বদভ্যাস ছাড়াতে ‘ট্রাবলমেকার’
২১ মে ২০১৮পরীক্ষামূলকভাবে যাঁরা টেলিভিশন দেখছেন, নতুন এক উদ্ভাবন সম্পর্কে তাঁদের রায় দিতে হবে৷ যেমন কোন বিষয় বিরক্তিকর ও ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে – এমনটা সহজে বর্ণনা করা কঠিন৷ তবে এটা ঠিক যে, পুরো অভিজ্ঞতার মধ্যে যেন একটা ভুতুড়ে ছায়া রয়েছে৷ কিছুটা বিরক্তিকরও বটে৷
জার্মানির সিগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষকরা তথাকথিত ‘ট্রাবলমেকার’ নামের এই প্রযুক্তি সৃষ্টি করেছেন৷ এর কাজ হলো দৈনন্দিন জীবনে আমাদের বদভ্যাস ছাড়ানো৷ গবেষকরা এগুলিকে ট্রেনিং যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করেন৷ যেমন, এই যন্ত্রটির মাধ্যমে লিফট চড়া বন্ধ করে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে শেখানো হয়৷ বলা হয়, নিজেকে ফিট রাখতে কিছু করো৷ ৪ তলায় ছেড়ে দিচ্ছি৷ তারপর সিঁড়ি বেয়ে বাকি একতলায় যাও৷ ৩ তলা পর্যন্ত লিফটে উঠে, হেঁটে আরেক তলা ওঠার আইডিয়া আর নতুন কী!
ড. মাটিয়াস লাশকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই চোখে যেন ঠুলি পরা থাকে৷ আমরা অভ্যাসের দাস হয়ে থাকি৷’’
এইসব আইডিয়া আমাদের সেই দশা থেকে মুক্তি দেবে, এমনটাই আশা৷ এই ওয়ার্কশপে সেগুলি পরখ করে দেখে কাজে লাগানো হয়৷ কিন্তু নিজের আচরণ আদর্শ করে তোলার জন্য কত প্রযুক্তিই না রয়েছে! যেমন দামী ঘড়ি আমাদের পদক্ষেপ মনিটর করে৷ প্রফেসর মার্ক হাসেনসাল বলেন, ‘‘তার বদলে আমরা এমন কিছু করার চেষ্টা করছি, যা মানুষকে নতুন পরিস্থিতিতে ফেলবে, নতুন সিদ্ধান্ত নিতে উদ্বুদ্ধ করবে৷ নিজেকে পরিবর্তন করার লক্ষ্যে বস্তুটিকে অদ্ভুত এক যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা প্রায়ই খুব সহজ হতে পারে৷’’
‘ট্রাবলমেকার’ ক্ষণিকের জন্য আমাদের রুটিন ভেঙে দেবে৷ সেই মুহূর্তকে বলা হয় ‘কি মোমেন্ট’৷ ড. মাটিয়াস লাশকে বলেন, ‘‘ব্যাপারটা এভাবে চলে৷ একদিকে আমি গাড়ির চাবি ঝুলিয়ে দিতে পারি, কারণ, মাঝে মাঝে তো গাড়ি চড়তেই হয়৷ কিন্তু সাইকেলের চাবিও ঝোলানো সম্ভব৷ গাড়িতে উঠতে গেলে ‘কি মোমেন্ট’ একটা প্রস্তাব দেবে৷ সাইকেলের চাবি পড়ে যাবে৷ তখন বাধ্য হয়ে ভাবতে হবে, গাড়ি চালানোই কি সঠিক সিদ্ধান্ত?’’
দৈনন্দিন জীবন থেকেই আরও আইডিয়া পাওয়া সম্ভব৷ যেমন, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য একটি আইডিয়া রয়েছে৷ ড. মাটিয়াস লাশকে বলেন, ‘‘টিভির শব্দ নিজেরাই চালু অথবা বন্ধ করো ৷ কাজ হয়ে গেলে তোমরা টিভি আবার বন্ধ করে দিলে ভালো হয়৷ সবসময় টিভি চালু রাখার প্রয়োজন নেই৷ তারপর বেরিয়ে এসো৷’’
স্বেচ্ছাসেবীরা জানেন না, টিভি দেখার আরামদায়ক সময় শেষ হলেই ‘ট্রাবলমেকার’ জেগে উঠবে৷ ড. লাশকে বলেন, ‘‘টিভি স্ট্যান্ডবাই মোডে রেখে অযথা বিদ্যুৎ খরচ করা যন্ত্রটি একেবারেই পছন্দ করে না৷ তখন সে খুবই অস্থির হয়ে পড়ে৷’’
এখনো পর্যন্ত কেউ সেটিকে হাতে তুলে নেয়নি৷ বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী এই শুঁয়োপোকা নিয়ে প্রতিক্রিয়া কীরকম? প্লাগ খুলে নেওয়া অথবা টেলিভিশন ঠিকমতো বন্ধ করার কথা ভালো করে মনে করিয়ে দেয়৷
উদ্ভাবনের সত্যি কোনো সীমা নেই৷
নিল্স অটে/এসবি