প্রযুক্তি মেলার মৌসুম এখন
৩১ জানুয়ারি ২০১১সিটিআইটি মেলা
কম্পিউটার মেলায় সাধারণ মানুষের এমন পদচারণায় বেশ অভ্যস্ত বিসিএস কম্পিউটার সিটি৷ ঢাকা'র আগারগাওঁয়ে অবস্থিত এই প্রযুক্তি বাজার সারা বছরই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকে৷ শুধু বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় মানে, কম্পিউটার মেলা চলাকালে এই মার্কেটে প্রবেশ করতে হয়, পয়সা খরচ করে৷ আর তাতেই যেন, মানুষের আগ্রহ আরো বেড়ে যায়৷ এইতো গত ১৩ থেকে ২২ জানুয়ারি কম্পিউটার সিটিতে অনুষ্ঠিত হলো বার্ষিক মেলা৷
এবার মেলায় তরুণ প্রজন্মের আধিক্য যেমন দেখা গেছে, তেমনি বিক্রির তালিকাতেও ছিল আধুনিক প্রযুক্তি পণ্যের ছড়াছড়ি৷ বিশেষত ল্যাপটপ এবং গান শোনার নানা যন্ত্রের প্রতিই আগ্রহ ছিল ক্রেতাদের৷ মেলার স্লোগানটাও সাজানো হয় সেভাবেই, ‘ডিজিটাল লাইফ, বেটার লাইফ৷'
এই প্রসঙ্গে সিটিআইটি মেলার আহ্বায়ক পিনু চৌধুরী বলেন, এবার আমাদের বিক্রির তালিকায় সবচেয়ে উপরে ছিল ল্যাপটপ৷ মেলায় মোট বিক্রির সত্তর শতাংশই ছিল ল্যাপটপ৷ মূলত তরুণ প্রজন্মই ল্যাপটপের প্রতি আগ্রহ দেখেয়েছে বেশি৷
যশোরে মেলা
কম্পিউটার সিটির মেলা শেষ না হতেই আরেক মেলা শুরু হয় বাংলাদেশে৷ না এবার ঢাকা নয়, গন্তব্য যশোর৷ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই প্রাচীন শহরে মেলার আয়োজক বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি৷ উদ্দেশ্যে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশকে যুক্ত করা৷ এজন্য এই মেলাকে সাজানো হয় একটু ভিন্ন আঙ্গিকে৷ বেচাবিক্রির চেয়ে প্রযুক্তি সম্পর্কে মানুষকে জানানোই বেশি গুরুত্ব পায় সেখানে৷ বিসিএস সভাপতি মোস্তফা জব্বার এই বিষয়ে বলেন, ‘‘কম্পিউটার সমিতি ৮৭ সালে জন্ম নেওয়ার পর থেকে চেষ্টা করছে তৃণমূল পর্যায়ে কম্পিউটারের ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে৷ একইসঙ্গে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে সচেতনতার সৃষ্টি চেষ্টা করছি আমরা৷''
সফটওয়্যার মেলা
আচ্ছা, শুধু কি কম্পিউটার পণ্য আর প্রযুক্তি সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দিলেই চলবে? এটির চালিকা শক্তি মানে সফটওয়্যার সম্পর্কে জানাতে হবে না? ঠিক৷ এই কাজটা করতেই হাজির সফটওয়্যার নির্মাতাদের সংস্থা বেসিস৷ আয়োজনের নাম, ‘বেসিস সফটএক্সপো ২০১১'৷ বলাই বাহুল্য, সফটওয়্যার রপ্তানির হিসেবে বিগত কয়েক বছরে খানিকটা এগিয়েছে বাংলাদেশ৷ তাই, বেসিসের মেলায় বিদেশিদের আনাগোনা একটু বেশিই থাকে৷ তাছাড়া মেলা চলাকালীন বিভিন্ন জ্ঞানগর্ভ আলোচনাতেও থাকে বিদেশি বক্তাদের আধিক্য৷
বেসিস সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান এই প্রসঙ্গে জানান, এবারের সফটএক্সপোতে ডেনমার্ক এবং নেদারল্যান্ডস থেকে এসেছে ১০টি প্রতিষ্ঠান৷ এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানি কর্মরত বিদেশিরাও মেলায় আসবেন৷ সবমিলিয়ে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সম্পর্ক গড়তে কাজ করছে এই মেলা৷
মুক্ত পেশাজীবীদের স্বীকৃতি
বেসিসের মেলায় স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে মুক্ত পেশাজীবীদের৷ সাধারণত বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে কাজ সংগ্রহ করেন এই পেশাজীবীরা৷ বর্তমানে কয়েক হাজার তরুণ এভাবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে৷ এছাড়া দেশীয় প্রোগ্রামারদের নিয়ে প্রতিযোগিতারও আয়োজন করে বেসিস৷
এই সফটওয়্যার মেলার আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে জব ফেয়ার৷ এর আওতায় মেলায় আগতরা চাইলে চাকুরির জন্যও আবেদন করতে পারবেন৷ দেশীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান শতাধিক নিয়োগের জন্য বেছে নিচ্ছে এই চাকরি মেলাকে৷
এভাবেই প্রযুক্তির প্রসারে নানা মেলার আয়োজন চলছে বাংলাদেশে৷ এতে করে সাধারণ মানুষ হয়ে উঠছে প্রযুক্তি সচেতন৷ তাছাড়া মুঠোফোনের পর এখন ল্যাপটপ-আইপডও জায়গা করে নিচ্ছে তরুণদের থলিতে৷ কি জানি, হয়তো এভাবেই গড়ে উঠবে ডিজিটাল প্রজন্ম৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন