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে৷''
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এখনো দেশের বাইরে আছেন৷