ফুটপাত মুক্ত করতে বিশেষ অভিযান
ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাট, নির্মাণসামগ্রী এবং বিলবোর্ড অপসারণে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে৷ গুলশান, বনানী, বারিধারা ও বাড্ডা এলাকায় মালামাল ও লাইসেন্স জব্দ ছাড়াও জরিমানা করা হয়েছে কয়েকজনকে৷
ঘর থেকে শুরু
খোদ নগর ভবনের সামনে সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদারই ফুটপাত জুড়ে ফেলে রেখেছেন বালু৷ ফলে নগর ভবনের ৬ তলার উন্নয়নকাজের জন্য এ বালু রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান৷ তবে তাতে পার পায়নি প্রতিষ্ঠানটি৷ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ঠিকাদারকে৷
লাইসেন্স জব্দ
গুলশান-২ গোলচত্ত্বরে অনুমতিহীন বিলবোর্ড ব্যবহারের জন্য ব্যক্তি মালিকানাধীন এমকে ইলেক্ট্রনিক্সের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে নেয়া হয়েছে৷ প্রতি বর্গফুট ১০০ টাকা হিসেবে সরকারি ফি দিয়ে লাইসেন্স ছাড়িয়ে নিতে হবে তাদের৷
উন্মুক্ত নিলাম
অভিযানে জব্দ করা মালামাল উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা হয়৷ সিটি কর্পোরেশনের কর্মী ছাড়া সবারই সে নিলামে অংশ নেয়ার সুযোগ ছিল৷ দিনের প্রথম নিলামে ১১ জন অংশগ্রহণ করেন৷
অর্ধেক দামে বিক্রি
শহিদুল আহসান নামের এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন নয় তলা ভবনের নির্মাণসামগ্রী পাওয়া যায় ভবনের সামনের রাস্তায়৷ সেখানে পড়ে থাকা ইট, বালু, রড, টিনসহ সব সামগ্রী নিলামে বিক্রি করা হয়৷ প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল অর্ধেক দামে নিলামে কিনে নেন মেহেদি হাসান নামের এক ব্যক্তি৷
ভুক্তভোগীর অভিযোগ
ভবনটি নির্মাণের দায়িত্বে নিয়োজিত একজন প্রকৌশলী অভিযোগ করেন, তাদেরকে সরকারিভাবে কোনো পূর্বনির্দেশনা ছাড়াই ডিএনসিসি এমন পদক্ষেপ নিয়েছে৷ তবে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রায় ১৫ দিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার ও এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে এ অভিযানের কথা জানানো হয়েছে৷
অবৈধ পার্কিং
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় ফুটপাতের ওপর একটি মোটরসাইকেল পাওয়া যায়৷ বাংলাদেশ মোটর ভেহিক্যাল অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ এর ১৩৭-১৩৮ ধারা অনুযায়ী অবৈধ পার্কিংয়ের দায়ে উক্ত যানের মালিককে ৫০০ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৩ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়৷
ভাঙা হয় দোকানের সামগ্রী
কিছু কিছু স্থানে ফুটপাত জুড়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানপাটের মালামাল ভেঙে ফেলেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীরা৷
ফুটপাতে নিরাপত্তা চৌকি
পথচারী চলাচলের স্থানে এক বিদেশি কূটনীতিকের নিরাপত্তায় বসানো হয়েছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তাকক্ষ৷ পরবর্তীতে ফুটপাত থেকে এই চৌকি ভবনের সীমানার মধ্যে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত৷
বিলবোর্ড অপসারণ
উচ্ছেদ অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল হামিদ মিয়াও ছিলেন৷ বেশ কিছু স্থানে অনুমোদনবিহীন বিলবোর্ড পাওয়া যায়৷ সেগুলোকে ডিএনসিসির নিজস্ব ক্রেনের সাহায্যে অপসারণ করা হয়৷
বিভিন্ন মহলের চাপ
ডিএনসিসির চলমান এই অভিযান বন্ধে বিভিন্ন মহলের তদবির ও চাপ আছে বলে জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম৷ তবে মেয়র জানান, অভিযান নিরপেক্ষভাবে পরিচালনার সুবিধার্থে নিজের মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন তিনি৷
অল্পের জন্য...
অভিযান শুরু হতে দেখে একটি মিষ্টির দোকানের এক কর্মচারী তাড়াহুড়ো করে সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন৷ ভ্রাম্যমাণ আদালতের চোখে পড়ায় অবশ্য তারও শেষরক্ষা হয়নি৷