1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পূর্ব আফ্রিকায় পরিবেশ বান্ধব চাষাবাদ পদ্ধতির সাফল্য

২৬ এপ্রিল ২০১০

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, আফ্রিকার জনগোষ্ঠীর চাহিদা মেটাতে ২০৫০ সালের মধ্যে তিন গুণ ফসল উৎপাদন প্রয়োজন৷ এদিকে খেয়াল রেখেই পরিবেশ বান্ধব চাষাবাদ পদ্ধতিতে অধিক ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে আফ্রিকার দেশগুলোতে৷

https://p.dw.com/p/N6Kf
সবুজ শস্য খেত (ফাইল ছবি)ছবি: AP

শস্য খেতের পোকা-মাকড় দমনে রাসায়নিক বিষ কিংবা অধিক ফলনের আশায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ না করে বরং পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে চাষাবাদে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া গেছে পূর্ব আফ্রিকায়৷ এতে শুধুমাত্র চাষীই নয়, ভোক্তারাও উপকৃত হচ্ছে অধিক হারে৷ এমনকি এসব দেশে শস্য উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১২৮ শতাংশ বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি - ইউএনইপি৷

সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, অতীতে এই জৈব কৃষি পদ্ধতি বিলাসিতা বলে মনে করা হতো৷ এটিকে ক্ষুদ্র চাষিদের সামর্থ্যের বাইরে বলেই ভাবা হতো৷ কিন্তু এখন সেই ধারণা পাল্টে যাচ্ছে৷ এই পদ্ধতিতে জমির পানি ধরে রাখার ক্ষমতা এবং উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ তাই আফ্রিকার উর্বর জমিতে আর রাসায়নিক সারের স্তূপ গড়ে তোলার কোন প্রশ্নই আসে না৷ কেনিয়ায় সবুজ চাষাবাদ পদ্ধতির প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে গ্রিন ড্রিম লিমিটেড নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা৷ এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সু কাহুম্বু বলেন, নাইরোবিতে অর্গানিক তথা জৈব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে৷ এতে চাষিদেরও আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান কাহুম্বু৷

‘ঠেলা-টানা প্রযুক্তি'

আইসিপি'তে কর্মরত ভারতীয় বিজ্ঞানী অধ্যাপক জিয়াউর খান জানান, পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতে ৯৯ শতাংশ চাষিই মধ্যম কিংবা ক্ষুদ্র চাষি৷ তারা আধ হেক্টর থেকে সর্বোচ্চ দুই হেক্টর জমির মালিক৷ তারা অধিক পয়সা খরচ করে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক কেনার কথা ভাবতে পারে না৷ ফলে প্রকৃতি বান্ধব সবুজ চাষাবাদ পদ্ধতিই তাদের কাছে একমাত্র সমাধান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে৷ অধ্যাপক খান খেতের পোকা-মাকড় দমন করে শস্য উৎপাদন বাড়াতে উদ্ভাবন করেছেন ‘ঠেলা-টানা প্রযুক্তি'৷

Armut und Landwirtschaft Flash-Galerie
ফাইল ছবিছবি: Helle Jeppesen / DW

তাঁর প্রযুক্তিটি হচ্ছে এ রকম, ডেসমোডিয়াম নামের এক উদ্ভিদ ফসল বিনষ্টকারী পোকা মাকড়কে জমি থেকে ঠেলে বের করে দেয়৷ আর ন্যাপিয়ার নামক ঘাস সেই কীট-পতঙ্গগুলোকে টেনে জমি থেকে সরিয়ে ফেলে৷ ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রকৃতির সাহায্যেই কীটনাশক দমনের কাজটি সম্পন্ন হচ্ছে৷ জিয়াউর খান বলেন, এই প্রযুক্তির ফলে চাষাবাদের জন্য উন্নত জাতের বীজ কিংবা শস্য সংরক্ষণ ও জমির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য কোন অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে না৷

কৃষি বিশেষজ্ঞ মোঃ শরীফ উদ্দিনের সাক্ষাৎকার

পরিবেশ বান্ধব কৃষি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কৃষি বিশেষজ্ঞ মোঃ শরীফ উদ্দিন জানালেন, যে কৃষি ব্যবস্থা পরিবেশের উপর কোন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে বরং পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে, সেটিই সবুজ কৃষি পদ্ধতি৷ কমবেশি সারাবিশ্বেই শুরু হয়েছে সবুজ কৃষি পদ্ধতির প্রচলন৷

রাসায়নিক দ্রব্যের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বরং কৃষি ক্ষেত্রে যে অর্গানিক বা জৈব ব্যবস্থাপনার ধারণা, তা বাংলাদেশে কতটা জায়গা করে নিয়েছে এবং কতদিন নাগাদ এটি শুরু হয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রায় দেড় যুগ আগে থেকেই বাংলাদেশে এমন ধারণা স্থান পেয়েছে৷ বিশেষ করে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা৷ এই পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে বন্ধু পোকার সাহায্যে ফসলের কীট-পতঙ্গ দমন, ফসলের জন্য ক্ষতিকর পোকা-মাকড় দমনে আলোর ফাঁদ ব্যবহার এবং ছাকনা জাতীয় জাল ব্যবহার৷ এছাড়া আইল ফসলের চাষ পরিবেশ বান্ধব চাষ পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত বলা যায়৷

প্রতিবেদক : হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক