1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশবান্ধব বোতল!

৫ অক্টোবর ২০১৭

আফ্রিকা মহাদেশের ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র সাও টোমে ও প্রিন্সিপে-র এক সংগঠন পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে তার পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের মনে সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/2lEbi
প্লাস্টিকের বোতল জমা দেয়ার জন্য অপেক্ষায় তাঁরাছবি: DW

পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এক অভিনব উদ্যোগ চলছে৷ বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের ২৪ বছর বয়স্ক সিলেইন ফার্নানদেসের জন্য দীর্ঘ এই দিনটি ব্যস্ততায় ভরা৷ দাদিমার উঠান প্রায় ভরে গেছে৷ কয়েক মাস পর পর তিনি সব বোতল বিদায় করেন৷ প্রত্যেকটি বোতলই মূল্যবান৷ কারণ তার বদলে তো কিছু পাওয়া যায়৷ সিলেইন বলেন, ‘‘সবাই এই বায়োস্ফিয়ার বোতল পেতে চায়৷ বিশেষ করে শিশুদের দারুণ উৎসাহ রয়েছে৷ তারা সব বোতল সংগ্রহ করে৷ ফলে পথেঘাটে আর প্রায় কোনো বোতল দেখা যায় না৷’’

সবাই বোতল বিদায় করার কোনো-না-কোনো পথ খুঁজে পেয়েছে৷ ভাগ্য ভালো থাকলে সাইকেল ভ্যানে উঠে পড়া যায়৷ প্রিনসিপে দ্বীপে এটাই পরিবহণের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম৷ সারাদিন এমনটাই চলে৷ লাইনে দাঁড়িয়ে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা৷

সিলেইন ফার্নানদেস বোতল গোনার কাজে সাহায্য করছেন৷ বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের টিমে তিনি কাজ করেন৷ তিনি বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই সব বোতলে করে পাম অয়েল বা তালের তেল আসে৷ কয়েক মাস পর পর তিনি বোতল সংগ্রহ করেন৷ এখনো পর্যন্ত সব মিলিয়ে সাড়ে চার লক্ষেরও বেশি প্লাস্টিক বোতল জমা হয়েছে৷

প্রতি ৫০টি প্লাস্টিকের বোতলের বদলে স্টেনলেস স্টিলের তৈরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য বোতল পাওয়া যায়৷ অনেকের বাড়িতে বেশ এক বড় সংগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে৷ কেউ পানি ভরে স্কুলে নিয়ে যায়৷ তবে গোনার ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি হয় না৷ ঠিক ৫০টি বোতল হতে হবে৷ লাল অথবা সোনালি রঙের মধ্যে বেছে নেওয়া যায়৷ প্রকল্পের সমন্বয়ক এস্ট্রেলা মাটিলডে বলেন, ‘‘এর মধ্যেই আমরা প্রায় চার টন প্লাস্টিক সংগ্রহ করে সাও টোমে-র মূল দ্বীপে জমা রেখেছি৷ এক লজিস্টিক্স কোম্পানি আমাদের সাহায্য করছে৷ তারা বিনামূল্যে সেই প্লাস্টিক লিসবনে পৌঁছে দেবে৷ সেখানে দু'টি রিসাইক্লিং কোম্পানি সেগুলি গ্রহণ করতে প্রস্তুত৷’’

তাদের খুঁজে বার করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে৷ কেউই আফ্রিকা থেকে আবর্জনা গ্রহণ করতে চাইছিল না৷ এই হাতবদলের প্রক্রিয়ার জন্য বছরে প্রায় ৩০,০০০ ইউরো ব্যয় হয়৷ তাই পরের বছরের জন্য নতুন দাতা খুঁজতে হবে৷ তবে কিছু নতুন পরিকল্পনাও রয়েছে৷ সিলেইন ফার্নানদেস বলেন, ‘‘আমরা এক নতুন যন্ত্রের অর্ডার দিয়েছি৷ তাতে প্লাস্টিক বোতল থেকে প্লাস্টিকের সুতা তৈরি হবে৷ সেই সুতা দিয়ে ঝুড়ি বা অন্যান্য জিনিস তৈরি করতে পারি৷ সেটা ভালোই হবে৷’’

প্রিনসিপে দ্বীপ এক টেকসই পথে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছে৷ তবে আফ্রিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাণিসম্পদে ভরা জঙ্গল ও প্রায় ৮,০০০ বাসিন্দার স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে হচ্ছে৷ চার বছর আগে ইউনেস্কো গোটা দ্বীপকে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ হিসেবে ঘোষণা করেছে৷ এই স্বীকৃতি সত্যি গর্বের কারণ৷ দ্বীপের মানুষ সেই পর্তুগিজ ঔপনিবেশিক যুগ থেকে ছোট আকারে কিছু ফলমূল ও কোকো চাষ করে আসছে৷

ভানেসা ফিশার/এসবি