বাংলাদেশ-জার্মানি
৮ অক্টোবর ২০১৩দুই জার্মানি এক হওয়ার ২৩ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজন করা হয় জমকালো এক অনুষ্ঠানের৷ এতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. আলব্রেশট কনসে ছাড়াও সরকারের অন্যান্য পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত হন৷ সন্ধ্যায় শুরু হয়ে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান, চলে রাত পর্যন্ত৷ দুই দেশের জাতীয় সংগীত, পতাকা আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনকে ভিন্ন মাত্রা দেয়৷
অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির সম্পর্ক এখন বহুমাত্রিক৷ এর সর্বশেষ অগ্রগতি হলো বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত তরুণরা এখন জার্মানিতে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হচ্ছেন৷ কয়েক হাজার আবেদন এখন বিবেচনার অপেক্ষায় আছে৷ তাঁর মতে, এই তরুণরাই বাংলাদেশ-জার্মানির সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে৷
রাষ্ট্রদূত ড. কনসের কথায়, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে চায়৷ এ জন্য বাংলাদেশকে সুশাসন এবং বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করে অর্থনীতির সুপ্ত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে৷ তবে তিনি মনে করেন, ২০১৫ সাল নাগাদ সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে৷
জার্মান রাষ্ট্রদূত মনে করেন, বাংলাদেশের সামনে সমৃদ্ধ অর্থনীতি অপেক্ষা করছে৷ তাই তাঁর আশা, সব বাধা দূর করে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের এব নম্বর দেশে পরিণত হবে৷ এছাড়া তাঁর আশা, আগামীতে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাবে এবং তাতে সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে জার্মানি৷
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বাংলাদেশ-জার্মানির ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অবাধ এবং নিরপেক্ষ৷ আর এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে বলে মনে করেন তিনি৷ শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে জার্মানির অব্যাহত সহায়তারও প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷
এদিকে, জার্মানি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিতে একটি ঋণ চুক্তি করেছে৷ এই চুক্তির আওতায় জার্মানি বাংলাদেশকে ১,০০৮ কোটি টাকা (৯৭.০ মিলিয়ন ইউরো) দেবে৷ দেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্যুৎ গ্রিড উন্নয়নে এই ঋণের টাকা ব্যবহার করা হবে৷ এর উদ্দেশ্য হলো, সুবিধা বঞ্চিত যাঁরা এখনো বিদ্যুৎ পাননি, তাদের বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেয়া৷ গত রবিবার এই চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে জার্মানির সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে৷ বিশেষ করে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-জার্মানি অনেক বছর ধরে কাজ করছে৷
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরের বছর ১৯৭২ সালেই জার্মানি বাংলাদেশে তাদের দূতাবাস খোলে৷