বন্যার একশ’ দিন পরেও গৃহহীন লাখ লাখ মানুষ
২৯ অক্টোবর ২০১০ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্ট্যাসি উইনস্টোন বলেন, ‘‘বন্যা দুর্গত এলাকার কমপক্ষে সত্তর লাখ মানুষ এখনও ঘর-বাড়ি হারা৷ ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের অবিলম্বে সাহায্য প্রয়োজন৷ পাকিস্তানের ইতিহাসে ভয়াবহতম এই প্রাকৃতিক দুর্যোগপীড়িত মানুষদের জন্য গৃহীত ত্রাণ উদ্যোগ আর্থিকভাবে সমর্থন করার আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘ একাধিকবার৷ জাতিসংঘ বলছে, বন্যার ফলে লাখ লাখ মানুষ খাবার, পানি, বাসস্থান এবং অন্যান্য মৌলিক চাহিদাগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে৷
এবছর জুলাই মাসের শেষদিকে স্মরণকালের এই ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয় পাকিস্তানে৷
পাকিস্তান সরকার ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের মধ্যে দশ লাখ ‘ইমার্জেন্সি ক্যাশ হেল্প কার্ড' বা ওয়াতান কার্ড বিতরণ করেছে৷ কিন্তু এই সাহায্য যথেষ্ট নয় এবং বেলুচিস্তানের মানুষ এখনও ‘ওয়াতান কার্ড' কার্ড পায়নি বলে অভিযোগ৷ কিছু এলাকায় সরকারকে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে৷ তবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ২ কোটি মানুষকে সাহায্য করেছে এমন কথাও বলা হচ্ছে৷
জাতিসংঘ বলছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ভেঙেগেছে প্রায় বিশ লাখ ঘর-বাড়ি৷ খবে প্রকাশ, দক্ষিণাঞ্চলের সিন্ধু প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা দুর্গত লাখ লাখ মানুষ চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন৷
কয়েক সপ্তাহব্যাপী এই বন্যা দু'হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়৷ বন্যা কবলিত হয় পাকিস্তানের ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ৷ শীতের মুখে ঘর-বাড়ি হারা এইসব মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে৷ পাকিস্তানের একটি বেসরকারি সংস্থা ‘এসপিও'র আঞ্চলিক পরিচালক সালমান আবিদ বলেন, ‘‘যেহেতু শীতকাল আসছে, যারা ঘর হারিয়েছেন তাঁদের ঘর করে দেওয়াটা সবচেয়ে বেশি জরুরি৷ আর যারা শিবিরে রয়েছেন তাঁরা যাতে নিজদের ঘরে তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে৷''
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্যার ফলে যে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে, সরকারের একার পক্ষে তার মোকাবিলা করা সম্ভব নয়৷ সচেতন সমাজ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করা উচিত৷ সেইসঙ্গে সরকারেরও উচিৎ দুর্গত মানুষদের সাহায্যের জন্য নতুন কর্মপন্থা গ্রহণ করা৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক