1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চান ট্রাম্প

৩১ জুলাই ২০২০

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনই পিছিয়ে দিতে চাইছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। পোস্টাল ব্যালটে জালিয়াতির আশঙ্কার কারণে। কিন্তু তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টির নেতারা এই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন।

https://p.dw.com/p/3gCgr
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Vucci

তিনি করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ। প্রথম থেকেই তিনি করোনাকে আমল দিতে চাননি। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্বের বিধিও মানতে চাননি। ডনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে তিনি বেশি আগ্রহী। করোনার তাণ্ডবের তিন মাস পর এসে দেখা যাচ্ছে, অ্যমেরিকায় এই ভাইরাসের প্রকোপে মারা গেছেন দেড় লাখ মানুষ। অর্থনীতিও ভেঙে পড়েছে। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৩০ শতাংশের বেশি কমেছে। গ্রেট ডিপ্রেশনের পর এতখানি নিচে মার্কিন অর্থনীতি কখনও নামেনি। ফলে তাঁর জনপ্রিয়তা কমছে হু হু করে। জনমত সমীক্ষাও বলছে, ট্রাম্পের তুলনায় তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন এগিয়ে আছেন।

এই অবস্থায় ট্রাম্প আগামী নভেম্বরে নির্ধারিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছেন। এর আগেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, পোস্টাল ব্যালটে জালিয়াতি হয়েছে। ফলে নির্বাচনের ঠিক ফল আসবে না। এখন তিনি বলছেন, আগে ওই জালিয়াতির বিষয়টা ফয়সালা হোক, লোকের ভোট নিরাপদ হোক, তারপর নির্বাচন। এর আগে একবার তিনি এ কথাও বলেছিলেন, ভোটে হেরে গেলে সেই ফল তিনি মানবেন না।

ট্রাম্পের নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ইচ্ছের কথা সামনে আসতেই প্রবল বিরোধিতা করেছে নিজের দল রিপাবলিকান পার্টির নেতারা। সেনেটে দলের নেতা মিটচ ম্যাকনেল এবং হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে দলের নেতা কেভিন ম্যাকার্থি জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এই প্রস্তাব খারিজ করছেন। প্রথমত, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া বা বাতিল করার কোনো অধিকার ট্রাম্পের নেই। এই সিদ্ধান্ত একমাত্র কংগ্রেস নিতে পারে। দ্বিতীয়ত, পোস্টাল ব্যালট নিয়ে ট্রাম্প নিছক একটা অভিযোগ করেছেন। কোনো প্রমাণ দেখাননি। ফলে তাঁর কথা মানা যাচ্ছে না।  বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও অবশ্য এই বিতর্কের মধ্যে ঢুকতে চাননি।

রিপাবলিকান নেতাদের দাবি, অতীতে কখনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পিছিয়ে যায়নি। আর্থিক মন্দা, সিভিল ওয়ার কোনো কিছুই নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়নি বা বাতিল করেনি। সুতরাং আগামী ৩ নভেম্বর নির্ধারিত দিনেই ভোট হবে।

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও প্রবলভাবে ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা আমাদের ভোটাধিকারের ওপর আক্রমণ শানাচ্ছেন। কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই পোস্টাল ব্যালটে জালিয়াতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে।  ওবামা ভোট সংস্কারের জন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছেন।

নভেম্বরের আগে আরো অব্যবস্থা

নির্বাচন যত কাছে আসবে, ততই ট্রাম্প অ্যামেরিকায় আরও বিশৃঙ্খলা তৈরি করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে পারেন। তাঁর সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

কেন তিনি পোর্টল্যান্ডে ফেডারেল বাহিনী পাঠালেন? তিনি হিংসা থামাবার জন্য পাঠাননি। বরং বিক্ষোভ আরো উসকে দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন। দেশের মধ্যে বিভাজন বাড়ানোর জন্য পাঠিয়েছিলেন। তিনি ৪ জুলাইয়ের আগে মাউন্ট রাশমোরে গিয়ে কেন ভাষণ দিলেন? এই জায়গার সঙ্গে চারজন প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের স্মৃতি জড়িত। তার মধ্যে দুই জন ছিলেন ত্রীতদাসদের মালিক। ফলে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর বর্ণবাদের বিরুদ্ধে যখন উত্তাল অ্যামেরিকা, তখন কৃষ্ণাঙ্গদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়া ছাড়া এর আর কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে? 

বাইডেন সহ ডেমোক্র্যাট নেতারা অনেকবার সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, ট্রাম্প লড়াই না করে হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেবেন না। যত দিন যাচ্ছে, তত এই আশঙ্কা দৃঢ় হচ্ছে।

ট্রাম্প এই যে ফেডারেল বাহিনী পাঠিয়ে বর্ণবাদ বিরোধী প্রতিবাদের মোকাবিলা করতে চাইছেন, তার থেকে তাঁর দলের নেতারাই ক্রমে সরে আসছেন। তাঁরা বুঝতে পারছেন, ট্রাম্পের হাতে তাঁদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। এই অবস্থায়. ট্রাম্পকে সমর্থন করার মানে দোষের ভাগীদার হওয়া। সেটা তাঁরা চাইছেন না।

ইনেস পল/(জিএইচ/এসজি)