প্রাচীন মিশর ও চীনের মধ্যে মিল
মানব ইতিহাসে প্রাচীন দুই সভ্যতার ধারক চীন ও মিশর৷ হাজার হাজার কিমি. দূরের এই দুই সভ্যতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিস্তর৷ তবে এবার বার্লিনের একটি প্রদর্শনীতে সভ্যতা দু’টোর বেশ কিছু বিস্ময়কর মিল খুঁজে পাওয়া যায়৷
মৃতদের অবিনশ্বর করতে বিশেষ পোশাক
কেবল মিশরীয়দের ক্ষেত্রে নয়, চীনারাও বেশ জটিল একটা শেষকৃত্যের পোশাক বানিয়েছিল৷ এর উদ্দেশ্য ছিল এই জীবনের পর তাদের মৃতদের সুরক্ষা দেয়া৷ রাজ পরিবারের সদস্যদের যে পোশাক পরানো হতো, সেটা প্রায় ২ হাজার ২১৬টি ছোট ছোট ‘জেড’ প্লেটে তৈরি করা হতো৷ এগুলো জোড়া লাগাতেই এক কিলোগ্রাম সিলভারের তন্তু দরকার হতো৷
মমির মাস্ক
প্রাচীন মিশরে ব্যক্তির কথা মাথায় রেখে সকল মমির জন্য আলাদা আলাদা মাস্ক বানানো হতো৷ আংশিক স্বর্ণের এই মাস্ককে বলা হয় ‘টা-শেরিট-এন-হর’৷ এখানে ‘উডজাট আই’-এ একটা ম্যাজিক রয়েছে৷ কপালের লাল অংশে এটা দেখা যায়৷ এটাকে হরুসের চোখও বলা হয়৷ হরুস হচ্ছেন আলোর দেবতা৷
উৎসবে অ্যালকোহল
প্রাচীন এই উভয় সভ্যতাতেই অ্যালকোহল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে৷ চীনে এটা তৈরি করা হতো ভুট্টা থেকে এবং ধর্মীয় উৎসবে ব্যবহার করা হতো৷ পেঁচা আকৃতির এই জারের মত মূল্যবান পাত্রে এটা সংরক্ষণ করা হতো৷ পশ্চিম হান রাজবংশ থেকে এটা এসেছে৷
পূর্বসুরীদের জন্য মদ
প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান এবং পুরাকীর্তিক লেখায় দেখা গেছে, চীনে ত্যাগের উদ্দেশ্যেও মদ ব্যবহার করা হতো৷ কাঠ কয়লায় এটাকে উত্তাপ দেয়া হতো, যাতে পূর্বপুরুষরা বাষ্প উপভোগ করতে পারেন৷ মৃতদের আত্মা এবং দেবতার সন্তুষ্টির জন্য পাথর এবং ঝর্ণায় এটা ঢেলে দেয়া হতো৷ প্রদর্শনীতে ষাঁড়ের মত মদের জারও স্থান পেয়েছে, যা খ্রিষ্টপূর্ব ১৩শ শতাব্দী থেকে ১১শ শতাব্দী সময়ের৷
লেখালেখি
প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে মিশর এবং চীন লিপির ব্যবহার করেছিল৷ খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সালেই মিশরে লিখন পদ্ধতি ছিল৷ লেখার কাজে তাঁরা প্রায়ই প্যাপিরাস ব্যবহার করতো৷ অন্যদিকে চীনের মানুষ প্রথমদিকে লেখালেখির কাজে ‘বাঁশের ফালা’ ব্যবহার করতো৷
পোশাক
প্রাচীন কাল থেকেই জলবায়ুগত কারণে মিশরে লিনেনের পোশাক অনেকদিন সংরক্ষণ করা যেত৷ অন্যদিকে চীনে প্রথমদিকে ঘাসের তৈরি পোশাক, পরে কটনের পোশাক সংরক্ষণ করা যেত৷ এখানে চিত্রিত চাকরের ভাস্কর্যে পশ্চিম হান রাজবংশের ফ্যাশন সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়া যায়৷