ফরাসি আঞ্চলিক নির্বাচনে আবার ব্যর্থ সার্কোজি
২১ মার্চ ২০১০গত রবিবারের পর এই রবিবার৷ পরপর দুই দফায় ভোটগ্রহণ হয়ে গেল ফ্রান্সের স্থানীয় নির্বাচনের৷ প্রথম দফার মতই দ্বিতীয় দফাতেও বেকায়দায় প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন দল ইউএমপি৷ মধ্য দক্ষিণপন্থী ইউএমপি-র ভোট গত এক দশকেও এতটা কমেনি, যতটা কমতে দেখা গেল এই আঞ্চলিক নির্বাচনে৷ বোঝাই যাচ্ছে, দ্রুত জনসমর্থন হারাচ্ছেন সার্কোজি৷ ২০১২ সালের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁকে বেশ বেগ পেতে হবে বলে এখন থেকেই মন্তব্য করতে শুরু করেছে মিডিয়া সেইসঙ্গে বিশেষজ্ঞরাও৷
আঞ্চলিক নির্বাচন যদিও কোন বিশেষ মাপকাঠি নয়, তবু জনসমর্থনের হাওয়া মোরগ কোনদিকে ঘুরছে তার একটা সঠিক আঁচ কিন্তু পাওয়া যায় এই নির্বাচনের ফলাফল থেকেই৷ নিকোলা সার্কোজি এবং তাঁর মধ্য দক্ষিণপন্থী ইউএমপি দলের প্রতি যে সাধারণ ফরাসিদের সমর্থন ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে তার পূর্বাভাষ নির্বাচনের আগেই করেছিল মিডিয়া এবং বিভিন্ন সমীক্ষা৷ কিন্তু, সেই সমর্থন হ্রাস পাওয়ার মাত্রাটা এতটা হতে পারে এমন কোন ভবিষ্যত বাণী কিন্তু শোনা যায় নি৷ আঞ্চলিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্থানীয় সমস্যাই সচরাচর বেশি গুরুত্ব পেয়ে থাকে৷ সেদিক দিয়ে দেখলেও দেশজুড়ে সরকারের নতুন সমস্ত সংস্কার পরিকল্পনা যে তেমন জনপ্রিয় হয়নি তা বেশ স্পষ্ট হয়ে গেছে ফলাফলের চেহারা থেকে৷
সমাজবাদী আর বামপন্থীদের জোট পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছে প্রায় সর্বত্র৷ ফ্রান্সের মোট বাইশটি প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে ২০ টিতে আগেই ক্ষমতায় ছিল বিরোধী সমাজবাদীরা৷ এবার বামপন্থীদের সঙ্গে জোট গড়ে তাদের নির্বাচনী ফায়দা হয়েছে অনেক বেশি৷ ফ্রান্সে এই মুহূর্তে প্রায় তিন মিলিয়ন চাকরিহীন৷ বেতন, ভাতা, অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা সহ বিভিন্ন খাতেই বরাদ্দ ক্রমশ কমাচ্ছে সার্কোজি সরকার৷ এইসব কিছুর প্রভাব পড়েছে নির্বাচনে৷ নির্বাচনী সমীক্ষার ফলাফল বলছে, দেশের ৫৭ শতাংশ মানুষ সার্কোজি সরকারের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন৷ ২০০৮ সালে শেষবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সার্কোজি যে সমস্ত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সাধারণ মানুষের বক্তব্য, তার প্রায় কিছুই ঠিকঠাক রক্ষিত হয় নি৷ সুতরাং ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই বছর আগেই তাঁর ছুটির ঘন্টা বাজছে বলে মন্তব্য করছেন উল্লসিত বিরোধীরা৷
প্রতিবেদন- সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যয়
সম্পাদনা - জাহিদুল হক