1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশের কৃষিতে এবার ড্রাগন-এর আবির্ভাব

৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০

বাংলাদেশে এবার নতুন ধরণের একটি ফলের চাষ শুরু হয়েছে৷ এই ফলের নাম ড্রাগন৷ দক্ষিণ আফ্রিকার এই ফলটি এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উৎপাদন হচ্ছে৷ কিন্ত সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হচ্ছে ভিয়েতনামে৷

https://p.dw.com/p/LvRQ
ড্রাগন ফল আর স্ট্রবেরির মতো বিদেশী ফলের চাষ শুরু করেছে বাংলাদেশছবি: picture-alliance/dpa

বাংলাদেশের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নতুন একটি উদ্যোগ নিয়েছে, আর তা হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফল বাংলাদেশে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাজারজাত করা৷ ইতিমধ্যেই বিদেশি অনেক ফল বাংলাদেশে বেশ চাষ হচ্ছে৷ এর মধ্যে অন্যতম স্ট্রবেরি৷ স্ট্রবেরি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা শুরু হয়েছে কিছুদিন হলো৷ এবং কৃষকরা এতে বেশ লাভবান হচ্ছেন বলেই জানা যাচ্ছে৷

নতুন করে যে ফলটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হচ্ছে, তার নাম ড্রাগন ফ্রুট৷ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাউ জার্মপ্লাজম সেন্টারে এই ফলের বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সফলতা পাবার পর এর বাংলাদেশী নামকরণ হয়েছে বাউ পিটায়া৷ বাউ জার্মপ্লাজম সেন্টার ২০০৭ সাল থেকে এই ফল নিয়ে পরিক্ষা নিরীক্ষা করছিলেন৷ সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. এম. এ. রহিম ড্রাগন নামক ফল নিয়ে আসেন থাইল্যান্ড ও ফ্লোরিডা থেকে৷ এরপর বাংলাদেশের পরিবেশ উপযোগী করার জন্য ব্যাপকভাবে তা কালচার করা হয়৷ বর্তমানে ড্রাগন ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার জন্য বাউ জার্মপ্লাজম সেন্টারে চারা উৎপাদন করা হচ্ছে ব্যপক হারে৷

ড্রাগন ক্যাকটাস পরিবারের একটি ফল৷ ড্রাগনের ফুলের নাম 'মুন ফ্লাওয়ার'৷ ফুল লম্বাটে সাদা ও হলুদ৷ বাংলাদেশের উত্তরের নাটোর জেলার বড়াইগ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ উদ্বোধন করা হয়েছে সম্প্রতি৷

কৃষিবিদরা জানিয়েছেন, কাঁচা-পাকা দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায় এই ফল৷ খাদ্য ও ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল খেতেও সুস্বাদু৷ সারা বছর এই ফলের গাছ রোপন করা যায়৷ অধিক তাপ সহনশীল এই গাছ৷ তাই গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এর চাষ ভালো হয়৷ শীতের চার-পাঁচ মাস ছাড়া বছরের অবশিষ্ট সাত-আট মাস ড্রাগন ফল পাওয়া যায়৷ প্রতি বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ দু'শটি ড্রাগন ফলের গাছ রোপন করা সম্ভব৷ ফল পাওয়া যায় দুই থেকে তিন বছর পর৷ প্রতিটি গাছে ৫০ থেকে একশটি মত ফল ধরে৷ প্রতিটি ফলের ওজন হয় পাচঁশ'থেকে আটশ' গ্রাম ৷ মজার ব্যাপার হলো, এই ফলের জন্য প্রয়োজন নেই কোন সার, কীটনাশকের৷ তবে ভালো উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন জৈব সার৷

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কিছু দোকানে ড্রাগন ফল পাওয়া যায়৷ যা আমদানি করা৷ প্রতি কেজি ফলের দাম তিন থেকে চারশত টাকা৷ কৃষিবিদরা মনে করছেন, ব্যাপকভাবে এই ফল চাষ শুরু হলে এর ভালো বাজার সৃষ্টি হবে এবং কৃষকরা ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারবেন৷ আগামী দুই দশকের মধ্যেই ড্রাগন ফল পৃথিবীর সেরা ফল হিসাবে গণ্য হবে বলে কৃষি বিশেষজ্ঞদের অনেকে আশা করছেন৷ পাশাপাশি বাংলাদেশেও প্রসিদ্ধি লাভ করবে বলে কৃষিবিদদের ধারণা৷

প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক