1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পূর্ব ইউক্রেনে নির্বাচন ভুয়ো ভোটে ভর্তি

ব্যার্ন্ড ইওহান/এসি৪ নভেম্বর ২০১৪

ডনবাস এলাকার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা একটি প্রহসনের উপস্থাপনা করেছে৷ যে ভোট সংঘটিত হয়েছে, তা-কে বাস্তবিক নির্বাচন বলা চলে না৷ সেই সঙ্গে মিনস্ক-এর শান্তি প্রক্রিয়ারও অন্ত ঘটেছে, বলে ব্যার্ন্ড ইওহান-এর অভিমত৷

https://p.dw.com/p/1Dg8x
Ostukraine Wahlen Donezk 02.11.2014
ছবি: Reuters/Maxim Zmeyev

‘দেশের মানুষ যুদ্ধের ফলে ভীত, ত্রস্ত৷ শুধুমাত্র সেই কারণেই এই নির্বাচন বৈধ নয়': এক সপ্তাহ আগে ইউক্রেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নির্বাচন সম্পর্কে ঠিক এই মন্তব্যই করেছিলেন দোনেৎস্ক এবং লুগানস্ক-এর স্বঘোষিত নেতারা৷ ঠিক সেই নেতারাই এবার যুদ্ধের এলাকাতেই তাঁদের নিজেদের নির্বাচনের আয়োজন করেছেন – কালাশনিকভ হাতে, মস্কোর পরোক্ষ সমর্থন নিয়ে৷

এটা ছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী কায়দায় মেকি নির্বাচন৷ বিজয়ী আগে থেকেই নির্ধারণ করা ছিল৷ ইউক্রেনপন্থি দল ও প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি৷ এমনকি দোনেৎস্ক এলাকার রাশিয়াপন্থি কমিউনিস্টদের পর্যন্ত প্রার্থী হতে দেওয়া হয়নি, যদিও দোনেৎস্ক ছিল কমিউনিস্টদের পেটোয়া এলাকা৷ সেখানে এবার শুধু ‘‘দোনেৎস্ক প্রজাতন্ত্র'' আর ‘‘স্বাধীন ডনবাস'', এই দু'টি গোষ্ঠী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে৷ উভয় গোষ্ঠীর লক্ষ্য এক: ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া৷ এবং এবার তারা তাদের সেই আপোসবিহীন মনোভাব পুনরায় জাহির করেছে৷

Deutsche Welle REGIONEN Osteuropa Ukrainisch Bernd Johann
ব্যার্ন্ড ইওহান, ডিডাব্লিউ সম্পাদকছবি: DW/P. Henriksen

বৈধতার ভান

পূর্ব ইউক্রেনে উভয় এলাকার মানুষরা কোনো বাস্তবিক নির্বাচনের সুযোগ পাননি৷ কোনো রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা সংঘটিত হয়নি৷ গোটা নির্বাচনটা ছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তাঁবে: মাত্র কয়েক মাস আগে যারা রাশিয়ার মদত নিয়ে রাতারাতি ক্ষমতা দখল করে৷ এই বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে তারা তাদের কার্যকলাপকে বৈধতার আকৃতি দিতে চায়৷ বাস্তবিক কিন্তু এই নির্বাচন ছিল একটা প্রহসন৷

লক্ষ লক্ষ মানুষ ভোট দিতে যেতে পারেননি: তাঁদের বিতাড়ন করা হয়েছে কিংবা তাঁরা যুদ্ধের ভয়ে পলায়ন করেছেন বলে৷ শুধুমাত্র সেই কারণেই এই নির্বাচনের ফলাফলে এ অঞ্চলের বাস্তবিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিফলন ঘটবে না৷ কোনো সরকারি ভোটার তালিকা ছিল না, কাজেই একাধিক বার ভোট দেওয়া সহজেই সম্ভব ছিল৷ ইন্টারনেটে ভোটদান চলেছে ভোটের বেশ কয়েকদিন আগে থেকে: সেখানেও জাল ভোট সম্ভব, কেননা তা পরীক্ষা করে দেখার কোনো উপায় নেই৷

ভয়, ভীতি প্রদর্শন, অনিশ্চয়তা

দোনেৎস্ক আর লুগানস্ক-এ যাঁরা থেকে গেছেন, তাঁদের মধ্যে বাস্তবিক অনেকেরই আশা এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপর৷ যেহেতু তাঁরা এই এলাকা ছেড়ে যেতে চান না কিংবা পারেন না, সেহেতু তাঁরা নিরুপায়৷ অন্যেরা ভোট দিতে গেছেন কেননা ভোট বুথের বাইরে ঢালাও করে ফলমূল, শাক-সবজি বিতরণ করা হয়েছে৷ কিন্তু এলাকার অধিকাংশ মানুষই দিন কাটাচ্ছেন ভয়, ভীতি প্রদর্শন এবং অনিশ্চয়তার একটা পরিস্থিতিতে৷ শিক্ষক, চিকিৎসক কিংবা অপরাপর সরকারি কর্মচারীদের আনুগত্য প্রদর্শন করতে হচ্ছে, নয়ত তাঁদের বেতন পাবার উপায় নেই৷ এবং ভোট না দিতে গেলে তাঁর ব্যক্তিগত ও পেশাগত ফলশ্রুতি ঘটবে, বলে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আগে থেকেই শাসিয়ে রেখেছে৷

আন্তর্জাতিকভাবে এই সন্দেহজনক নির্বাচনের নিন্দা করা হয়েছে, কিন্তু তা-তে কিছু আসবে যাবে না, কেননা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি রাশিয়ার সমর্থন আছে৷ নির্বাচনের আগেই রাশিয়া ঘোষণা করে বসে আছে যে, মস্কো এই নির্বাচনের ফলাফলকে স্বীকৃতি দেবে, যা কিনা ‘ব্ল্যাংক চেক' লিখে দেবার সমতুল৷ কিন্তু এর ফলে মিনস্ক-এর শান্তি প্রক্রিয়া বিপন্ন হচ্ছে৷ বস্তুত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা – এবং মস্কো – পূর্ব ইউক্রেনের কয়েকটি এলাকা যা-তে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, সেই পথেই চলেছে৷ ইউরোপে নতুন সীমান্ত সৃষ্টি হচ্ছে – অস্ত্রের ঝঞ্ঝনা ও মেকি নির্বাচনের মাধ্যমে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য