1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বহুতলের ছাদের উপর অভিনব কনসার্ট

১৩ নভেম্বর ২০২০

কনসার্ট বা জলসায় হাতে গোনা কিছু মানুষ সংগীতের স্বাদ পান৷ করোনা সংকটের কারণে সেই সুযোগও প্রায় হাতছাড়া হয়ে গেছে৷ বহুতল ভবনের ছাদে অভিনব কনসার্ট সংগীত অনুরাগীদের জন্য সুখবর হয়ে উঠতে পারে৷

https://p.dw.com/p/3lEXZ
BdTD | Deutschland Dresden Konzert "Himmel über Prohlis"
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Schreiber

ড্রেসডেন শহরের বহুতল ভবন ভরা এলাকায় আল্পস পর্বতের পরিচিত ধ্বনি শোনা যাচ্ছে৷ ৫০ মিটার উচ্চতা থেকে আল্পহর্নের সুর ভেসে আসছে৷ শহরের বিখ্যাত সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার মহাপরিচালক মার্কুস রিন্ট হাঁটতে বেরিয়ে ১৭ তলা ভবনগুলি দেখে এক বছর আগেই খোলা আকাশের নীচে কনসার্টের কথা ভেবেছিলেন৷ রিন্ট বলেন, ‘‘এমন পরিবেশের সঙ্গে পর্বতের উঁচুনীচু গঠনের অদ্ভুত মিল রয়েছে৷ ভবনগুলির মাঝে যেন খাড়া খাদ নেমে গেছে৷ তখন ভাবলাম, বিভিন্ন ছাদের উপর সংগীতিশিল্পীদের ছড়িয়ে রাখলে তাঁরা সবাই মিলে বাজনা বাজাতে পারেন৷''

তাঁকে অবাক করে ভবনের বাসিন্দাদের সমিতি এই প্রকল্পে সম্মতি দিয়ে দিলো৷ একাধিক বহুতল ভবনের উপর ড্রেসডেন সিম্ফনির শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করছেন৷ একটি পার্কিং ভবনের উপর অন্য শিল্পীরা তথাকথিত ‘ডা গু' ড্রামস বাজাচ্ছেন৷

এমন কনসার্টের জন্য অনেক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার প্রয়োজন৷ শহরের বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গনে ড্রেস রিহার্সাল করা হয়েছে৷ আল্পহর্ন বাদ্যযন্ত্র সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে৷ পেশাদার শিল্পী হিসেবে ইয়ুলিয়ানে বাউকে শিশু বয়স থেকেই এই হর্ন বাজাচ্ছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই শিঙা বাজাতে গেলে দেখবেন, এর কাঠামো খুবই সরল৷ এটি প্রায় আদিম এক বাদ্যযন্ত্র৷ এটি দিয়ে বড়জোর ১৬ থেকে ১৭ রকম সুর সৃষ্টি করা যায়৷ আপনি চাইলে একবার বাজিয়ে দেখাতে পারি৷''

সুরকার হিসেবে মার্কুস লেমান-হর্ন বহুতল ভবনের কনসার্টের জন্য আলাদা সংগীত রচনা করেছেন৷ বিশেষ করে শিল্পীদের মধ্যে ব্যবধানের কারণে গোটা বিষয়টি ভালো করে চিন্তা করতে হয়েছে৷ মার্কুস বলেন, ‘‘দর্শকরা মাঝে বসে রয়েছেন৷ যে শিল্পীরা সবচেয়ে দূরে রয়েছেন, তাঁরাই বাজনা শুরু করবেন৷ সব শিল্পীর কানের কাছে বিলম্বিত লয়ে মেট্রোনোম যন্ত্র বাজালে তবেই সেটা সম্ভব৷ অর্থাৎ তারা নীচে ড্রামবাদকদের তুলনায় এক সেকেন্ড আগে শুরু করবেন৷''

প্রিমিয়ারের দিন দুপুর থেকেই ছোট ছোট কনসার্ট শুরু হয়ে গেছে৷ সিম্ফনির শিল্পীরা গোটা এলাকা সুরে ভরিয়ে দিচ্ছেন৷ এলাকায় এমন মনোরম পরিবেশ একজনের ভালো লাগছে৷ কনসার্ট ছোট হলেও কেউ তা সফল মনে করছেন৷ ড্রেসডেন সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার মহাপরিচালক মার্কুস রিন্ট মনে করেন, ‘‘এই প্রকল্প অবশ্যই নতুন এক ধারার সূচনা হতে পারে, যা বিশ্বের অনেক বহুতল ভবন ভরা এলাকায় আয়োজন করা যেতে পারে৷ এর মাধ্যমে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়৷ মানুষ যেখানে থাকে, সেখানেই সংগীত পৌঁছে দেওয়া যায়৷''

সন্ধ্যাবেলা কনসার্ট শুরু হচ্ছে৷ সংগীতশিল্পীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ তারপর প্রিমিয়ার কনসার্টের সূচনা হলো৷ দর্শকরাও মুগ্ধ৷ এই উদ্যোগ হয়তো সত্যি নতুন ধারার সূচনা করছে৷ ড্রেসডেন সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার দেখানো পথে হয়তো গোটা বিশ্বে বহুতল ভবনের ছাদে এমন কনসার্ট আয়োজন করা হবে৷

লারিসা মাস/এসবি