ফিল্ম সংগীতের ৭ মুখ
পৃথিবীর সেরা ফিল্ম কম্পোজারদের তালিকা করতে গেলে শেষ হবে না৷ সংখ্যাটা হাজারও ছাড়িয়ে যেতে পারে৷ এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনারও যথেষ্ট অবকাশ আছে৷ অত বিতর্কে না গিয়ে নিজেদের পছন্দের ৭ জন ইউরোপীয় কম্পোজারের দিকে বরং তাকানো যাক৷
ম্যাক্স স্টেইনার
ইউরোপীয় ফিল্মের আবহে সংগীতে অন্যতম মুখ ম্যাক্স স্টেইনার৷ মার্কিন-অস্ট্রিয় এই সংগীতকার প্রথম আবহসংগীত রচনা করেছিলেন৷ চলচ্চিত্রের ছবিকে কীভাবে সংগীতের মাধ্যমে কথা বলানো যায়, স্টেইনার সর্বপ্রথম তা দেখিয়েছিলেন৷ ‘কিং কং’, ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’, ‘ক্যাসাব্লাঙ্কা’র মতো ছবিতে আবহ তৈরি করে বিশ্ববিখ্যাত হয়েছেন তিনি৷ ২৪ বার মনোনয়ন পেয়ে তিনবার জিতেছেন অস্কার৷
এরিক ভল্ফগাং কর্নগোল্ড
তিনি ইহুদি৷ ১৯৩৪ সালে অস্ট্রিয়া থেকে অ্যামেরিকায় চলে যান৷ মার্কিন বিশ্বে দ্রুত ফিল্ম কম্পোজার হিসেবে জনপ্রিয়ও হয়ে ওঠেন৷ ওয়ার্নার ব্রাদার্সের একের পর এক হলিউড ছবিতে কাজ করেছেন৷ ‘অ্যান্টনি অ্যাডভার্স’, ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চার্স অফ রবিনহুড’, ‘দ্য সি হক’-এর মতো ছবিতে আবহ তৈরি করেছেন তিনি৷ তবে ফিল্মের পাশাপাশি একক কাজেও সারা ফেলেছিলেন কর্নগোল্ড৷
বার্নার্ড হ্যারমান এবং আলফ্রেড হিচকক
পরিচালক আলফ্রেড হিচককের ছবি ‘সাইকো’র বিখ্যাত দৃশ্য৷ শাওয়ারের তলায় খুন হচ্ছেন এক মহিলা৷ আবহে বাজছে ভায়োলিন৷ বার্নার্ডের সৃষ্টি ছিল সেই ভায়োলিনের দৃশ্য৷ হিচককের ‘ভার্টিগো’ ছবিতেও অসাধারণ ভায়োলিনের মুর্ছনা তৈরি করেছিলেন বার্নার্ড৷ মার্কিন এই কম্পোজার তাঁর মুন্সিয়ানা দেখিয়েছিলেন ‘সিটিজেন কেন’ ছবিতেও৷ মার্টিন স্করসিসের ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’ ছবির আবহসংগীতও তাঁর সৃষ্টি৷
অ্যালফ্রেড নিউম্যান
টুয়েনটিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্সের সিগনেচার টিউনের সঙ্গে পরিচিত সকলেই, যা তৈরি করেছিলেন নিউম্যান৷ তবে ফক্স নয়, অন্য একটি প্রোডাকশনের জন্য সেই টিউন তৈরি করেছিলেন তিনি৷ কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল৷ মেরিলিন মনরোর ‘দ্য সেভেনথ ইয়ার ইচ’ কিংবা ‘এভরিথিং অ্যাবাউট ইভ’ ছবির আবহও তাঁর তৈরি করা৷
এন্নিও মোরিকোন
বিখ্যাত ছবি ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন দ্য ওয়েস্ট’ ছবির আবহ রচনা করেছিলেন বিখ্যাত এই ইতালিয়ান কম্পোজার৷ ‘দ্য আনটাচেবলস’-এর আবহও তাঁর সৃষ্টি৷ সারা জীবনে প্রায় ৫০০ ছবির আবহ তৈরি করেছেন এন্নিও৷ তিনি বিশ্ববরেণ্য৷
হান্স সিমার
হলিউডের এই জার্মান কম্পোজার ১৯৯৫ সালে ‘লায়ন কিং’-এর আবহ তৈরির জন্য অস্কার পেয়েছিলেন৷ ১০ বার ডিসটিংশনের জন্যও মনোনীত হয়েছেন৷ সিন্থেসাইজারের টেকনো সাউন্ডের সঙ্গে অর্কেস্ট্রার অ্যাকোয়াস্টিক সাউন্ডকে মিলিয়ে দেওয়ার বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছিলেন তিনি৷ প্রায় ১৫০টি ছবির আবহসংগীত তৈরি করেছেন সিমার, যার মধ্যে বিখ্যাত ‘রেন ম্যান’ কিংবা ‘পাইরেটস অফ ক্যারিবিয়ান’৷
জন উইলিয়ামস
১৯৭৫ সালে স্টিভেন স্পিলবার্গের ছবি ‘জ’র মিউজিক কম্পোজ করেছিলেন উইলিয়ামস৷ এছাড়াও ‘ইন্ডিয়ানা জোনস’-এর মতো ছবির কম্পোজারও তিনি৷ ‘স্টার ওয়ার্স’, ‘সুপারম্যান’, ‘শিন্ডলার্সলিস্ট’ সব ছবিতেই তাঁর আবহসংগীত তাক লাগিয়ে দিয়েছিল৷ বিশেষজ্ঞরা বলেন, জন উইলিয়ামসের আবহের বিশেষত্ব হলো, তিনি একটা পরাবাস্তব থেকে সংগীত তৈরি করতে শুরু করেন, একসময় যা ক্লাইম্যাক্সে গিয়ে পৌঁছায়৷