1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেরত যেতে চায় না রোহিঙ্গারা

২০ আগস্ট ২০১৯

মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য যেসব রোহিঙ্গার নাম তালিকায় উঠেছে তাদের কেউই জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাংলাদেশ ছেড়ে যাতে চাইছেন না৷

https://p.dw.com/p/3OCLt
Bangladesch Cox's Bazar - Rohingya Flüchtlinge bereiten Camp für Regenzeit vor
ছবি: DW/D. Cupolo

আগামী ২২ আগস্ট তিন হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর দিন চূড়ান্ত হয়েছে৷ ওই তালিকায় যাদের নাম রয়েছে মঙ্গলবার সকাল থেকে টেকনাফের ২৪, ২৬ ও ২৭ নম্বর ক্যাম্পে তাদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)৷

২৬ নম্বর ক্যাম্পে তিন হাজার ৯১ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে৷ সেখানে আছেন ডয়চে ভেলের আরাফাতুল ইসলাম।

তিনি বলেছন, ‘‘সকাল থেকে আমরা অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি৷ তারা বলেছেন, মিয়ানমার সরকার যদি তাদের মিয়ানমারের সাধারণ নাগরিকদের যে অধিকার তা ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি দেয় তবে তারা সেখানে যাবেন৷''

‘‘জানমালের নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা না পাওয়ার প্রত্যাবাসনের তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গাদের কেউই মিয়ানমারে ফিরতে চাইছেন না৷''

মঙ্গলবার দুপুরের পর একদল রোহিঙ্গা ২৬ নম্বর ক্যাম্পের পাশে বিক্ষোভ শুরু করেন জানিয়ে আরাফাত বলছেন, ‘‘মিছিল করছেন তারা, নারীরা চিৎকার করে বলছেন, আত্মহত্যা করব তবুও মিয়ানমার যাব না৷ আত্মহত্যা করতে রাজী কিন্তু এই অবস্থায় মিয়ানমার ফিরব না৷''

‘‘একজনকেও পাইনি যিনি মিয়ানমারে ফেরত যেতে রাজী হয়েছেন৷''

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সরাসরি যুক্ত হয়েছিলেন ডয়চে ভেলের আরাফাতুল ইসলাম৷ ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন৷

আরাফাত বলেন,মিয়ানমারে যেসব ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা রয়েছেন তাদের কেন তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না সেই প্রশ্নও তুলেছেন বাংলাদেশে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গারা৷

কেন ফেরত যেতে চায় না রোহিঙ্গারা?

‘‘আগে তাদের (মিয়ানমার ক্যাম্পে এখন যারা আছেন) যদি রোহিঙ্গার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তাদের ঘরবাড়ি ফেরত দেওয়া হয় এবং তারা যদি ক্যাম্প ছেড়ে বাড়িতে যেতে পারে তাহলে বাংলাদেশে যারা আশ্রয় নিয়েছেন তারাও মিয়ানমারে ফেরত যাবেন বলে জানিয়েছেন৷''

২৬ নম্বর ক্যাম্পে ইউএনএইচিসআরের ১০টি টিম রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছে, প্রতি দলে দুইজন করে রয়েছেন৷

বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা ওই তিনটি ক্যাম্পে আছেন৷

হাফেজ ফয়েজউল্লাহ নামে একজন রোহিঙ্গা ডয়চে ভেলেকে জানান, ২২ আগস্ট যাদের দেশে পাঠানো হবে সেই তালিকায় তার ভাইয়ের নাম আছে৷ তবে দেশে গিয়ে সে কী খাবেন, নাগরিকত্ব পাবেন কি না এমনিক তাকে মেরে ফেলা হবে কি না এসব নিয়ে চিন্তায় আছেন তারা৷

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে পরবর্তী সময়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তার আগে গত কয়েক দশকে এসেছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা৷

আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে৷ বাংলাদেশ ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তুতি নিলেও মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মনে আস্থা না ফেরায় এবং তারা কেউ ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় সেই পরিকল্পনা ঝুলে যায়৷

এরপর গত মাসে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে প্রত্যাবাসন চুক্তির অংশ হিসেবে যাচাই বাছাইয়ের জন্য মিয়ানমারের হাতে ২৫ হাজার রোহিঙ্গার নতুন একটি তালিকা দেয় বাংলাদেশ৷ তার মধ্য থেকে তিন হাজার ৩৪০ জনের বিষয়ে ছাড়পত্র দেয় মিয়ানমার৷

এসআই/কেএম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য