1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অস্তিত্ব সংকটে বিএনপি

জাহিদুল হক১০ অক্টোবর ২০১৪

পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি নেতারা সরকার বিরোধী কঠোর আন্দোলনের কথা বলছেন৷ সবশেষ বৃহস্পতিবার আবারও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী আহমদ৷

https://p.dw.com/p/1DSeG
ছবি: DW

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবের এই মন্তব্য পড়ে মনে করার চেষ্টা করছিলাম, এই নিয়ে ঠিক ক'বার বিএনপি নেতারা আন্দোলনের সময়সূচি নির্ধারণ করলেন৷ কখনও ঈদ, কখনওবা পরীক্ষার পর আন্দোলন জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছিলেন নেতারা৷ কিন্তু সেটা সম্ভব করে দেখাতে পারেনি বিএনপি জোট৷ তাদের সামনে যে ইস্যুর অভাব ছিল তা নয়৷ সেগুলো ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেনি তারা৷ তাইতো বিএনপির আন্দোলন ‘প্রেস রিলিজ আর ভাষণেই সীমাবদ্ধ' বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের৷

আন্দোলনের এখন পর্যন্ত যে রূপ তাতে আওয়ামী লীগের এই নেতার মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণের সুযোগ নেই৷ যদিও বিএনপি নেতারা তা মানতে নারাজ৷ রুহুল কবির রিজভী আহমদ মনে করেন, বিএনপি ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যেই আছে৷ সরকারের সব গণবিরোধী নীতি ও আইনের বিরুদ্ধে নিয়মিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে৷

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও ঈদের দিন বলেন যে, তাঁরা আন্দোলনের মধ্যেই আছেন৷ তবে ‘দিনক্ষণ ঠিক করে আন্দোলন হয় না'' গোছের একটি মন্তব্যও করেন তিনি৷ খালেদা জিয়া হয়ত ভেবে থাকতে পারেন আন্দোলনের জন্য বার বার আগে থেকেই সময় নির্ধারণ করে দিয়ে সরকারকে কৌশল গ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছে৷ তাই হয়ত এবার তিনি সরকারকে সেরকম সুযোগ দিতে নারাজ৷

DW Bengali Mohammad Zahidul Haque
জাহিদুল হকছবি: DW/Matthias Müller

কিন্তু প্রশ্ন হলো, আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষমতা কি বিএনপির আসলেই আছে? অতীতে দেখা গেছে আন্দোলন করতে তারা মূলত জোট সঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর উপর নির্ভর করতো৷ এখন আন্দোলন করতে চাইলে জামায়াত সেভাবে বিএনপির সঙ্গে যোগ দেবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে৷ সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ সেই সুযোগ করে দিচ্ছে৷

এছাড়া রয়েছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা৷ খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তারেক জিয়া ও বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে৷ সরকার সেগুলোকে কার্ড হিসেবে ব্যবহার করছে৷ যখনই আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে তখনই মামলাগুলো যেন একটু করে গতি পায়৷

এইটুকু পড়ার পর আপনার মনে হতে পারে, আমি হয়ত বিএনপি আন্দোলন করুক, সেটাই চাইছি৷ কিন্তু আসলে তা নয়৷ আমি শুধু পরিস্থিতির একটা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি৷

আমরা সাধারণ জনগণ আন্দোলন চাই না৷ বিশেষ করে নির্বাচনের আগে, পরে আন্দোলনের যে সহিংস রূপ জনগণ দেখেছে তার পরে তো নই-ই৷ এর চেয়ে সরকার ও বিএনপি জোটের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে যদি একটা সমাধান হয় তাহলে সবারই মঙ্গল হবে৷

একবার সংলাপের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেও বিএনপি নেতারা এখন আবার সংলাপের দাবি জানাচ্ছেন৷ সরকার তাতে রাজি না হলে আন্দোলন জোরদারের কথা বলছেন বিএনপি নেতারা৷ তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে দিয়েছেন, ‘‘খুনিদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়''৷ সংলাপ করার মতো ‘দৈন্যদশা'-য় নাকি তাঁর সরকার কিংবা বাংলাদেশ পড়েনি – এমন কথাও বলেছেন আওয়ামী লীগ প্রধান৷ তিনি এও বলেন, বিএনপির কথিত কঠোর আন্দোলন মোকাবিলা করার ক্ষমতা সরকারের রয়েছে৷ এই মন্তব্যের মাধ্যমে সরকার যে সংলাপের প্রতি আগ্রহী নয় তা পরিষ্কার করে দিলেন শেখ হাসিনা৷

তাহলে এখন কি হতে পারে? বিএনপি কি কঠোর হবে? কিন্তু তাঁরা তো সেই ক্ষমতা নেই৷ তাহলে কি এভাবেই একের পর এক আন্দোলনের নতুন সময়সূচি ঘোষণা করতে থাকবে তাঁরা? এর ফলে যেটা হবে, দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা একসময় হতাশ হয়ে পড়বে৷ তাঁরা দলচ্যূত হয়ে পড়তে পারে৷ আর যদি কর্মীই না থাকে তাহলে নেতারও প্রয়োজন পড়বে না৷ এভাবে একসময় বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে – এমনটা ভাবার কি যথেষ্ট কারণ নেই?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য