প্রেমদাসার কাছেপিঠে কাপড় কাচা বন্ধের ফরমান
৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১স্টেডিয়ামের নাম আর প্রেমদাসা৷ তার অবস্থান শহরের মাঝখানে৷ রাজধানী কলম্বোর এই স্টেডিয়ামেই এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সাতখানা ম্যাচ খেলা হবে৷ সুতরাং সেই স্টেডিয়ামের গুরুত্ব তো কিছু কম নয়! সেখানে বহু বিদেশির সমাগম হবে৷ তার চারপাশে একেবারে সাজ সাজ রব৷ অতএব, সরকারের ফরমান, এই এলাকার বাসিন্দারা তাদের কাচা জামাকাপড় শুকোতে দিতে পারবে না বাড়ির বাইরে৷ কারণ, সেটা বেজায় দৃষ্টিকটু৷
ফরমান শুধুমাত্র সাধারণ বাসিন্দাদের জন্যই নয়, জারি হয়েছে দোকানদারদের জন্যও৷ সাফ বলে দেওয়া হয়েছে, ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখ থেকে মার্চের ২ তারিখ পর্যন্ত, মানে যতদিন বিশ্বকাপ চলবে, ততদিনই এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে৷
মুশকিল হল, প্রেমদাসা স্টেডিয়ামের চারপাশে যাদের বসবাস, তারা মূলত সমাজের নিম্ন মধ্যবিত্ত লোকজন৷ দু'চারটে বস্তিও রয়েছে সেই এলাকায়৷ এ ধরণের মানুষজনের সৌন্দর্যজ্ঞান নিয়ে সংশয় রয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকারের৷ ঘরের সামনেই আবর্জনা থাকতে পারে যেমন, তেমনই এমন সব কুদৃশ্য তৈরি হতেই পারে যাকিনা বিশ্বের সামনে শ্রীলঙ্কার ভাবমূর্তিকে মোটেই উজ্জ্বল করবে না৷
ভাবমূর্তি নিয়ে আসলে বড়ই ভাবিত শ্রীলঙ্কা সরকার৷ তামিল টাইগারদের সঙ্গে বহু দশকের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ২০০৯ সালে মোটের ওপর একটা পরিচিতি খাড়া করেছে তারা৷ অতএব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চেহারায় এই বিশ্বকাপের আয়োজনের মাধ্যমে গোটা দুনিয়ার সামনে নিজেদের তুলে ধরার যে সুযোগ শ্রীলঙ্কা পেয়েছে তাকে কোনমতেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যায় না৷ কলম্বো শহরের বিশেষ কমিশনার ওমর কামিল সেকথাই উল্লেখ করে তাই বলেছেন, ‘আমরা কোনরকম ঝুঁকি নিতে চাই না৷ সেজন্যই এই কাপড় কেচে শুকোতে না দেওয়ার ফরমান৷'
শহর কর্তৃপক্ষের ফরমান জেনে স্বভাবতই এলাকাবাসী একটু হতভম্ব৷ তাহলে কি বিশ্বকাপের সময়টায় ময়লা পোষাক পরেই ঘোরাফেরা করতে হবে তাদের? প্রশ্ন হল, বিদেশি অতিথিদের সামনে সেটাও কি তেমন নয়ন মনোহর হবে? কে জানে এর উত্তর কলম্বো কর্তৃপক্ষের কাছে আছে নাকি নেই!
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই