1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বঞ্চিত ঢাকাবাসীর মন্তব্য ‘জাহান্নামে বাস করি’

২৬ এপ্রিল ২০১০

ঢাকার গৃহিণী মমতা বেগম৷ দিনের অনেকটা সময়ই বঞ্চিত চেহারা নিয়ে কাটান তিনি৷ পানির কলে অধিকাংশ সময়ই নেই পানি৷ একটু যদি আসেও, সেটা দুর্গন্ধময় কিংবা নোংরা৷ বিপত্তি চরম ওঠে, যখন সেই পানি ফুটিয়ে পানের জন্য গ্যাসও পাওয়া যায়না৷

https://p.dw.com/p/N68O
তারপরও কি মেলে বিশুদ্ধ পানি?ছবি: AP

ঢাকায় এখন এক ঘন্টা অন্তর অন্তর থাকেনা বিদ্যুৎ৷ আর তাই, ২ সন্তানের জননী ২৬ বছর বয়সী মমতা সন্তানদের ঠিকভাবে পড়াতে পারেন না, সুযোগ পাননা টিভি দেখার৷ বরং নিয়মিত বিরতিতে অন্ধকারে, ঘামে ভিজে অসহায় হয়ে বসে থাকাটাই বিনোদন বা অবসর তাঁর জন্য৷

মমতার স্বামী একজন সরকারি চাকুরে৷ কিন্তু তারপরও আক্ষেপের সুরে মমতা বললেন, আমার পরিবারে প্রত্যেক সদস্যই দূষিত পানির কারণে চামড়ার নানা রোগে ভুগছে৷ আমার সন্তানরা সেই পানি পান করতে পারেনা, আর আমি অনেক সময় সময়মত তাদের জন্য খাবারটুকুও রাঁধতে পারিনা৷

ঢাকা শহরের এমন বিদ্যুৎ, গ্যাস আর পানির ত্রি-মুখী সংকট ভোগাচ্ছে মমতা'র মতো মধ্যবিত্ত মানুষদের৷ এককথায় তাই মমতা বললেন, আমরা প্রতিনিয়তই নরকযন্ত্রণা ভোগ করছি৷

১৩ মিলিয়ন মানুষের শহর ঢাকায় প্রতিদিন ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন৷ অন্যদিকে বর্তমানে পানির প্রয়োজন দুই দশমিক দুই বিলিয়ন লিটার৷ কিন্তু ঢাকার ওয়াসা কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ ক্ষমতা আছে প্রতিদিন এক দশমিক নয় বিলিয়ন লিটার পানি উৎপাদনের৷ তবে, বিদ্যুৎ সংকটসহ নানা কারণে ওয়াসা সেই পরিমান পানিও উৎপাদন করতে পারছে না৷

রাজধানীর গ্যাস সংকটও প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে৷ চাহিদা যেখানে ২,৪০০ মিলিয়ন ঘনফুটের, সরবরাহ সেখানে ১,৯০০ ঘনফুট৷ এই গ্যাস আবার রান্না ছাড়াও ব্যবহার হচ্ছে গাড়িতে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে৷ ফলে সাধারণ মধ্যবিত্তের মাঝে সংকট লেগেই আছে৷

অবশ্য বর্তমান সরকার এই ত্রি-মুখী সংকট কাটাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেয়া হচ্ছে৷ একইসঙ্গে প্রয়োজনে প্রতিবেশী দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির তোড়জোড় চলছে৷ এছাড়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থাপনেরও চেষ্টা করছে সরকার৷ এখন দেখা যাক, এত চেষ্টার ফল জনগণ কবে থেকে পেতে শুরু করে৷

প্রতিবেদক: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়